২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

গঙ্গা চুক্তিতে নদী সুরক্ষার বিধান রাখা হয়নি : আসিফ নজরুল

নদী, পরিবেশ, আইন ও রাষ্ট্র শীর্ষক অপ্রকাশিত পিএইচডি অভিসন্দর্ভ বক্তৃতা অনুষ্ঠানে অতিথিরা : নয়া দিগন্ত -

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে সম্পাদিত গঙ্গা চুক্তিতে নদীর সুরক্ষায় কোনো বিধান রাখা হয়নি। এই চুক্তির বাস্তবায়ন নির্ভর করে ফারাক্কায় প্রবাহ স্থিতিশীল রাখার ওপর, কিন্তু ১৯৯৬ সালের চুক্তিতে তা নিশ্চিত করার জন্য ভারতের আশ্বাসের কথা থাকলেও কার্যকর কোনো বিধান নেই।
গতকাল জ্ঞানতাপস আব্দুর রাজ্জাক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরাজুল ইসলাম লেকচার হলে অনুষ্ঠিত ‘নদী, পরিবেশ, আইন ও রাষ্ট্র’ শীর্ষক পঞ্চম ‘অপ্রকাশিত পিএইচডি অভিসন্দর্ভ বক্তৃতা’য় এসব মন্তব্য করেন অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) নির্বাহী প্রধান সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। স্বাগত বক্তৃতা প্রদান করেন রাজ্জাক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ড. আহরার আহমদ।
ড. আসিফ আরো বলেন, চুক্তিতে বলা হয়েছে, ফারাক্কায় পানিরপ্রবাহ ৫০ হাজার কিউসেকের কম হলে দুই দেশ আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। এ রকম পরিস্থিতিতে দুই দেশ সমঝোতায় পৌঁছতে দেরি হলে ১৯৮৩ সালের মতো বাংলাদেশকেই বেশি দুর্ভোগে পড়তে হবে।
তিনি আরো বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার আন্তঃসীমান্ত নদীর পানি ব্যবহার ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা অববাহিকাভিত্তিক সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে নদীর পরিবেশ ও প্রতিবেশগত দিক এবং আন্তর্জাতিক নদী আইনের বিধিবিধানগুলো অবশ্যই বিবেচনায় নিতে হবে।
আসিফ নজরুল ১৯৯৯ সালে ‘ইকুইটেবল শেয়ারিং অব দ্য ওয়াটার অব দ্য গাঙ্গেজ, অ্যাপ্লিকেবল প্রসিডিউরাল প্রিন্সিপালস অ্যান্ড রুলস অব ইন্টারন্যাশনাল ল অ্যান্ড দেয়ার অ্যাডেকুয়েসি’ শীর্ষক অভিসন্দর্ভ জমা দিয়ে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ (সোয়াস) থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। সেই অভিসন্দর্ভের ওপর ভিত্তি করে গতকালের বক্তৃতা রচিত হয়েছে।
তিনি বলেন, ভাটির দেশ বাংলাদেশের ৫৪টি নদী ভারত থেকে প্রবাহিত হয়। চার দশকের দর-কষাকষির পরও দুই দেশ শুধু গঙ্গা নদীর পানি বণ্টন বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছাতে পেরেছে। কয়েকটি স্বল্পমেয়াদি চুক্তির পর ১৯৯৬ সালে দুই দেশ পরবর্তী ৩০ বছরের জন্য গঙ্গার পানি চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। চুক্তি অনুযায়ী, প্রতি বছর ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত সময়ে ফারাক্কায় গঙ্গার পানিপ্রবাহ অনুযায়ী দুই দেশের মধ্যে ভাগাভাগি হবে। তবে চুক্তিতে ফারাক্কায় পানিপ্রবাহ পরিমাপের ক্ষেত্রে ১৯৪৯-৮৮ সাল পর্যন্ত ৪০ বছরের ১০ দিনভিত্তিক গড় প্রবাহের ওপর নির্ভর করা হয়েছে, যা কখনো ফারাক্কার প্রকৃত গঙ্গায় পানি প্রবাহের বাস্তব চিত্র হতে পারে না। চুক্তিতে নদী সুরক্ষার জন্য কোনো বিধান রাখ হয়নি এবং উজানে এর ব্যবহার সম্পর্কে বাংলাদেশের সাথে কোনো আলাপ-আলোচনা করা হয়নি। এই চুক্তির বাস্তবায়ন নির্ভর করে ফারাক্কায় প্রবাহ স্থিতিশীল রাখার ওপর, কিন্তু ১৯৯৬ সালের চুক্তিতে তা নিশ্চিত করতে আশ্বাসের কথা থাকলেও কার্যকর কোনো বিধান নেই। ড. আসিফ নজরুল বলেন, আন্ত:সীমান্ত নদী গঙ্গার পানি ন্যায্য বণ্টনের কথা থাকলেও এই চুক্তিতে ভাটির দেশ বাংলাদেশের পানিসম্পদ, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য এবং সর্বোপরি আর্থসামাজিক ক্ষয়ক্ষতি বিবেচনায় নেয়া হয়নি। তিনি চুক্তিতে গঙ্গা নদীর পানি দূষণ রোধে পদক্ষেপ গ্রহণ; সুনির্দিষ্ট সময়কাঠামো নির্ধারণ এবং তৃতীয় পক্ষের সহযোগিতা গ্রহণের মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া সুদৃঢ়করণ; প্রয়োজনীয় ও সময়ানুগ সমন্বয়ের জন্য চুক্তি পুনর্বিবেচনার বাধ্যতামূলক বিধান রাখা এবং সর্বোপরি অববাহিকাভিত্তিক সমন্বিত ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার পরামর্শ দেন।


আরো সংবাদ



premium cement
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বিশ্বরেকর্ড ইন্দোনেশিয়ার নারী ক্রিকেটার রোহমালিয়ার ‘এখন আমি কী নিয়ে বাঁচব’ যদি বন্ধু হও, সীমান্তে অহরহ গুলি কেন : ভারতকে ফারুক সাহারা মরুভূমির গরমের মতো অনুভূত হচ্ছে : সরকারকে দায়ী করে রিজভী মধুখালীর পঞ্চপল্লীতে ২ ভাইকে হত্যার প্রতিবাদে সমাবেশ শ্রীলঙ্কাভিত্তিক এয়ারলাইন্স ফিটসএয়ারের ঢাকা-কলম্বো সরাসরি ফ্লাইট চালু রোহিঙ্গা ইস্যুতে একসাথে কাজ করবে ঢাকা-ব্যাংকক : পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরাইলি হামলায় আহত শিশুর মুখে ২০০ সেলাই বিষখালীতে মৎস্য বিভাগের অভিযান : জেলে নিখোঁজ, আহত ২ দক্ষিণ এশিয়ার যে শহরগুলোর তাপমাত্রা এখন সর্বোচ্চ গাজীপুরে দাঁড়িয়ে থাকা কাভার্ডভ্যানে অটোরিকশার ধাক্কায় হতাহত ৫

সকল