ভারতের কেরালা, পাঞ্জাব ও রাজস্থানের পর এবার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) বিরোধী প্রস্তাব পাস করল পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা। এ নিয়ে চারটি রাজ্যে এ প্রস্তাব পাস হলো। এরপর তেলেঙ্গানাও এ প্রস্তাব পাস করাতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও। তিনি গতকাল বলেছেন, তার রাজ্যেও এই সিএএ প্রত্যাহারবিষয়ক প্রস্তাব এনে তা পাস করানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এনডিটিভি ও টাইমস অব ইন্ডিয়া।
গতকাল সোমবার পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় সিএএ বিরোধী প্রস্তাব পেশ করেন পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। প্রস্তাবে বলা হয়, ধর্মের ভিত্তিতে এ আইন তৈরি হয়েছে। সে কারণে এর বিরোধিতা করা হচ্ছে। বাম ও কংগ্রেস পার্টি আগেই জানিয়েছিল, তারা সিএএ বিরোধী প্রস্তাব সমর্থন করবে। শেষে তাদের সমর্থনেই প্রস্তাব পাস হয়।
প্রস্তাব পেশ করার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার ভাষণে বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল যখন চাইছে সিএএ প্রত্যাহার সংক্রান্ত প্রস্তাব প্রত্যাহার করতে, তখন আমাদের সবার এক হয়ে এই প্রস্তাব পাস করা উচিত। আমরা চাইছি এই বাংলায় সিএএ কার্যকর করতে দেয়া হবে না।’ মমতা এ কথাও বলেন, গায়ের জোরে দেশে আইন করা যায় না। সংবিধানকে ব্যবহার করে এভাবে বিদ্বেষ ছড়ানো যায় না। পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিধায়কদের কাছে প্রস্তাব পেশ করে এটি পাস করার অনুরোধ জানান। দীর্ঘদিন ধরে সিএএ বিরোধী আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন মমতা। সিএএ নিয়ে তার আপত্তির কথা সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও জানিয়েছিলেন তিনি। সিএএ কিছুতেই প্রত্যাহার করা হবে না বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ হুঁশিয়ারি দেয়ার পরই তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা প্রস্তাবটি পাসে বদ্ধপরিকর হন।
সোমবার রাজ্য বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেছেন, ‘আমাদের রাজ্যে সিএএ, জাতীয় নাগরিকপঞ্জী (এনআরসি) আর জাতীয় জনসংখ্যাপঞ্জী (এনপিআর) করার অনুমতি দেবো না। মানুষ আতঙ্কে আছেন। সব ধরনের নথির জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে হয়রান হচ্ছেন। এ লড়াই শুধু সংখ্যালঘুদের না। আমার হিন্দু ভাইবোনদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ, ওরা সামনে থেকে এ লড়াইটা লড়ছেন।’
শান্তিপূর্ণভাবেই আন্দোলন জারি রাখা হবে বলে জানিয়েছেন মমতা। তা ছাড়া নাগরিকদের সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘সিএএ অনুযায়ী মানুষ বিদেশী হিসেবে চিহ্নিত হবেন। এটি ভয়ঙ্কর খেলা। তাই ওদের (বিজেপি) ফাঁদে পা দেবেন না।’
ভারত সরকার গত বছর ডিসেম্বরে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) করার পর দেশজুড়ে বিক্ষোভ-সংঘর্ষের আগুন জ্বলে উঠেছে। বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে গিয়ে ভারতে শরণার্থী হওয়া অমুসলিমদের নাগরিকত্ব দেয়ার লক্ষ্যে করা হয়েছে সিএএ। হিন্দু, খ্রিষ্টান, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ ও পার্সি সম্প্রদায়ের শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেয়ার কথা বলা আছে এ আইনে। তবে মুসলিমরা এতে না থাকায় আইনটি সাম্প্রদায়িক বলে তীব্র সমালোচনা হয়ে আসছে। ভারতজুড়ে সিএএর পাশাপাশি এনআরসি নিয়ে এখনো আন্দোলন তুঙ্গে। বিভিন্ন রাজ্য এ আইন কার্যকর না করার ঘোষণা দিচ্ছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা