২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

১ এপ্রিল থেকে বর্ধিত মাসুল আদায় করবে বেসরকারি আইসিডি

বেসরকারি আইসিডির মাসুল ২০-৫০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি ; আমদানি-রফতানিকারদের মধ্যে উদ্বেগ
-

পরিচালন ব্যয় বেড়ে যাবার অজুহাতে তিন বছরের মাথায় আমদানি-রফতানি পণ্যবাহী কনটেইনারের মাসুল বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোটস অ্যাসোসিয়েশন (বিকডা)। আগামী ১ এপ্রিল থেকে এই বর্ধিত মাসুল কার্যকর করার ঘোষণায় আমদানি-রফতানিকারকদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। এসব বেসরকারি কনটেইনার ডিপো ব্যবহারকারীরা বলছেন, বিকডা আইসিডি নীতিমালা ২০১৬ এর নিয়মনীতি উপেক্ষা করেই বর্ধিত হারে মাসুল আদায়ের উদ্যোগ নিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর দিয়ে আমদানিকৃত পণ্যের মধ্যে ৩৭ ধরনের পণ্যবাহী কনটেইনার চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ থেকে নামানোর পর ডিপোতে নিয়ে খালাস করতে হয়। যা মোট আমদানি কনটেইনারের প্রায় ২১ শতাংশ। কিছু বৃহৎ গার্মেন্ট কারখানা বাদ দিলে সব ধরনের রফতানি পণ্যবাহী কনটেইনারের (৯৩%) স্টাফিং হয় এসব বেসরকারি কনটেইনার ডিপোতে।
বিকডার বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, আগামী ১ এপ্রিল হতে আমদানি কনটেইনারের হ্যান্ডলিং চার্জ সাধারণ প্যাকেজ চার্জ হিসেবে ২০ ফুট কনটেইনারের ক্ষেত্রে ৭,৮০০ টাকা (যা বর্তমানে ৬,৫০০ টাকা) এবং ৪০ ফুট কনটেইনারের ক্ষেত্রে ৯,০০০ টাকা (যা বর্তমানে ৭,৫০০ টাকা) আদায় করা হবে। অন চেচিস প্যাকেজ চার্জ ২০ ফুট কনটেইনারের ক্ষেত্রে ৬,৬০০ টাকা (যা বর্তমানে ৫,৫০০ টাকা) এবং ৪০ ফুট কনটেইনারের ক্ষেত্রে ৭,৮০০ টাকা (যা বর্তমানে ৬,৫০০) আদায় করা হবে।
বিকডার ঘোষণানুযায়ী কার্গো রিসিভিং চার্জ কার্টনপ্রতি ৩ টাকার স্থলে সাড়ে ৪ টাকা এবং কাভার্ডভ্যান প্রতি সর্বোচ্চ চার্জ ৫ হাজার টাকার স্থলে সাড়ে ৭ হাজার টাকা আদায় করা হবে।
বিকডার সার্কুলারে বলা হয়েছে, রফতানি পণ্য বোঝাইয়ের প্যাকেজ চার্জ ২০ ফুট কনটেইনারের ক্ষেত্রে ৩৬ শ’ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪৫ শ’ টাকা এবং ৪০ ফুট কনটেইনারের ক্ষেত্রে ৪৮ শ’ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬ হাজার টাকা, প্রতিদিনের গ্রাউন্ড রেন্ট ২০ কনটেইনার প্রতি ১০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২৫ টাকা এবং ৪০ ফুট কনটেইনার প্রতি ২০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৫০ টাকা করা হয়েছে। প্রতি টন পণ্যের ল্যান্ডিং চার্জ ১৮০ টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ২২৫ টাকা। সিএফএস স্টোরেজ চার্জ সাত দিনের পর দৈনিক প্রতি সিবিএম ২৫ টাকার স্থলে ৩০ টাকা করা হয়েছে।
খালি কনটেইনারের গ্রাউন্ড রেন্ট এবং লিফট অন/লিফট অব চাজর্, ডকুমেন্টেশন চার্জ এবং হলেজ/ ট্রান্সপোর্টেশন চার্জ ২৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।
বাফার বক্তব্য : বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়ার্ডারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফা) নৌপ্রতিমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে লিখেছে- বেসরকারি আইসিডি কর্তৃক রফতানি পণ্যবাহী কনটেইনারের ওপর স্টাফিং চার্জ আগামী ১ এপ্রিল হতে বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছে। চার্জ বৃদ্ধির ফলে দেশের রফতানি কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তাছাড়া চার্জ বৃদ্ধির ব্যাপারে কোনো স্টক হোল্ডারদের সাথে আলাপ-আলোচনা না করে সরকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে একতরফাভাবে বৃদ্ধির প্রস্তাব মোটেই যুক্তিসংগত এবং ব্যবসায় বান্ধব নয়।
নৌপ্রতিমন্ত্রীর কাছে বাফার সভাপতি মাহবুব উল আনাম লিখেছেন- সরকার কর্তৃক অনুমোদিত বেসরকারি আইসিডি/সিএফএস নীতিমালা ২০১৬ এর ১১ ধারার ১১.১ উপধারা অনুযায়ী- ‘ট্যারিফ বলতে আইসিডি/সিএফএস পরিচালনাকারী কর্তৃক প্রদেয় বিভিন্ন সার্ভিসের খাতে ধার্র্য চার্জকে বুঝাবে। বিভিন্ন শিপার/কনসাইনি/এমএলও/শিপিং এজেন্ট/ ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার থেকে আদায়যোগ্য ট্যারিফ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত ট্যারিফ কমিটি নির্ধারণ করবে যা মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত হয়ে কার্যকর হবে’। তাই অফডক/আইসিডি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত ট্যারিফ কমিটির অনুমোদন না নিয়ে রফতানি পণ্যবাহী কনটেইনারের স্টাফিং চার্জ বৃদ্ধির প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয়।
আমদানি-রফতানিকারকদের একাধিক সূত্র নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, গত ২৮ ফেব্র“য়ারি থেকে বিভিন্ন কনটেইনার লাইনের কাছে চিঠি দিয়ে মাসুল বাড়ানোর কথা জানিয়েছে চট্টগ্রামের ১৯টি বেসরকারি আইসিডির পক্ষ হতে।
এর আগে ২০১৬ সালের মার্চে ১৩ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত মাসুল বাড়ানো হয়েছিল।
নীতিমালার বাইরে ভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে জানতে চাইলে বিকডার সচিব রুহুল আমিন সিকদার নয়া দিগন্তকে বলেন, ২০১৬ সালের শুরুর দিকে বন্দর কর্তৃপক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সব পক্ষের উপস্থিতিতে সর্বশেষ ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল। তখন বন্দরের গঠিত কমিটিই ৪০ শতাংশ ব্যয় বৃদ্ধি পাবার কথা বললেও ২০ শতাংশ চার্জ বাড়ানো হয়েছিল। সে সময়ে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, এক বছর পর বাকি বাড়তি ভাড়া কার্যকর হবে। এর মধ্যে বন্দর কর্তৃপক্ষের সাথে দফায় দফায় এ নিয়ে কথা হয়েছে কিন্তু চার্জ বৃদ্ধির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত আসেনি। কিন্তু এরই মধ্যে পরিচালন ব্যয় অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাবার কারণে তিন বছর পর ডিপো মালিকেরা ভাড়া বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন। ট্যারিফ কমিটির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আইসিডি নীতিমালা করার সময়ই আমাদের পক্ষ হতে ট্যারিফ কমিটি নিয়ে আপত্তি ছিল। তিনি বলেন, মুক্ত বাজার অর্থনীতিতে ট্যারিফ কমিটি থাকতে পারে না।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বারের সহসভাপতি এ এম মাহবুব চৌধুরী চার্জ বৃদ্ধি প্রসঙ্গে নয়া দিগন্তকে বলেন, বিষয়টি ট্যারিফ কমিটির মাধ্যমে আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সমাধান হওয়া প্রয়োজন। চার্জ বাড়ানো হলে রফতানিকারকেরা যেমনি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, তেমনি আমদানি পণ্যের ব্যয়ও বাড়বে। এমনিতেই চট্টগ্রাম বন্দরের তুলনায় আমদানি কনটেইনারের ক্ষেত্রে অফডকে ব্যয় বেশি মন্তব্য করে তিনি বলেন, পুরো বিষয়টি নিয়ে ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার, চেম্বার এবং বিকডা দ্রুত আলোচনায় বসা উচিত।


আরো সংবাদ



premium cement
দক্ষিণ ভারতে কেন কাজ করেনি বিজেপির হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের নতুন আংশিক কমিটি বাংলাদেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসায় বিনিয়োগ সম্ভাবনা অন্বেষণে থাইল্যান্ডের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান ট্রাম্পের বিচার নিয়ে বিভক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট চুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত, ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত আমদানি ব্যয় কমাতে দক্ষিণাঞ্চলের সূর্যমুখী তেলের আবাদ পাকুন্দিয়ায় গানের আসরে মারামারি, কলেজছাত্র নিহত আবারো হার পাকিস্তানের, শেষ সিরিজ জয়ের স্বপ্ন পাটকেলঘাটায় অগ্নিকাণ্ডে ৩ দোকান পুড়ে ছাই ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা শুরু দোয়ারাবাজারে পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীকে হত্যা : স্বামীর আমৃত্যু কারাদণ্ড

সকল