অনুমোদন ছাড়া সন্ত্রাসবিরোধী আইনে অভিযোগপত্র পুলিশ কর্মকর্তা ও পিপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ

সরকারের অনুমোদন ছাড়া সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করায় মামলাসংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ সুপার আবু সাঈদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য পুলিশ কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া বিষয়টির প্রতি আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ না করায় মামলাসংশ্লিষ্ট পিপি জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আইন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
গতকাল বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সংশ্লিষ্ট মামলায় রফিকুল ইসলাম ওরফে রুবেলের জামিন আবেদন মঞ্জুর করে এ আদেশ দেন। আদালতে আসামি রফিকুল ইসলাম রুবেলের জামিন আবেদনের শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরহাদ আহমেদ ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইউসুফ মাহবুব মোর্শেদ।
আইনজীবী তারিকুল ইসলাম জানান, আদালত রুবেলের জামিন মঞ্জুর করেছেন। একই সাথে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা এবং সংশ্লিষ্ট আদালতের পিপির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আইন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এ বিষয়ে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইউসুফ মাহবুব মোর্শেদ জানান, সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলায় অভিযোগপত্র দিতে হলে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হয়; কিন্তু অনুমতি ছাড়া বগুড়ার এক মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করায় মামলাসংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তার (আইও) বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পুলিশ কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মামলার বিবরণে জানা যায়, অস্ত্র উদ্ধার অভিযান চালাতে গিয়ে ২০১৩ সালের ২৩ আগস্ট বগুড়া সদর থানায় চার জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। মামলার তদন্তের সময় একই বছরের ২৪ আগস্ট রফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। ওই বছরের ২৪ নভেম্বর রফিকুলসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়া হয়। পরে ২০১৫ সালে মামলাটি বগুড়ার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-৪-এ বদলি করা হয়। মামলায় বিচারিক আদালতে রুবেল জামিন চাইলে গত বছরের ৬ জুন তা নামঞ্জুর হয়। ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন তিনি।
ইউসুফ মাহবুব মোর্শেদ আরো বলেন, সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ৪০-এর ২ ধারা অনুসারে অভিযোগপত্র দাখিলের আগে সরকারের অনুমোদন নিতে হয়। অথচ ওই মামলায় অনুমোদন ছাড়াই অভিযোগপত্র দাখিল এবং অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। ওই যুক্তিতে জামিন আবেদন করা হলে হাইকোর্ট রুবেলকে জামিন দিয়েছেন। অভিযোগ গঠনের পর মামলাটি এখন সাক্ষ্য গ্রহণের পর্যায়ে রয়েছে।