২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ঘুমের সমস্যা ও প্রতিকার

-

নিদ্রাহীন রাত নিয়ে যতই কাব্য, গান আর রোমান্স থাকুক না কেন, বাস্তব ক্ষেত্রে পরপর কয়েক দিন ‘আঁখিপাতে’ ঘুম না থাকলে আতঙ্ক হয়, শারীরিক, মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়তে হয়। নিজের ওপর আস্থা হারিয়ে যায়। তখন যেকোনোভাবে একটু ঘুমই শুধু কাম্য হয়ে ওঠে।
জীবনের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি সময় আমরা ঘুমাই। বয়স অনুযায়ী অবশ্য ঘুমের একটা স্বাভাবিক ছন্দ আছে। শিশুরা খুব বেশি ঘুমায়। বয়সের সাথে সাথে ঘুমের এই সময়সীমা কমে যায়। বৃদ্ধরা স্বাভাবিকভাবেই কম ঘুমান। আসলে শারীরবৃত্তীয় প্রয়োজনের ওপরই নির্ভর করে ঘুমের এই মাপ। তবে খুব কম বা খুব বেশি ঘুম কোনোটাই স্বাভাবিক নয়। চিকিৎসাশাস্ত্র মতে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের চার থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুম স্বাভাবিক এবং ছয় থেকে সাত ঘণ্টা হলো আদর্শ। দেখা গেছে, যারা ৯ ঘণ্টা বা তারও বেশি ঘুমান, তাদের মধ্যে বিভিন্ন অসুখের প্রবণতা বেশি। সুতরাং বয়স অনুপাতে ঠিক সময় ঘুমই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
ইনসোমনিয়া আসলে কী
ঘুম ও স্বপ্ন চিরকালই মনোবিজ্ঞানীদের কৌতূহলের বিষয়। বিজ্ঞানীদের মতে, ঘুমের মধ্যে দুই ধরনের দশা থাকে। একটিকে বলা হয় ‘আরইএস বা র্যাপিড আই মুভমেন্ট দশা’ আরেকটিকে বলা হয় ‘এনআরইএস বা নন-র্যাপিড আই মুভমেন্ট দশা’। এক ঘুমের মধ্যেই এই দু’টি দশা ঘুরেফিরে চলতে থাকে। আরইএস দশায় শরীরে গরম বেশি লাগে, পালস রেট ও রক্তচাপ বেড়ে যায় এবং এই দশাতেই মানুষ স্বপ্ন দেখে। এটিকে বলা হয় পাতলা ঘুমের স্তর। এনআরইএস দশায় মানুষ গভীরভাবে ঘুমায়।
ইনসোমনিয়াকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে ০১. ইনিশিয়াল বা প্রাথমিক ইনসোমনিয়া : যাদের ঘুম আসতে দেরি হয় বা অসুবিধা হয়। ০২. মিডল ইনসোমনিয়া : যাদের ঘুম বারবার ভেঙে যায় এবং ০৩. টারমিনাল ইনসোমনিয়া : যাদের ঘুম তাড়াতাড়ি ভেঙে যায়।
আর যাদের সব অসুবিধাই আছে, তাদের ক্ষেত্রে বলে গ্লোবাল ইনসোমনিয়া।
চিকিৎসা : ইনসোমনিয়া যে কারণে হয়েছে, তার চিকিৎসাই প্রথমে করা হয়। তা ছাড়া ইনসোমনিয়ার জন্য আলাদা করে কিছু বিশেষ ওষুধ দেয়া হয়। কোনো কোনো রোগী অবশ্য শুধু ইনসোমনিয়ার চিকিৎসাই করাতে চান, কিন্তু সে ক্ষেত্রেও রোগীর কেস হিস্ট্রি নিয়ে বিচার-বিবেচনা করতে হয়। ইনসোমনিয়ার রোগীর চেহারায় একটা অবসাদ, ক্লান্তিভাব আসে। অনেক সময় রোগী নিজেই ঘুমের ওষুধ নিয়ে থাকেন। এর ফলাফল ভয়াবহ হতে পারে। নিচের নিয়মগুলো মেনে চললে উপকার পেতে পারেন :
* বিছানা শুধু ঘুমের জন্যই নির্দিষ্ট করে রাখুন। বিছানায় বসে টিভি দেখা, আড্ডা দেয়া, খাবার খাওয়া বন্ধ করুন।
* খালি পেটে কখনো শুতে যাবেন না। তবে রাতে গুরুভোজ করবেন না। বেশি ভরা পেটে শুতে যাওয়াও ঠিক নয়। আবার খেয়েই সাথে সাথে শুয়ে পড়াও অনুচিত। খাওয়া ও শোয়ার মধ্যে সময়ের ব্যবধান রাখুন।
* শোয়ার আগে এক গ্লাস দুধ খেতে পারেন। দুধে থাকে ট্রিপটোফ্যান, যা আপনাকে ঘুমাতে সাহায্য করবে।
* নিয়মিত গোসল ও শুতে যাওয়ার আগে আরামবোধ করলে ঘাড়ে, মুখে ও পায়ে পানি দিয়ে মুছে নিতে পারেন।
* ঘুমাতে যাওয়ার সময় সারা দিনের ক্লান্তি, বিপর্যয় বা উত্তেজনার কারণগুলো নিয়ে চিন্তা করবেন না।
* খুব বেশি উত্তেজিত হয়ে বিছানায় যাবেন না।
* ঘুমের আগে কোনো ভারী কাজ বা অত্যধিক মাথার কাজ করা থেকে বিরত থাকুন।
* প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়ার চেষ্টা করুন।
* দুপুরের ঘুম আপনার শুধু কর্মক্ষমতাই কমায় না, আপনার রাতের ঘুমও নষ্ট করে। অতএব, এটি বাদ দিন।
* ঘুমাতে যাওয়ার আগে সিগারেট, তামাক, চা, কফি না খাওয়াই ভালো।
* দু-এক দিন ঘুম না হলেই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হবেন না। তবে নিয়মিত না হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
লেখিকা : অধ্যাপিকা, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ, ঢাকা।


আরো সংবাদ



premium cement
দুই বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে ফ্রান্স, ব্রাজিল ও প্যারাগুয়ে সফরে যাচ্ছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ড সফরকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক বললেন প্রধানমন্ত্রী লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশী যুবক নিহত এখনো শেষ হয়নি বিতর্কিত আউটের রেশ, ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ মুশফিকের ‘ফ্রি ভিসার গল্প’ আর শূন্য হাতে ফেরা লাখো শ্রমিক নোয়াখালীতে প্রবাসীর স্ত্রীর ব্যক্তিগত ছবি দেখিয়ে চাঁদা আদায় দেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে, অথচ বিরোধী দল দেখে না : কাদের আশুলিয়ায় বাঁশবাগান থেকে নারী পোশাক শ্রমিকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার মিয়ানমারের কর্মকর্তারা ফেরত গেলেন, কিন্তু রোহিঙ্গা সঙ্কট কি আরো জটিল হচ্ছে দিনাজপুরে দুই ট্রাকের সংঘর্ষ, চালক-হেলপার নিহত

সকল