২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প

বালিশসহ আসবাব ক্রয়ের তদন্ত রিপোর্ট চেয়েছেন হাইকোর্ট

-

পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প এলাকায় কর্মকর্তা কর্মচারীদের থাকার জন্য গ্রীনসিটি আবাসন পল্লীর বিছানা, বালিশ, আসবাব ক্রয় এবং তা ফ্লাটে তুলতে যে খরচ ধরা হয়েছে তা তদন্ত করতে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের করা তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আজ সোমবার বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো: সোহরাওয়ার্দীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ সংক্রান্ত দায়ের করা এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।

ঈদ ছুটির এক সপ্তাহ পর এ বিষয়ে ফের শুনানির জন্য মামলাটি মুলতবি রেখেছেন আদালত।

পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প এলাকায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের থাকার জন্য গ্রীনসিটি আবাসন পল্লীর বিছানা, বালিশ, আসবাব ক্রয় সংক্রান্ত বাজেটের বিষয়ে বিচার বিভাগীয় অনুসন্ধান চেয়ে গতকাল রোববার হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়্যেদুল হক সুমন।

আদালতে রিটের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

পরে রিটকারী আইনজীবী সায়্যেদুল হক সুমন বলেন, রূপপুরের আবাসন পল্লীর জন্য বালিশ বিছানাসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র ক্রয় এবং ভবনের তোলার নামে যে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সেটি নিয়ে আমরা গতকাল রিট দায়ের করি।

রিটে আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়েছি। যেহেতু এখানে বিপুল সংখ্যাক অর্থের বিষয়টি রয়েছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রীও দুর্নীতির বিষয়ে জিরো টলারেন্স রয়েছেন। আদালত আমাদের বক্তব্য শোনার পরে অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্য শুনেছেন। সেখানে তিনি গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দুটি তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি জানিয়েছেন। আদালত তখন বলেছেন, এ তদন্ত প্রতিবেদন আসুক, আমরা দেখি। সে পর্যন্ত মামলাটি মুলতবি থাকুক।

সম্প্রতি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের গ্রীনসিটি আবাসন পল্লীর ভবনের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনা ও তা ভবনে তোলায় অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতি নিয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে রিট দায়ের করেন আইনজীবী সুমন।

পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রকল্পের কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের থাকার জন্য গ্রীন সিটি আবাসন পল্লীতে ২০ তলা ১১টি ও ১৬ তলা আটটি ভবন হচ্ছে। এরই মধ্যে ২০ তলা আটটি ও ১৬ তলা একটি ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। ২০ তলা ভবনের প্রতিটি ফ্ল্যাটের জন্য প্রতিটি বালিশ কিনতে খরচ দেখানো হয়েছে পাঁচ হাজার ৯৫৭ টাকা। আর ভবনে বালিশ ওঠাতে খরচ দেখানো হয়েছে ৭৬০ টাকা। প্রতিটি রেফ্রিজারেটর কেনার খরচ দেখানো হয়েছে ৯৪ হাজার ২৫০ টাকা। রেফ্রিজারেটর ভবনে ওঠাতে খরচ দেখানো হয়েছে ১২ হাজার ৫২১ টাকা। একেকটি খাট কেনা দেখানো হয়েছে ৪৩ হাজার ৩৫৭ টাকা। আর খাট ওপরে ওঠাতে খরচ দেখানো হয়েছে ১০ হাজার ৭৭৩ টাকা।

প্রতিটি টেলিভিশন কেনায় খরচ দেখানো হয়েছে ৮৬ হাজার ৯৭০ টাকা। আর টেলিভিশন ওপরে ওঠাতে দেখানো হয়েছে ৭ হাজার ৬৩৮ টাকার খরচ। বিছানার খরচ ৫ হাজার ৯৮৬ টাকা দেখানো হয়েছে। তা ভবনে তুলতে খরচ দেখানো হয়েছে ৯৩১ টাকা। প্রতিটি ওয়ারড্রোব কিনতে খরচ দেখানো হয়েছে ৫৯ হাজার ৮৫৮ টাকা। আর তা ওঠাতে দেখানো হয়েছে ১৭ হাজার ৪৯৯ টাকার খরচ। এরকম বৈদ্যুতিক চুলা, বৈদুতিক কেটলি, রুম পরিষ্কারের মেশিন, ইলেকট্রিক আয়রন, মাইক্রোওয়েভ ইত্যাদি কেনাকাটা ও ভবনে তুলতে অস্বাভাবিক খরচ দেখানো হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement