২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দেশে প্রথমবারের মতো ভিন্ন ব্লাড গ্রুপের রোগীর দেহে কিডনি প্রতিস্থাপন

ইমরান ফিরোজ -

বাংলাদেশে এই প্রথমবারের মতো ভিন্ন রক্তের গ্রুপের কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এবিও ইনকমপ্যাটিবল পদ্ধতিতে এ ধরনের কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এ পদ্ধতিতে কিডনি প্রতিস্থাপন নিয়মিত করা হলে রোগীর সাথে দাতার (ডোনার) রক্তের গ্রুপের মিল থাকার প্রয়োজন হয় না। ফলে বেড়ে যাবে কিডনিদাতার সংখ্যা। কিডনিদাতার সঙ্কট হ্রাস পাবে। ফলে কমে যাবে কিডনি বেচাকেনার মতো অবৈধ ও অনৈতিক ব্যবসায়। কিডনি বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের জন্য এটি একটি বড় অর্জন। মিরপুরের কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে বিরল প্রতিস্থাপনটি করা হয়েছে।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, কুড়িগ্রামের ২৩ বছরের ইমরান ফিরোজের দুটি কিডনিই বিকল হয়ে যায়। তার রক্তের গ্রুপ ছিল ‘ও’। ছেলেকে বাঁচাতে নিজের কিডনি দিতে চাইলে ইমরানের মায়ের রক্তের গ্রুপ না মিলায় তৈরি হয় জটিলতা। কিডনি প্রতিস্থাপনে কিডনিদাতার সাথে গ্রহীতার রক্তের গ্রুপ ও টিস্যু টাইপিংয়ের যথেষ্ট মিল থাকতে হয়। কিন্তু গত ৫ জুলাই এবিও ইনকমপ্যাটিল কিডনি প্রতিস্থাপন (এবিওআই) পদ্ধতির সফল প্রয়োগে ইমরান ফিরোজের দেহে মায়ের কিডনি প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হয়। কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ডা: হারুন আর রশিদের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ নেফ্রলজির টিম, ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জন অধ্যাপক ডা: খুরশিদ আলম ও অধ্যাপক ডা: সাজিদ হাসানের নেতৃত্বে ট্রান্সপ্ল্যান্ট টিম, ব্লাড ব্যাংক বিশেষজ্ঞ, অ্যানাসথেটিস্ট ও নার্সের সমন্বয়ে বিশেষ টিম এ ট্রান্সপ্ল্যান্ট কার্যক্রম পরিচালনা করেন। ইতোমধ্যে ইমরান ও তার মা হাসপাতাল ছেড়ে গেছেন সুস্থ হয়ে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, কিডনিগ্রহিতা ও দাতা উভয়েই সুস্থ আছেন।
কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্টের কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই প্লাজমাফেরেসিস পদ্ধতিতে রক্তের প্লাজমা বা রক্ত রসকে রক্ত কোষ থেকে আলাদা করা হয়। একটি বিশেষ ছাঁকনির মাধ্যমে বার বার ছেঁকে সেখান থেকে অ্যান্টিবডিগুলো আলাদা করে নেয়া হয়। অ্যান্টিবডি আলাদা করলে অন্য রক্তের গ্রুপের কোনো ব্যক্তির সাথে কিডনি প্রতিস্থাপন করার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা থাকে না। ইমরান ফিরোজের অ্যান্টিবডি ছিল ১ অনুপাত ১২৮। ব্লাড এফেরেসিস মেশিনের মাধ্যমে ও কিছু ওষুধ প্রয়োগ করে তা ১ অনুপাত ৮-এ নামিয়ে আনা হয়। ঠিক এ অবস্থায় কিডনিগ্রহিতা ভিন্ন গ্রুপের দাতার কিডনি শরীরে মানিয়ে নেয়। অধ্যাপক ডা: হারুন আর রশিদ জানিয়েছেন, রক্ত থেকে অ্যান্টিবডি পৃথক করার প্রক্রিয়াটির জন্য তিন সপ্তাহ লেগেছে। পুরো প্রস্তুতি শেষে গত ৫ জুলাই কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়।
অধ্যাপক হারুন আর রশিদ বলেন, উন্নত দেশে এ প্রক্রিয়ায় কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট সাফল্যের হার ৯৫ শতাংশ। স্বাভাবিক ট্রান্সপ্ল্যান্ট রোগীদের মতো তাদের ক্ষেত্রেও ইনফেকশন ও কিডনি রিজেকশন (প্রত্যাখ্যান) ছাড়া অন্য কোনো ঝুঁকি নেই। তবে প্রতিস্থাপনের পর রোগীকে বিশেষ ফলোআপের মাধ্যমে যেতে হয়।
বাংলাদেশে প্রায় দুই কোটি মানুষ কোনো না কোনোভাবে কিডনি জটিলতায় আক্রান্ত। এর মধ্যে বছরে সম্পূর্ণভাবে কিডনি বিকল হয়ে যায় প্রায় ৪০ হাজার মানুষের। তাদের ৮০ শতাংশই মারা যান। অবশিষ্ট ২০ শতাংশের মধ্যে ৯৫ শতাংশ হেমো ডায়ালাইসি ও ২ থেকে আড়াই শতাংশ সিএপিডি ও কিডনি প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে বেঁচে থাকেন। এ পর্যন্ত বাংলাদেশে দুই হাজারের বেশি রোগীর দেহে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। তাদের প্রায় সবাই জীবিত এবং আত্মীয়স্বজনের কাছে থেকে কিডনি পেয়েছেন।


আরো সংবাদ



premium cement
নোয়াখালীতে প্রবাসীর স্ত্রীর ব্যক্তিগত ছবি দেখিয়ে চাঁদা আদায় দেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে, অথচ বিরোধী দল দেখে না : কাদের আশুলিয়ায় বাঁশবাগান থেকে নারী পোশাক শ্রমিকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার মিয়ানমারের কর্মকর্তারা ফেরত গেলেন, কিন্তু রোহিঙ্গা সঙ্কট কি আরো জটিল হচ্ছে দিনাজপুরে দুই ট্রাকের সংঘর্ষ, চালক-হেলপার নিহত মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২ সখীপুরে বৃষ্টির জন্য অঝোরে কাঁদলেন মুসল্লিরা দক্ষিণ ভারতে কেন কাজ করেনি বিজেপির হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের নতুন আংশিক কমিটি বাংলাদেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসায় বিনিয়োগ সম্ভাবনা অন্বেষণে থাইল্যান্ডের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান ট্রাম্পের বিচার নিয়ে বিভক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট

সকল