১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪২৯, ০৮ রমজান ১৪৪৫
`

আত্মসমর্পণ আত্মস্বীকৃত ইয়াবা কারবারিদের

সাড়ে তিন লাখ ইয়াবা ও ৩০ অস্ত্র জমা ; আত্মসমর্পণ করেনি বদি, জাফরসহ ৭৩ গডফাদার ; অভিযান শুরুর পর কক্সবাজারেই নিহত ৪২
-

প্রায় দুই মাস সেফহোমে থাকার পর অবশেষে অনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করেছে তালিকাভুক্ত ১০২ জন ইয়াবাকারবারি। তার মধ্যে অন্তত ৩০ জন গডফাদার ও বাকি ৭২ জন ইয়াবা কারবারি। তারা তিন লাখ ৫০ হাজার ইয়াবা ও ৩০টি দেশীয় পিস্তল জমা দিয়েছে। আত্মসমর্পণকারীদের অস্ত্র ও মাদক আইনে পৃথক দু’টি মামলায় আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। দুপুর ১২টায় টেকনাফ পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে দেশে প্রথমবারের মতো ইয়াবা কারবারিদের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান হয়। ওই অনুষ্ঠানে নিজেদের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়ে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন টেকনাফ সদর ইউপির সদস্য আত্মস্বীকৃত ইয়াবা কারবারি এনামুল হক এনাম ও মোহাম্মদ সিরাজ।
এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দিনসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
তাদের উদ্দেশ্য করে আত্মস্বীকৃত ইয়াবা কারবারি এনামুল হক এনাম প্রতিক্রিয়ায় বলেন, আমাকে বিভিন্ন ভাবে হেড লাইন করে আলোচিত করা হয়েছে। মিডিয়ায় আমাকে গডফাদার হিসেবে পরিচিত করা হয়েছে। আমার রাজপ্রসাদের মতো বাড়ি। বিস্তর ব্যাংক ব্যালেন্স ও কোটি টাকার সম্পত্তিওয়ালা বানানো হয়েছে।
সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে তিনি বলেন, আপনারা কলমসৈনিক। আপনাদের লেখনি যেমন একজন মানুষকে সুন্দর জীবনযাপনে অভ্যস্ত করতে পারে। তেমনি আবার নিরপরাধ মানুষকে অপরাধী বানাতে পারে। আমি আপনাদের আহ্বান জানাচ্ছি, সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ইয়াবা কারবারিদের চিহ্নিত করা হোক। সীমান্ত এলাকার একজন কৃতী ফুটবলার হিসেবে আপনাদের অনুরোধ করছি, আপনাদের সামান্য মেধা খরচ করে সঠিক তথ্য উদঘাটন করুন। আমি কি ইয়াবা গডফাদার? নাকি সাধারণ এনাম? জীবনে অনেক অন্যায় করেছি। আমাদের একটিবার জীবন ভিক্ষা দিন। একটিবার আমাদের দিকে লক্ষ্য করুন। আমরা আপনাদের সুন্দর সমাজ উপহার দেবো। আমাদের স্বজন ও প্রজন্মের মুখ চেয়ে হলেও একবার সুযোগ দিন।
ইয়াবা কারবারি মোহাম্মদ সিরাজ বলেন, ইয়াবা পুরো দেশের যুবসমাজকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এতে দেশের নতুন প্রজন্ম চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। এ অপরাধে আমরা দায়ী। অন্য দিকে ইয়াবা কারবারের কারণে টেকনাফসহ পুরো কক্সবাজার জেলার মানুষ সারা দেশের মানুষের কাছে ছোট হয়ে আছে। যেখানে যাই টেকনাফের মানুষ পরিচয় দিলেও আমাদের ঘৃণা করা হয়। এমনকি কোথাও হোটেল ও বাসা ভাড়া নিতে গেলে আমাদের দেয়া হয় না। আমাদের সন্তানদের স্কুলে ভর্তি করাতে গেলে ভর্তি করা হয় না। এটা বড়ই কষ্টের ও লজ্জার। এসব কিছু বুঝতে পেরে আমরা দেশকে ইয়াবার আগ্রাসন থেকে বাঁচাতে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেছি। যারা এখনো আত্মসমর্পণ করেনি তাদেরও আত্মসমর্পণ করার আহ্বান জানাচ্ছি। একই সাথে আমাদের ক্ষমা করে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সুযোগ দেয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে আকুতি জানাচ্ছি। এর আগে আত্মসমর্পণকারীদের ফুল দিয়ে বরণ করা হয়।
এ ছাড়া সকাল সাড়ে ১০টায় পুলিশের ‘সেফহোম’ থেকে শীর্ষ ইয়াবা কারবারিদের টেকনাফে আত্মসমর্পণ মঞ্চে নেয়া হয়। মঞ্চের কাছে একটি দোতলা ভবনে তাদের রাখা হয়। আত্মসমর্পণকারীদের দেখতে তাদের স্বজন ও এলাকার হাজারো মানুষ ভিড় জমান। তালিকাভুক্ত কয়েকজন ইয়াবা কারবারিকেও অনুষ্ঠান স্থলে দর্শক হিসেবে দেখা গেছে।
পৌনে ১১টায় আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইজিপি মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দিন, উখিয়া-টেকনাফের সংসদ সদস্য শাহিন আক্তার, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন, পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসাইন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন ও টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সংসদ সদস্য জাফর আলম, আশেক উল্লাহ রফিক ও সাইমুম সরওয়ার কমল ছিলেন সেখানে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আত্মসমর্পণকারী ১০২ ইয়াবা কারবারির মধ্যে অন্তত ৩০ জন গডফাদার রয়েছেন। প্রথমে কোনো মামলা দেয়ার কথা না থাকলেও শেষ পর্যন্ত ইয়াবা কারবারিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও ইয়াবা মিলে মোট দু’টি মামলা দায়ের করা হয়।
আড়ালে রয়ে গেল যারা
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ৭৩ শীর্ষ মাদক কারবারির মধ্যে যারা আত্মসমর্পণ করেনি, তাদের মধ্যে রয়েছেন আবদুর রহমান বদির ভাই টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশ টেকনাফ উপজেলার সভাপতি মুজিবুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মো: আলীর বড় ছেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ ও রাশেদ মোহাম্মদ আলী, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জাফর আহমদ ও তার ছেলে টেকনাফ সদর ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি মোহাম্মদ শাহজাহান মিয়া, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ও তার ছোট ভাই বাহারছড়া ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আজিজ উদ্দিন, সাবেক জেলা যুবলীগের সহসভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবুল কালাম, হ্নীলা ইউপির চেয়ারম্যান ও হ্নীলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এইচ কে আনোয়ার ও সাবরাং ইউপি সদস্য ও শাহপরীর দ্বীপ সাংগঠনিক শাখা যুবলীগের সভাপতি রেজাউল করিম।
আত্মসমর্পণ করেছে যারা
আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে রয়েছেন : টেকনাফ পৌরসভার চৌধুরীপাড়ার বাসিন্দা আবদুস শুক্কুর, শফিকুল ইসলাম শফিক, আমিনুর রহমান ওরফে আবদুল আমিন, ফয়সাল রহমান, বদির ভাগিনা সাহেদ রহমান নিপু, আরেক ভাগিনা টেকনাফ পৌর ৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নূরুল বশর ওরফে নূরশাদ, মং সিং থেইন ওরফে মমসি, ফুপাতো ভাই কামরুল হাসান রাসেল, মারুফ বিন খলিল বাবু, বদির বেয়াই সাহেদ কামাল ও টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আলমের ছেলে দিদার মিয়া। টেকনাফের হ্নীলার ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বর নুরুল হুদা, টেকনাফ সদরের ৮নং ওয়ার্ডের এনামুল হক এনাম মেম্বর, সাবরাংয়ের ১নং ওয়ার্ডের মোয়াজ্জেম হোসেন দানু মেম্বর, সাবরাং ইউপির শাহপরীর দ্বীপের ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বর রেজাউল করিম রেজু মেম্বর, উত্তর আলী খালির শাহ আজম ও সাবরাং নয়াপাড়ার আলমগীর ফয়সাল লিটন, হাজী সাইফুল করিমের দুই শ্যালক জিয়াউর রহমান ও আবদুর রহমান। টেকনাফের পশ্চিম লেদার নুরুল কবির, হ্নীলা সিকদারপাড়ার সৈয়দ আহম্মদ সৈয়দ, বন্দুকযুদ্ধে নিহত নাজিরপাড়ার শীর্ষ ইয়াবা কারবারি জিয়াউর রহমানের ভাই আবদুর রহমান, নাজিরপাড়ার সৈয়দ হোসেন, নাইটংপাড়ার ইউনুস, ডেইলপাড়ার জাফর আলম, জাহাজপুরার নুরুল আলম, হ্নীলার রশিদ আহম্মদ ওরফে রশিদ খুলু, সদরের ডেইলপাড়ার আব্দুল আমিন ও নুরুল আমিন, টেকনাফ সদরের উত্তর লম্বরি এলাকার করিম মাঝি, হ্নীলা ফুলের ডেইলের রুস্তম আলী। শামলাপুর জুমপাড়ার শফিউল্লাহ, একই এলাকার সৈয়দ আলম, রাজাছড়ার আব্দুল কুদ্দুছ, মধ্যম জালিয়াপাড়ার মোজাম্মেল হক, জাহেলিয়াপাড়ার মোহাম্মদ সিরাজ, কচুবনিয়ার আব্দুল হামিদ, নাজিরপাড়ার মোহাম্মদ রফিক, পল্লানপাড়ার মোহাম্মদ সেলিম, নাইটংপাড়ার রহিমউল্লাহ, নাজিরপাড়ার মোহাম্মদ হেলাল, চৌধুরীপাড়ার মোহাম্মদ আলম, সদর ইউনিয়নের মৌলভীপাড়ার একরাম হোসেন। হ্নীলার পূর্ব পানখালির নজরুল ইসলাম, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের তুলাতলি এলাকার নুরুল বশর ওরফে কালা ভাই, হাতিয়ার ঘোনার দিল মোহাম্মদ, একই এলাকার হাসান, সাবরাং নয়াপাড়ার নূর মোহাম্মদ, কচুবনিয়ার বদিউর রহমান ওরফে বদুরান, জালিয়াপাড়ার জুবায়ের হোসেন, হ্নীলার পূর্ব লেদার জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।
৯ শর্তে আত্মসমর্পণ করছে ইয়াবা কারবারিরা
দোষ স্বীকার করে ৯ শর্তে আত্মসমর্পণ করেছে টেকনাফের ১০২ জন ইয়াবা গডফাদার ও কারবারি। তাদের মধ্যে ৩০ জন গডফাদার ও ৭২ জন ইয়াবা কারবারি রয়েছে।
শর্তগুলো হলো : ১. নিজের হেফাজতে থাকা সব ইয়াবা ও অবৈধ অস্ত্র পুলিশের কাছে হস্তান্তর করতে হবে।
২. আত্মসমর্পণের আগে দায়েরকৃত মামলা ও বিচার কার্যক্রম স্বাভাবিক নিয়মে চলবে।
৩. ইয়াবা কারবারে নিজের/পরিবারের সদস্য বা আত্মীয়স্বজনের নামে-বেনামে অর্জিত সব সম্পদ দুদক, সিআইডির মানিলন্ডারিং শাখা ও এনবিআরের মাধ্যমে যাচাই করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
৪. আত্মসমর্পণ প্রক্রিয়ায় দায়ের হওয়া মামলায় সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে সহায়তা প্রদান করা হবে।
৫. যেসব মাদক কারবারি এখনো সক্রিয় তাদের ব্যাপারে তথ্য দিয়ে সহায়তা করতে হবে।
৬. আইনি প্রক্রিয়ায় মুক্ত হলে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার পাশাপাশি নিজ নিজ এলাকায় মাদকবিরোধী কর্মকাণ্ড করতে হবে।
৭. ভবিষ্যতে কখনো মাদকসংক্রান্ত অপরাধে জড়িত হওয়া যাবে না।
৮. আত্মসমর্পণ প্রক্রিয়ায় তাদের বিরুদ্ধে যে মামলাটি হবে, সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে তাদের আইনগত সুবিধা প্রদানের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
৯. মাদক কারবারের মাধ্যমে নিজের পরিবারের আত্মীয়স্বজনের নামে ও বেনামে অর্জিত সব স্থাবর, অস্থাবর সম্পত্তি যাচাইয়ের জন্য দুদক, (সিআইডি মানিলন্ডারিং শাখা) এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি সব সংস্থার কাছে তাদের তথ্যাদি প্রেরণ করা হবে। সংশ্লিষ্ট সংস্থার মাধ্যমে তাদের অর্জিত সব স্থাবর, অস্থাবর সম্পত্তি যাচাই সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গত বছরের ৪ মে থেকে সরকার মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিভিন্ন বাহিনী ও সংস্থা স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি কিছু পরিকল্পনা নেয়। পাশাপাশি দেশজুড়ে চলা ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধে প্রায় ৩০০ ইয়াবা কারবারি নিহত হন। এর মধ্যে কক্সবাজার জেলায় মারা গেছে ৪৪ জন। গত ডিসেম্বর থেকে মাদক নির্মূলে ইয়াবা কারবারিদের ‘স্বাভাবিক জীবনে’ ফিরে আসা ও পুনর্বাসনে সরকার উদ্যোগ নেবে এমন ইঙ্গিত আসে সরকারের শীর্ষপর্যায় থেকে। জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে আত্মসমর্পণের জন্য ইয়াবা কারবারিরা কক্সবাজার পুলিশ লাইনে আশ্রয় নিতে শুরু করেন।
আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে তালিকাভুক্ত ইয়াবা কারবারিরাও!
নিজেরা আত্মসমর্পণ না করলেও ঠিকই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন সরকারের বিভিন্ন বিভাগের তালিকাভুক্ত ইয়াবা কারবারিরা।
শনিবার সকালে টেকনাফ পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে শুরু হওয়া আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে দর্শক সারির দ্বিতীয় লাইনে চেয়ারে বসে থাকতে দেখা গেছে তালিকাভুক্ত ইয়াবা কারবারি জাফর আহমদকে।
তিনি টেকনাফ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। অনুষ্ঠানে জাফর আহমদের ছেলে টেকনাফ সদর ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি মোহাম্মদ শাহজাহান মিয়া রয়েছেন। তিনিও তালিকাভুক্ত। এ ছাড়াও অনেক ইয়াবা কারবারি ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত দেখা গেছে। তবে আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে আব্দুর রহমান বদি উপস্থিত হননি।
অভিযান শুরুর পর কক্সবাজারেই নিহত ৪২
অভিযান শুরুর পর প্রায় প্রতিদিনই ‘বন্দুকযুদ্ধে’ সন্দেহভাজন মাদক কারবারিদের হতাহতের ঘটনা ঘটছে। এ সময় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ শুধু কক্সবাজারেই ৪২ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে টেকনাফে নিহতের সংখ্যা ৩৯ জন। তাদের মধ্যে ২৫ জন টেকনাফের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা। সেখানে রয়েছে দু’জন জনপ্রতিনিধি। ফলে ইয়াবা কারবারিদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। তাদের মধ্যে অনেকে প্রাণ বাঁচাতে পথ খুঁজতে থাকে। একপর্যায়ে বিভিন্ন মাধ্যমে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণের প্রস্তাব দেয়। এতে ইয়াবা কারবারিদের আত্মসমর্পণের সুযোগ দিতে সরকার সম্মত হয়। গত ১০ জানুয়ারি থেকে ইয়াবা কারবারিরা কক্সবাজার পুলিশ হেফাজতে চলে যায়। এর পর থেকে শুরু হয় দলবেঁধে নিজেদের সমর্পণ প্রক্রিয়া। পরে ফেসবুকে জানান দিয়ে টেকনাফ সদরের ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বর এনামুল হক একঝাঁক ইয়াবা কারবারিসহ শোডাউনের মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করেন।
ইয়াবা কারবারিদের ছাড় নয়Ñস্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্টমন্ত্রী মো: আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, মাদকের ব্যাপারে কাউকে ছাড় নয়। আগে দেশ বাঁচাতে হবে। সীমান্ত দিয়ে কোনো প্রকার মাদক ও অবৈধ নাগরিক যাতে অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেজন্য সতর্ক থাকতে হবে। এ জন্য বিজিবিকেই সর্বাধিক দায়িত্বপালন করতে হবে।
আত্মসমর্পণকারিদের উদ্দেশ্য করে মন্ত্রী আরো বলেন, ‘আপনারা আল্লাহর কাছে মাফ চান। আপনারা ভালো হয়ে যান। দেশ ও জাতির ভবিষ্যতে এগিয়ে আসুন। আর যারা এখনো আত্মসমর্পণ করেননি, তারা দ্রুত আইনের কাছে আত্মসমর্পণ করুন। না হলে ইয়াবা কারবারি যত শক্তিশালী হোক না কেন তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন।


আরো সংবাদ



premium cement
ফিলিপাইন ও জাপানের নেতাদের সাথে বৈঠকে বসছেন বাইডেন ইফতার পার্টির নামে গিবত পার্টি করছে বিএনপি : ওবায়দুল কাদের ভাড়া বেশি নিলে সেই বাস বন্ধের হুঁশিয়ারি মালিক সমিতির যুক্তরাষ্ট্রে প্রীতি ম্যাচে খেলা হচ্ছে না মেসির ঢাকায় কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে অভিযানে মূলহোতাসহ ৩৫ জন গ্রেফতার মে মাসে মেলবোর্নে নিউক্যাসলের মুখোমুখি হবে টটেনহ্যাম নোয়াখালীতে ডাকাতির প্রস্তুতির সময় গ্রেফতার ৩ মেসি না খেলায় হংকংয়ের সমর্থকরা টিকেটের অর্ধেক অর্থ ফেরত পাবে অবন্তিকার অভিযোগ কে কে অবহেলা করেছে, তদন্ত করা হবে : জবি ভিসি গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করতে সৌদি ও মিসর যাবেন ব্লিঙ্কেন গাজায় ‘শতভাগ’ মানুষ ‘তীব্র খাদ্য সঙ্কটে’ : মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সকল