২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ঢাকাসহ সারা দেশে বিক্ষোভ প্রধানমন্ত্রী নিজ ঘরের দিকে তাকান না রিজভী

খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে ভাটারা ও রামপুরা থানা বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল হনয়া দিগন্ত -

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ করে দেয়ার প্রতিবাদ এবং অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে ঢাকাসহ সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল রোববার বেলা ১১টায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির উদ্যোগে বাড্ডার সুবাস্তু নজরভ্যালি টাওয়ারের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। এতে নেতৃত্ব দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। মিছিলটি ফুজি টাওয়ারের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পুলিশ এ সময় ধাওয়া দিয়ে চারজনকে গ্রেফতার করেছে। মিছিলে মহানগর উত্তর বিএনপির আহসানুল্লাহ হাসান, এ জি এম শামসুল হক, এ বি এম আবদুর রাজ্জাক, তাজুল ইসলাম, আব্দুল কাদের বাবু, নূরুল ইসলাম কাজী, তুহিন, সাজ্জাদ হোসেন রুবেল, হারুনুর রশিদসহ তিন শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। মিছিলে নেতাকর্মীরা অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। পরে সংক্ষিপ্ত পথসভায় রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে জড়িয়ে মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। গত শনিবার এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ কথা বলেন।
প্রসঙ্গত, শনিবার এক সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সাথে জিয়াউর রহমানের জড়িত থাকার অভিযোগ পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, ‘খন্দকার মোশতাকের সবচেয়ে বিশ্বস্ত লোক ছিলেন জিয়া। যদি বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সাথে জিয়া জড়িত না-ই থাকবেন, তবে খন্দকার মোশতাক তাকে কেন সেনাপ্রধান বানিয়েছিলেন?’ প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ১৯৭০ সালে মেজর পদে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে আসেন কে এম শফিউল্লাহ। ১৯৭২ সালের ৫ এপ্রিল মরহুম শেখ মুজিবুর রহমান তাকে ডেকে সেনাপ্রধানের দায়িত্ব নিতে বলেন, তখন দেশের সামরিক বাহিনীর প্রধান অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন এম এ জি ওসমানী। শফিউল্লাহর পদবি তখন লেফটেন্যান্ট কর্নেল ছিল (যুদ্ধের সময় পদোন্নতিপ্রাপ্ত)। তিনি সেনাপ্রধান হতে অনিচ্ছা প্রকাশ করলেও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তাকে সেনাপ্রধানের দায়িত্ব নিতে হয় এবং পদোন্নতি দেয়া হয়। অথচ জিয়াউর রহমান ছিলেন সে সময়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। ১৯৭৩ সালের মাঝামাঝি ব্রিগেডিয়ার এবং একই বছরের ১০ অক্টোবর তিনি মেজর জেনারেল পদবি লাভ করেন, তার সাথে জিয়াউর রহমানও পদোন্নতি পেয়ে উপ-সেনাপ্রধান হন। যারা সরকারি চাকরি করেন তারা তো পদোন্নতি পাবেন এটা স্বাভাবিক। সেটা যখন যে সরকারই ক্ষমতায় থাকুক না কেন। সুতরাং জিয়া কারো বদান্যতায় নন নিজের যোগ্যতা বলেই সেনাবাহিনীর প্রধান হয়েছিলেন।
রিজভী বলেন, ১৯৭৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত সফিউল্লাহ সেনাপ্রধানের দায়িত্ব পালনকালেই তো শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। ১৯৭৬ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত ১৬ বছর কেএম শফিউল্লাহ মালয়েশিয়া, কানাডা, সুইডেন আর ইংল্যান্ডে বাংলাদেশের নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৯৫ সালে আওয়ামী লীগে যোগদান করে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য হন। কই প্রধানমন্ত্রী তো সে বিষয়ে কিছু বলেননি। তিনি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সম্পর্কে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। জনগণের মাঝে তার জনপ্রিয়তা অত্যন্ত উঁচুমানের। বিভ্রান্তি ছড়িয়ে কোনো লাভ হবে না।
রিজভী বলেন, মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানের সপরিবারে হত্যাকাণ্ডের পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগেরই বহু নেতা তাদের আত্মতৃপ্তির কথা বলেছিলেন। তাদেরই একজন আব্দুল মালেক উকিল লন্ডনে থাকাবস্থায় বলেছিলেন যে, ‘ফেরাউনের পতন হোক’। এমনকি খন্দকার মোশতাকের শপথ বাক্য পাঠ করান তৎকালীন মন্ত্রিপরিষদ সচিব এইচ টি ইমাম। আজকে যিনি প্রধানমন্ত্রীর অন্যতম সিনিয়র উপদেষ্টা। কই প্রধানমন্ত্রী তো সে বিষয়ে কিছু বলেননি। আজকে নিজের ঘরের দিকে তাকান না প্রধানমন্ত্রী।
দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার কার্যালয়ে সন্ত্রাসী হামলা ও সম্পাদককে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে রিজভী বলেন, আজকে দেশে গণতন্ত্র নেই। গণমাধ্যমের মত প্রকাশ ও মানুষের বাক স্বাধীনতা কেড়ে নেয়া হয়েছে। রাজনীতিতে ভিন্ন মত থাকবে এটা স্বাভাবিক। কারো সাথে কারো মতের অমিল হতেই পারে। তাই বলে দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার কার্যালয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা ফ্যাসিবাদী শাসনের বহিঃপ্রকাশ বলে মনে হয়।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণে বিক্ষোভ : এ দিকে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির বেশ কয়েকটি থানায় বিক্ষোভ মিছিল হয়। এ সময় বিভিন্ন স্থানে পুলিশি হামলায় ১০ জনের বেশি নেতাকর্মী আহত হন। কদমতলী থানা বিএনপির সভাপতি মীর হোসেন মীরুর নেতৃত্বে মিছিলে অংশগ্রহণ করেন মো: জুম্মন মিয়া চেয়ারম্যান, মো: সেলিম রেজা, আলমগীর খান লিপু, তরিকুল ইসলাম পলাশ, আনোয়ার হোসেন স্বপন, মাহাবুব আলম, মো: নাসির মাহমুদ, মো: মুজাহিদ মিয়া প্রমুখ। মিছিলটি জুরাইন রেলগেট হইতে খন্দকার রোড মুন্সিবাড়ি এসে শেষ হয়। সূত্রাপুর ও ওয়ারী থানার বিক্ষোভ মিছিলে মো: আজিজুল ইসলাম আজিজের নেতৃত্বে গোপীবাগ ব্রাদার্স ক্লাবের সামনে থেকে সেন্ট্রাল ওমেন্স কলেজের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় মাহাফুজুর রহমান মনা, মো: আমির হোসেন, জামান মল্লিক প্রমুখ অংশ নেন। কামরাঙ্গীরচর থানার বিক্ষোভ মিছিলে হাজী মো: মনির হোসেন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে মুসলিমবাগ থেকে শুরু হয়ে ছাতা মসজিদ এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে আওলাদ হোসেন, পারভেজ মিয়া, জাহাঙ্গীর আলী প্রমুখ নেতা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া লালবাগ, চকবাজার, শাহজাহানপুর, মুগদা, কলাবাগান, ধানমন্ডি, হাজারীবাগ, সবুজবাগ, নিউমার্কেট, শাহবাগ, রমনা, মতিঝিল, পল্টন, খিলগাঁও, ডেমরা, যাত্রাবাড়ী গেন্ডারিয়া থানা এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে।
খুলনা ব্যুরো জানায়, নগরীর কে ডি ঘোষ রোডে দলীয় কার্যালয়ের সামনে কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির যৌথ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও নগর সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু। সমাবেশে বক্তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে যারা পাকিস্তান সরকারের চাকরি করেছেন, তাদের নিরাপত্তায় অফিস আদালতে আসা যাওয়া করেছেন, বেতন-ভাতা নিয়েছেন, আর্মি কর্ডনে সন্তান জন্ম দিয়েছেন। তাদের মুখ থেকে রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা, স্বাধীনতার মহান ঘোষক, আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সম্পর্কে কোনো কটূক্তি মানায় না। সরকারকে উদ্দেশ করে বক্তারা বলেন, অনন্তকাল বাংলার মসনদ দখল করে রাখা যাবে না। পতন তোমাদের হবেই। সে পতন না হওয়া পর্যন্ত বিএনপির একজন নেতাকর্মীও ঘরে ফিরে যাবে না।
আসাদুজ্জামান মুরাদ ও ওহেদুজ্জামান রানার পরিচালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন অ্যাডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনা, সাহারুজ্জামান মোর্তজা, আমীর এজাজ খান, অধ্যাপক ডা: গাজী আব্দুল হক, মীর কায়সেদ আলী, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম প্রমুখ।
ঝিনাইদহ সংবাদদাতা জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ঝিনাইদহে পুলিশের বাধায় বিক্ষোভ মিছিল করতে পারেনি বিএনপি। দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল সকালে শহরের এইচ এস এস সড়কের জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন বিএনপির নেতাকর্মীরা। সেখান থেকে ব্যানার নিয়ে মিছিল বের করতে চাইতে তাতে বাধা দেয় পুলিশ। একপর্যায়ে পুলিশের সাথে বাদানুবাদ শুরু হয়। পরে সেখানে দাঁড়িয়েই স্লোগান দিতে থাকে বিএনপি নেতাকর্মীরা। পরে বিএনপি কার্যালয়ে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এস এম মশিয়ুর রহমান, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট এম এ মজিদ, যুগ্ম-আহ্বায়ক আক্তারুজ্জামান, জাহিদুজ্জামান মনা, কামাল আজাদ পাননু, আব্দুল মজিদ বিশ্বাস প্রমুখ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।
নীলফামারী সংবাদদাতা জানান, নীলফামারীতে গতকাল দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে জেলা বিএনপি বিক্ষোভ মিছিল বের করতে চাইলে বাধা দেয় পুলিশ। পরে বিক্ষোভ সমাবেশ করে দলটি। সমাবেশে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির আহবায়ক আলমগীর সরকার, সদস্য সচিব জহুরুল আলম, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আখতারুজ্জামান জুয়েল প্রমুখ।
নোয়াখালী সংবাদদাতা জানান, নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদী প্রেস ক্লাব চত্বরে গতকাল দুপুরে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বিএনপি। জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম হায়দর বিএসসির সভাপতিত্বে এবং শাহ জাফর উল্যা রাসেল ও ভিপি জসিমের সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান মো: শাহজাহান, বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান। আরো বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা আবু নাসের, জি এস দুলাল, ওমর ফারুক, যুবদল নেতা নুরুল আমিন খান, সাবের আহমেদ, ছাত্রদল নেতা আজগর উদ্দিন দুখু, আবু হাসান নোমান প্রমুখ।
পিরোজপুর সংবাদদাতা জানান, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দিলে সরকার উৎখাতের জন্য প্রস্তুত থাকার প্রত্যয় নিয়ে পিরোজপুরে জেলা বিএনপি গতকাল সকালে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। দলীয় কার্যালয়ের সামনের এই সমাবেশে জেলা সভাপতি গাজী নূরুজ্জামান বাবুল, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আকন প্রমুখ বক্তব্য দেন। বক্তারা খালেদা জিয়াকে অসুস্থ রাখতেই সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন।
হবিগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, হবিগঞ্জে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সমবায়বিষয়ক সম্পাদক জি কে গউছ বলেছেন, পৃথিবীর কোনো স্বৈরশাসক ঠিকতে পারেনি, আওয়ামী লীগও পারবে না। পুলিশ প্রশাসন আওয়ামী লীগের পতন ঠেকাতে পারবে না। সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন মিজানুর রহমান চৌধুরী, গোলাম মোস্তফা রফিক, অ্যাডভোকেট এস এম বজলুর রহমান, আজিজুর রহমান কাজল, জালাল আহমেদ, ফারুক আহমেদ, জহিরুল হক শরীফ, মিজানুর রহমান চৌধুরী, অ্যাডভোকেট ফাতেমা ইয়াসমিন, এমদাদুল হক ইমরান প্রমুখ।
মুন্সীগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, গতকাল মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মুক্তারপুরে মুন্সীগঞ্জ জেলা বিএনপির আয়োজনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি আব্দুল হাই। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, মুন্সীগঞ্জ সদর থানা বিএনপির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন মুন্সীগঞ্জ শহর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র এরাদত হোসেন মানু, গজারিয়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান, সাবেক ভিপি মাসুম ও শাহিন, জেলা যুবদল সভাপতি সুলতান আহমদ প্রমুখ।
নওগাঁ সংবাদদাতা জানান, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছে নওগাঁ জেলা বিএনপি। গতকাল দুপুরে শহরের বিভিন্ন এলাকায় মিছিল শেষে কেডির মোড়ের দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ হয়। জেলা বিএনপির আহবায়ক হাফিজ উদ্দীন মাস্টারের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন যুগ্ম আহবায়ক অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম, পৌর মেয়র ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নজমুল হক সনি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ধলু প্রমুখ।
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান বলেছেন, বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে তার ন্যায়সঙ্গত অধিকার জামিন থেকেই বঞ্চিত করছে না বরং শারীরিকভাবে ভীষণ অসুস্থ একজন বয়স্কা নারীকে সুচিকিৎসা থেকেও বঞ্চিত করছে। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির উদ্যোগে এক বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। গতকাল এ বিক্ষোভ সমাবেশ নগরীর দোস্ত বিল্ডিং দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোস্তাক আহমদ খানের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আব্বাস, সদস্য এনামুল হক এনাম, ইদ্রিস মিয়া, অ্যাডভোকেট ইফতেখার হোসেন চৌধুরী, এম এ রহিম, মোশাররফ হোসেন, মন্জুর উদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ।
পটুয়াখালী সংবাদদাতা জানান, গতকাল সকালে পটুয়াখালীর শেরেবাংলা সড়ক বটতলা মোড় থেকে জেলা বিএনপির উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করলে পুলিশের বাধায় সেখানেই বিএনপির নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ সমাবেশ করে। সমাবেশে খালেদা জিয়া নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়ে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট ওয়াহিদ সরোয়ার কালাম।
নেত্রকোনা সংবাদদাতা জানান, গতকাল সকালে নেত্রকোনা শহরের ছোটবাজার দলীয় কার্যালয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করে বিএনপি। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা: আনোয়ারুল হকের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান দুদু, যুগ্ম আহ্বায়ক মজিবুর রহমান খান, তাজেজুল ইসলাম ফারাস সুজাত, আব্দুল ওয়াহাব ভূঁইয়া, সালাহ উদ্দিন খান মিল্কী, আজিজুল হক, ফরিদ আহমেদ বাবু প্রমুখ।
ময়মনসিংহ অফিস জানায়, গতকাল দুপুরে ময়মনসিংহ শহরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে মহানগর ও উত্তর জেলা বিএনপি। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক এ কে এম শফিকুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ওয়াহাব আকন্দ, অধ্যাপক শেখ আমজাদ আলী, কাজী রানা, অ্যাডভোকেট এম এ হান্নান খান, কায়কোবাদ মামুন, এ কে এম মাহবুবুল আলম প্রমুখ। বক্তারা অবিলম্বে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানান। একই দাবিতে ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপি নগরীর মিন্টু কলেজ রেল ক্রসিংয়ের সামনে থেকে মিছিলসহকারে প্রেস ক্লাবের সামনে এসে সমাবেশ করে। এতে বক্তব্য রাখেন উত্তর জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার, আবুল বাশার আকন্দ, উত্তর জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান লিটন প্রমুখ।
ফরিদপুর সংবাদদাতা জানান, ফরিদপুরে গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা ও পৌর বিএনপির উদ্যোগে শহরের গোলপুকুর ড্রিম মার্কেটের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য দেন শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা মিরাজ, মহানগর যুবদলের সভাপতি বেনজীর আহমেদ, জেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক একে কিবরিয়া স্বপন প্রমুখ। সমাবেশ শেষে বেলা পৌন ১১টার দিকে মিছিল সহকারে নেতাকর্মীরা ভাঙ্গা রাস্তার মোড়ের দিকে যাওয়ার পথে আলীপুর গোরস্থানের নিকট বাধা দেয় পুলিশ। এ সময় পুলিশের সাথে মিছিলকারীদের হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে পুলিশের বাধার মুখে মিছিলটি আর এগোতে পারেনি। একই সময়ে শহরের কোর্ট চত্বর এলাকায় আদালত চত্বরে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য দেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক জুলফিকার হোসেন জুয়েল, দেলোয়ার হোসেন দিলা, আশরাফ হোসেন প্রমুখ।
কুষ্টিয়া সংবাদদাতা জানান, বেলা ১১টায় কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী। বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন। শামিউল উল হাসান অপুর পরিচালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন মহাসিন রেজা, আব্দুল আজিজ খান, তৌহিদুল ইসলাম আলম প্রমুখ। মেহেদী রুমী বলেন, খালেদা জিয়াকে মামলার কারণে নয়, গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনের কারণেই কারাগারে রাখা হয়েছে।
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু বলেছেন, বর্তমান সরকার দেশের মানুষকে উন্মুক্ত কারাগারে রেখেছে। নিত্যপণ্যের আকাশচুম্বী মূল্য বৃদ্ধি করে মানুষকে বিপদে ফেলেছে। মায়েরা তাদের সন্তানদের মুখে দু-বেলা দু-মুঠো ভাত তুলে দিতে না পেরে আত্মহত্যা করছেন। পদ্মা সেতু আট হাজার কোটি টাকায় করার কথা থাকলেও এখন সেটা দাঁড়িয়েছে ৪৮ হাজার কোটি টাকায়। দুর্নীতির মহোৎসব চলছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে গতকাল দুপুরে নগরীর মালোপাড়ার বিএনপি কার্যালয়ের সামনে রাজশাহী মহানগর ও জেলা বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক, রাজশাহী মহানগর সভাপতি ও সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। বিশেষ অতিথি ছিলেন, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন, জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সাঈদ চাঁদ, সহিদুন্নাহার কাজি হেনা ও বিশ্বনাথ সরকার।
নারায়ণগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, গতকাল দুপুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাব সংলগ্ন গলিতে বিএনপি নেতাকর্মীরা সমবেত হতে থাকলে পুলিশ বাধা দেয়। এক পর্যায়ে পুলিশ বিএনপির ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে। পুলিশের বাধায় টিকতে না পেরে পরে স্লোগান দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা স্থান ত্যাগ করেন। তবে সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জয়নাল আবেদীন বলেন, বিএনপির কর্মসূচিতে পুলিশ তো তেমন কিছু করেনি। তারা এসেছে আবার চলে গেছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement