২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পাকস্থলী ও খাদ্যনালী ফুটো হয়ে যাওয়া

-


হঠাৎ পেটে তীব্র ব্যথা এবং সব কাজকর্ম ফেলে মাটিতে লুটিয়ে পড়া এই রোগের অন্যতম লক্ষণ।
কোথায় কোথায় পারফোরেশন বা ফুটা হয় :
(১) পাকস্থলী (স্টমাক) (২) ডিওডিনাম, (৩) ক্ষুদ্র অন্ত্রের জেজুনাম বা আইলিয়াম-এ (৪) বৃহদন্ত্রের সিকাম, কোলন ও রেকটাম-এ (৫) ইসোফেগাসে অর্থাৎ পরিপাকতন্ত্রের যেকোনো অংশে পারফোরেশন হতে পারে।
খাদ্যনালীর বা পাকস্থলীর পারফোরেশনের কারণগুলো কী কী?
(১) খাদ্যনালীর বা পাকস্থলীর পারফোরেশন অত্যন্ত কমন একটি জটিলতা যেমনÑ গ্যাস্ট্রিক আলসার, ডিওডিনাল আলসার পারফোরেশন।
(২) টাইফয়েড আলসার পারফোরেশন ক্ষুদ্র অন্ত্রের আইলিয়াম এ টাইফয়েড জ্বরের পর হতে পারে।
(৩) খাদ্যনালীর টিবি, টিউমার বা ক্যান্সারেও পারফোরেশন হতে পারে।
(৪) আঘাতজনিত বা ট্রমার কারণেও পারফোরেশন হতে পারে যেমনÑ এন্ডোসকপি করার সময় এবং রোড ট্রাফিক এক্সিডেন্ট ইত্যাদি।
(৫) বাত, শরীর ব্যথা ও পেট ব্যথা ইত্যাদির জন্য খালি পেটে ব্যথানাশক ঔষধ (ঘঝঅওউ ক্লোফেনাক) ব্যবহার করলেও খাদ্যনালীর পারফোরেশন হতে পারে।
খাদ্যনালীর পারফোরেশন বা ফুটা হওয়ার লক্ষণ কী কী?
(ক) পেটে হঠাৎ তীব্র ব্যথা (খ) সব পেটে ব্যথা ছড়িয়ে পড়া এবং পেট শক্ত হয়ে যাওয়া (গ) রোগী নড়াচড়া, হাঁচি, কাশি দিলেও পেটে প্রচণ্ড ব্যথা হয় (ঘ) রোগী একদম নড়াচড়া করবে না। একবারে স্থিরভাবে বিছানায় শুয়ে থাকবে, (ঙ) পায়খানা বন্ধ হয়ে যাওয়া, (চ) পেট ফেপে যাওয়া, (ছ) বমি হওয়া, (জ) রোগীর টাইফয়েড, গ্যাস্ট্রিক আলসার বা ব্যথানাশক ওষুধ আঘাত ইত্যাদির ইতিহাস থাকবে।
কিভাবে এই রোগ কনফার্ম হওয়া যায় : রোগীকে দাঁড়ানো অবস্থায় পেট ও বুকের এক্স-রে করলে উপরের পেটে ফ্রি গ্যাস দেখে এই রোগ কনফার্ম করা যাবে।
খাদ্যনালীর পারফোরেশন হলে করণীয় :
(১) অপারেশনই হচ্ছে এই রোগের চিকিৎসা। অপারেশনের মাধ্যমে খাদ্যনালীর ফুটা বন্ধ করতে হবে এবং পেটে জমে থাকা এসিড খাদ্য, পানি মল ওয়াশ করতে হবে (২) রোগীকে মুখে কিছু খাওয়ানো যাবে না, (৩) জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। (৪) নাক দিয়ে টিউব ঢুকিয়ে স্টমাক ওয়াশ করতে হবে। (৫) স্যালাইন, এন্টিবায়োটিক ও ব্যথানাশক ওষুধ দিতে হবে।
খাদ্যনালীর পারফোরেশন অপারেশন না করলে কী কী সমস্যা হতে পারে?
(১) খাদ্যনালীর ফুটা দিয়ে বের হয়ে আসা খাবার এনজাইম এসিড মল ইত্যাদি পেটে জমা হয়ে ইনফেকশন এবং এবসেস ইত্যাদি হতে পারে।
(২) এমনকি সেপটিক শকে রোগী মারাও যেতে পারে।
তাই এই রোগটি হলে জরুরি ভিত্তিতে অবশ্যই শৈল্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন।
লেখক : অধ্যাপক সার্জারি বিভাগ, চেম্বার সেন্ট্রাল হাসপাতাল, রোড নং- ২, গ্রিন রোড-৫, ধানমন্ডি, ঢাকা। ফোন : ০১৭১৫৩৩৩৭৩

 


আরো সংবাদ



premium cement