২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দেড় লাখ ইভিএম কেনার সিদ্ধান্ত

ইভিএমকে ধাপে ধাপে ব্যবহারের নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রীর
-

নির্বাচন কমিশনের জন্য দেড় লাখ ইলেকট্র্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কেনার প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকার। বিভিন্ন দল ও মহলের আপত্তি সত্ত্বেও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তিন মাস আগে একনেকে এই প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হলো। পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, একবারে নয়, তিন ধাপে কেনা হবে এসব ইভিএম। আগামী নির্বাচনে এগুলোর ব্যবহার হবে কিনা সেটি ইসির বিষয়; আমরা অনুমোদন দিয়েছি। তিনি বলেন, সরকারের নিরাপত্তার বিষয় থাকতে পারে, তাই বিস্তারিত কিছু বলা যাবে না। তবে প্রধানমন্ত্রী ইভিএমকে ধাপে ধাপে ব্যবহারের নির্দেশনা দিয়েছেন এবং কোনো ধরনের অপব্যবহার যেন না হয় সে ব্যাপারে নজর রাখতে বলেছেন বলেও পরিকল্পনামন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান।
প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল শেরেবাংলা নগরস্থ এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় (একনেক) ইভিএম সংগ্রহ প্রকল্পটিসহ মোট ১৪টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। সভা শেষে ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রকল্পগুলোর ব্যাপারে সাংবাদিকদের অবহিত করেন। তিনি জানান, ১৪ প্রকল্পে মোট ব্যয় হবে ১২ হাজার ৫৪৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে আট হাজার ৮৪২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা দেয়া হবে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে। আর প্রকল্প সাহায্য থেকে আসবে তিন হাজার ৪৪৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
মন্ত্রী জানান, ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ, ত্রুটিমুক্ত, বিশ্বাসযোগ্য ও আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর করতে দেড় লাখ ইভিএম কেনা হবে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে তিন হাজার ৮২৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে সাথে নির্বাচন প্রক্রিয়া আরো সুষ্ঠু ও অবাধ করতে ইভিএম ব্যবহারের উদ্যোগ নেয় ইসি। ইতঃপূর্বে ব্যবহৃত ইভিএমের ত্রুটিগুলো বিবেচনায় রেখে সম্পূর্ণ নতুন কনফিগারেশনের অত্যাধুনিক ও নির্ভরযোগ্য ইভিএম ব্যবহারে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইভিএম ইতঃপূর্বে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন-২০১৭ সহ বেশ কিছু নির্বাচনে পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের একটি কেন্দ্রের ছয়টি কক্ষে ইভিএম ব্যবহারের মাধ্যমে সফলতার সাথে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করা হয়। এতে কোনো ধরনের অভিযোগ পাওয়া যায়নি। ভোটগ্রহণ শেষে প্রতিটি কক্ষে ভোট গণনার সময় লাগে মাত্র এক মিনিট।
মুস্তফা কামাল বলেন, এটিকে ব্যবহার করতে হলে গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ বা আরপিওতে পরিবর্তন আনতে হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রকল্পটি নিয়ে তাড়াহুড়া করা হয়নি। দুই মাস আমাদের কাছে ছিল। ওটাই দীর্ঘসময় বলে মনে করি। এর চেয়ে বেশি কিছু আমি বলতে পারব না।
অনুমোদিত অন্যান্য প্রকল্প : বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল, মীরসরাই প্রথম পর্যায় প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৭৫০ কোটি ৫৯ লাখ টাকা, শেখ হাসিনা তাঁতপল্লী স্থাপন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ২৫৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা, চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি জাতীয় মহাসড়কের (এন-১০৬) হাটহাজারী থেকে রাউজান পর্যন্ত সড়ক চার লেনে উন্নীত করার প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৫২৮ কোটি ৩৫ লাখ টাকা, জামালপুর-মাদারগঞ্জ সড়ক প্রশস্তকরণ ও মজবুতীকরণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১২৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৪৬১ কোটি ২৬ লাখ টাকা, ভারতের সাথে রেলসংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে চিলাহাটি ও চিলাহাটি সীমান্তের মধ্যে রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৮০ কোটি ১৭ লাখ টাকা, গোপালগঞ্জ জেলায় বিএআরআইয়ের কৃষি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন ও দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পরিবেশ প্রতিবেশ উপযোগী গবেষণা কার্যক্রম জোরদার করার মাধ্যমে কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১৫৭ কোটি টাকা, বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, ঝালকাঠি, বরগুনা, মাদারীপুর ও শরীয়তপুর কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১১১ কোটি ৯১ লাখ টাকা, গোপালগঞ্জ-খুলনা-বাগেরহাট-সাতক্ষীরা-পিরোজপুর কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৮২ কোটি ৬৫ লাখ, জাতীয় উন্নয়ন প্রশাসন একাডেমি প্রতিষ্ঠা প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ২৫৭ কোটি ৯৮ লাখ টাকা, শাহবাগের বাংলাদেশ বেতার কমপ্লেক্স আগারগাঁওয়ে স্থানান্তর, নির্মাণ ও আধুনিকায়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১১৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা, খুলনা শহরের জলাবদ্ধতা দূর করতে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৮২৩ কোটি ৭৯ লাখ টাকা এবং প্রোগ্রাম ফর সার্পোটিং রুরাল ব্রিজেস প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৯৭১ কোটি টাকা।

 


আরো সংবাদ



premium cement