২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

গৃহনির্মাণে সরকারি কর্মচারীদের ঋণে আবাসন খাতে ১৩ লাখ নতুন ক্রেতা আসবে

সরকারি কর্মচারীদের গৃহনির্মাণ ঋণসংক্রান্ত পরিপত্র নিয়ে রিহ্যাবের সংবাদ সম্মেলন : নয়া দিগন্ত -

সরকারি কর্মচারীদের গৃহনির্মাণ খাতে স্বল্প সুদে সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ টাকার ঋণ দেয়ার সরকারি ঘোষণায় উৎফুল্ল আবাসন ব্যবসায়ীরা। আবাসন ব্যবসায়ীদের জাতীয় সংগঠন রিয়েল এস্টেট হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) মনে করছে, সরকারের এ সিদ্ধান্তের কারণে বাংলাদেশের আবাসন খাতে নতুন করে ১৩ লাখ ক্রেতার সৃষ্টি হবে। রিহ্যাব বলছে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বেসরকারি আবাসন খাতে তাদের টাকা বিনিয়োগ করবেন। সরকারিভাবে ঋণসংক্রান্ত পরিপত্র জারি করায় রিহ্যাব নেতৃবৃন্দ এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। গতকাল সোমবার রাজধানীর সুন্দরবন হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহসভাপতি (প্রথম) মো: লিয়াকত আলী ভূঁইয়া, সহসভাপতি আব্দুল কৈয়ুম চৌধুরী, সহসভাপতি আকরামুল্লাহ প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, স্বল্প সুদে গৃহঋণের প্রজ্ঞাপন অনুয়ায়ী সরকারি চাকরিজীবীরা ৫ শতাংশ সুদ হারে গৃহঋণ পাবেন। পরিপত্রের আওতায় জাতীয় বেতন স্কেলের গ্রেড ভেদে সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ এবং সর্বনি¤œ ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নেয়া যাবে। এ ঋণের মোট সুদহার ১০ শতাংশ। তবে এ ১০ শতাংশ সুদের ৫ শতাংশ দেবে সরকার এবং অবশিষ্ট ৫ শতাংশ ঋণগ্রহীতা পরিশোধ করবেন। ২০ বছর মেয়াদে এ ঋণ পরিশোধ করতে হবে।
বর্তমানে ১০ শতাংশ সুদহারে একজন সরকারি কর্মচারী সর্বোচ্চ ঋণ পান এক লাখ ২০ হাজার টাকা। কিন্তু নতুন নীতিমালা অনুযায়ী উপ-সচিব থেকে সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তারা, জাতীয় বেতন স্কেলের পঞ্চম থেকে প্রথম গ্রেডভুক্তরা ৭৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ২০ বছর মেয়াদি এ ঋণ নিয়ে বাড়ি নির্মাণ কিংবা ফ্ল্যাট ক্রয় করতে পারবেন। সর্বনি¤œ ১৮ থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারীরা ঢাকাসহ সব সিটি করপোরেশন ও বিভাগীয় সদরে ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ সুবিধা পাবেন।
সরকারি কর্মচারীদের গৃহনির্মাণে ঋণের মাধ্যমে অর্থের জোগান দিতে এ নীতিমালা করা হলেও সরকারের আওতাধীন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদফতর, পরিদফতর ও কার্যালয়গুলোয় স্থায়ী পদের বিপরীতে নিয়োগপ্রাপ্ত বেসামরিক কর্মচারীরাও এ সুবিধা পাবেন। এ হিসেবে সরকারের প্রায় ১২ লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারী গৃহনির্মাণ ঋণ সুবিধা পাবেন। তারা এককভাবে এ ঋণ নিতে পারবেন। আবাসিক বাড়ি করার জন্য গ্রুপভিত্তিক ঋণও নেয়া যাবে। আবার ফ্ল্যাট কেনার জন্যও এ ঋণ সুবিধা পাওয়া যাবে। ফ্ল্যাট কেনা বা নিজস্ব জমিতে বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে ঋণ দেয়ার জন্য ডেট ইক্যুইটি রেশিও (অনুপাত) হবে ৯০:১০। অর্থাৎ ফ্ল্যাট কেনা বা নিজস্ব জমিতে বাড়ি নির্মাণের জন্য কেউ নিজস্ব উদ্যোগে ১০ টাকা খরচ করলে তিনি ৯০ টাকা ঋণ পাবেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রিহ্যাব সভাপতি বলেন, সরকারের এ ঘোষণায় আবাসন শিল্পের সাথে পশ্চাৎ সংযোগ শিল্পগুলোও লাভবান হবে। ফলে দেশের অর্থনীতি নতুন মাত্রা পাবে। ব্যাংকের ঋণ প্রদান প্রশ্নে তিনি বলেন, সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলো এক অঙ্কের সুদে ঋণ দিতে রাজি হলেও লিজিং কোম্পানিগুলো এখন এক অঙ্কে দিচ্ছে না। লিজিং কোম্পানিগুলোকে সরকারি সিদ্ধান্তের আওতায় আনতে রিহ্যাব সভাপতি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement