শনিবার থেকে ফের লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা শিক্ষার্থীদের

পাঁচ দিন ধরে টানা কর্মসূচির পরে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষার্থীদের ১৬ দফা দাবিতে চলমান আন্দোলন দুই দিনের জন্য স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বৃহস্পতি ও শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় এ দুই দিন আন্দোলন স্থগিত করা হয়েছে বলে শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা যায়। তবে বরাবরের মতোই শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে প্রশাসনের কোনো আশ্বাস বা বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এর আগে ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে পঞ্চম দিনের মতো গতকাল বেলা ১টার দিকে আন্দোলন শুরু করেন বুয়েটের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বুয়েট শহীদ মিনারের সামনে বিভিন্ন বিভাগের সহস্রাধিক শিক্ষার্থী জড়ো হন। এরপর তারা মিছিল নিয়ে সেøাগান দিতে দিতে ভিসির ভবনের সামনে অবস্থান নেন। সেখান থেকে পরবর্তী কর্মসূচি সম্পর্কে গণমাধ্যমকে জানান আন্দোলনকারীদের সমন্বয়ক।
তবে বরাবরের মতো এদিনও বুয়েটের ভিসি ক্যাম্পাসে না আসায় তার সাক্ষাৎ পাননি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ভিসির পক্ষ থেকে কোনো প্রতিনিধিও বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের কথা শুনতে আসেননি। এ জন্য দুই দিন বিরতি দিয়ে শনিবার থেকে লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা দেন বুয়েট শিক্ষার্থী আন্দোলনের মুখপাত্র হোসেন সরোয়ার হোসেন সৈকত।
গতকাল আন্দোলন শেষে সৈকত বলেন, বৃহস্পতি ও শুক্রবার আমাদের সাপ্তাহিক ছুটি। এ কারণে এ দুই দিন আন্দোলন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী শনিবার সকাল থেকে আবার আন্দোলনে নামব। তিনি বলেন, টানা পাঁচ দিন ধরে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি, কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠবে। যত দিন পর্যন্ত দাবি বাস্তবায়নের দৃশ্যমান কোনো কিছু পরিলক্ষিত না হবে তত দিন আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।
বুয়েটের মেকানিক্যাল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের এই শিক্ষার্থী বলেন, বর্তমান ভিসি স্যার শিক্ষার্থীবান্ধব নন। তিনি সবসময় আমাদের থেকে দূরে দূরে থাকার চেষ্টা করেন।
তিনি বলেন, আমাদের এই আন্দোলনে বুয়েটের শিক্ষক সমিতি সম্মতি জানিয়েছে। বর্তমানে স্যারদের সম্মতি পাওয়া আমাদের এই আন্দোলন আরো তীব্রতর করে তোলা হবে।
নতুন ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের (ডিএসডব্লিউ) অপসারণসহ ১৬ দফা দাবিতে বুয়েটে চলা ছাত্র-আন্দোলনের পঞ্চম দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন অবরুদ্ধ করে রাখেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তারা বেশ কয়েকটি অ্যাকাডেমিক ভবন ও রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ে (প্রশাসনিক ভবন) তালা ঝুলিয়ে দেন এবং বেলা ৩টা পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন। এ সময় তারা ক্লাস-পরীক্ষাও বর্জন করেন।
এর আগে গত ১৫ জুন ১৬ দফা দাবি আদায়ে আন্দোলন শুরু করেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। ধারাবাহিক আন্দোলনের একপর্যায়ে গত মঙ্গলবার ভিসির কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়।