২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
ইউপি চেয়ারম্যান খুনের আসামি

সাতক্ষীরায় শ্রমিক লীগ নেতা গণপিটুনিতে নিহত

-

কালিগঞ্জের কৃষ্ণনগর ইউপি চেয়ারম্যান ও জেলা জাতীয় পার্টির নেতা কে এম মোশাররফ হোসেন হত্যা মামলার প্রধান আসামি ও শ্রমিক লীগ নেতা আবদুল জলিল গাইন গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার রাত সোয়া ৯টায় কৃষ্ণনগর বাজারে যুবলীগ কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। আব্দুল জলিল গাইন সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের শংকরপুর গ্রামের হাবিবুল্যাহ গাইনের ছেলে।
কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ হাসান হাফিজুর রহমান জানান, জনতার সহায়তায় ঢাকার গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার রাখালিয়াচালায় সরকার মার্কেট থেকে শুক্রবার দুপুরে মৌচাক ফাঁড়ির পুলিশ জলিল গাইনকে গ্রেফতার করে। পরে জলিল গাইনকে সাতক্ষীরায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে চেয়ারম্যান মোশাররফ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র কৃষ্ণনগরে বাড়ির পাশে লুকানো রয়েছে বলে জানালে পুলিশ রাত ৯টায় জলিল গাইনকে নিয়ে সেখানে যায়। কৃষ্ণনগর বাজারে অবস্থিত যুবলীগ কার্যালয়ের সামনে পৌঁছলে কিছু বুঝে ওঠার আগেই হাজার হাজার উত্তেজিত জনতা পুলিশের কাছ থেকে জলিল গাইনকে ছিনিয়ে নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি চালালেও শেষ রক্ষা হয়নি। এ সময় কয়েকজন পুলিশও আহত হয়। রাত পৌনে ১১টায় পুলিশ অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, অন্ধকারের মধ্যে কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। মৃতদেহ এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। আব্দুল জলিলের বিরুদ্ধে হত্যাসহ আটটি মামলা রয়েছে বলে তিনি জানান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল থেকে এলাকাবাসী জলিল গাইনসহ সব আসামিকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের দাবি জানিয়ে কৃষাণ মজদুর স্কুল মাঠে প্রতিবাদ সমাবেশ করতে থাকেন। প্রতিবাদ সমাবেশ চলাকালে পুলিশ জলিল গাইনকে নিয়ে কৃষ্ণনগরের শংকরপুরে তার বাড়িতে অস্ত্র উদ্ধারের জন্য অভিযান চালায়। পরে তাকে নিয়ে কৃষ্ণনগর বাজারে অবস্থিত যুবলীগ কার্যালয়ের পাশে পৌঁছানোর পরপরই হঠাৎ উত্তেজিত জনতা পুলিশের কাছ থেকে জলিল গাইনকে ছিনিয়ে নিয়ে গণপিটুনি দেয়। এ সময় বেশ কিছু গুলির শব্দ শোনা যায়। জলিল গাইনের মৃত্যু হওয়ার পর উত্তেজিত জনতা তার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে।
প্রসঙ্গত, গত ৮ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ১১টায় কৃষ্ণনগর ইউপি চেয়ারম্যান কে এম মোশাররফ হোসেনকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় চেয়ারম্যানের মেয়ে সাফিয়া পারভীন বাদি হয়ে ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বর ও কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সভাপতি জলিল গাইনকে প্রধান আসামি করে ১৯ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ২০ জনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেন। চেয়ারম্যান মোশাররফ হত্যাকাণ্ডের পরপরই জলিল গাইন আত্মগোপন করে।


আরো সংবাদ



premium cement