২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

গাজার মানবিক পরিস্থিতির উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ স্বার্থসিদ্ধির পরিকল্পনা : মাহমুদ আব্বাস

গাজার মানবিক পরিস্থিতির উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ স্বার্থসিদ্ধির পরিকল্পনা : মাহমুদ আব্বাস - সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রকে মিথ্যাবাদী আখ্যা দিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের তীব্র সমালোচনা করেছেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। সম্প্রতি রামাল্লায় এক আলোচনা সভায়, অবরুদ্ধ গাজার মানবিক পরিস্থিতির উন্নয়নে ট্রাম্প প্রশাসনের আগ্রহকে, যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থসিদ্ধির পরিকল্পনা বলে আখ্যা দেন তিনি। তিনি বলেন, নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্যই গাজার বাসিন্দাদের সহযোগিতা করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।

ইসরাইলের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের গাজা যুদ্ধের অপরাধ কর্মকাণ্ড ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগ তুলেছে মানবাধিকার সংগঠন।
সম্প্রতি ওয়াশিংটন পোস্টে প্রকাশিত নিবন্ধে মার্কিন প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানান, অবরুদ্ধ গাজার মানবিক পরিস্থিতির উন্নয়নে সহযোগিতায় আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র। 

ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেন, গাজাবাসীর দুর্ভোগ আজকের নয়। যেদিন থেকে ইসরাইলের অবরোধ শুরু হয়েছে সেদিন থেকেই তাদের দুর্দাশার সূত্রপাত। আজকে এসে গাজার পরিস্থিতিকে মানবিক বিষয় বলে বিবেচনা করা হচ্ছে! হঠাৎ কি মনে করে আমাদের জনগণকে রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রেরে এমন জেগে উঠা? আল্লাহর কসম তারা মিথ্যাবাদী।

পশ্চিম তীরের এ সরকার প্রধান সমালোচনা করেছেন গাজার শাসকগোষ্ঠী হামাসেরও। ২০০৭ সালে মাহমুদ আব্বাসের বাহিনীকে উৎখাত করে গাজার দখল নেয় হামাস। দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর ২০১৭ সালে পূর্ণশক্তির ফিলিস্তিন গঠনে একমত হয় হামাস ও ফাতাহ। এক বছরেও প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন না হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি হামাসের অসহযোগিতাকেও দায়ী করেন তিনি।

মাহমুদ আব্বাস বলেন, পুনর্মিলনে একমত হওয়ার পর আমরা এ বিষয়ে আলোচনা করেছি। আমরা চাই, সবশক্তি এক হয়ে আমাদের ভূমিতে. এক আইনের অধীনে জনগণের জন্য সুন্দর একটি দেশ গড়তে। যেখানে বৈধ সশস্ত্র বাহিনী থাকবে, কোনো মিলিশিয়া থাকবে না। কিন্তু এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে প্রধানত হামাসের কোনো আগ্রহ নেই।

দু'সপ্তাহ পর গাজার প্রধান সীমান্ত পথ কেরেম শাহলোম খুলে দিয়েছে ইসরাইল। ফিলিস্তিনদের দখলদারবিরোধী আন্দোলনের এক পর্যায়ে সীমান্ত পথটি বন্ধ করে তেল আবিব। খুলে দেয়ার পর ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এভিদগর লিবারম্যান আন্দোলনকারী ফিলিস্তিনের সতর্ক করে বলেন, সংঘাতে নয়, শান্ত থাকলে প্রতিদান মেলে।

 

ট্রাম্পের শান্তি প্রচেষ্টা ‘শতাব্দির সেরা থাপ্পড়’ : আব্বাস

১৫ জানুয়ারি ২০১৮

জেরুসালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্প ট্রাম্পের কথিত মধ্যপ্রাচ্য শান্তি পরিকল্পনাকে ‘শতাব্দির সেরা থাপ্পড়’ বলে অভিহিত করেছেন ফিলিস্তিনি স্বশাসন কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস।

তিনি রোববার ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাদের এক বৈঠকে এ মন্তব্য করেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে একটি ‘চূড়ান্ত সমঝোতা’য় পৌঁছার যে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তার প্রতি ইঙ্গিত করে মাহমুদ আব্বাস বলেন, ‘শতাব্দির সেরা ওই চুক্তি হচ্ছে শতাব্দির সেরা থাপ্পড় এবং আমরা এটি মেনে নেব না।’

স্বশাসন কর্তৃপক্ষের প্রধান বলেন, ‘আমরা ট্রাম্পকে বলে দিয়েছি, আমরা আপনার প্রকল্প মেনে নেব না।’

তিনি ১৯৯০-এর দশকে স্বাক্ষরিত অসলো চুক্তি ‘ধ্বংস’ করার জন্য ইসরাইলকে দায়ী করেন। অসলো চুক্তির মাধ্যমে মার্কিন মধ্যস্থতায় ইহুদিবাদী ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে কথিত শান্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল।

১৯৯৩ সালে স্বাক্ষরিত অসলো চুক্তিতে ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংকটের সমাধান এবং ফিলিস্তিনিদের স্বশাসনের অধিকারের নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছিল। ওই চুক্তির পর ফিলিস্তিনি স্বশাসন কর্তৃপক্ষ গঠিত হয় যার প্রেসিডেন্ট ছিলেন পিএলও’র তৎকালীন প্রধান ইয়াসির আরাফাত।

২০০৪ সালে তার রহস্যজনক মৃত্যুর পর মাহমুদ আব্বাস ওই কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ইসরাইল অধিকৃত জর্দান নদীর পশ্চিম তীরের ওপর স্বশাসন কর্তৃপক্ষের সীমিত নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গতমাসে জেরুসালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেন এবং মার্কিন দূতাবাস তেল আবিব থেকে জেরুসালেমে স্থানান্তর করা হবে বলে ঘোষণা করেন। ট্রাম্প হুমকি দিয়েছেন, তার এই ঘোষণা মেনে না নিলে ফিলিস্তিনি স্বশাসন কর্তৃপক্ষের প্রতি সহায়তা বন্ধ করে দেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল