২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

যত চাপই থাকুক আইন বাস্তবায়ন হবে : কাদের

-

নতুন সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়ন নিয়ে বাড়াবাড়ি না করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নতুন আইনে জরিমানা আদায় করা মুখ্য উদ্দেশ্য নয়, সরকার চায় সবাই আইন মেনে চলুক। নতুন সড়ক পরিবহন আইনের মাধ্যমে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাই প্রধান লক্ষ্য।
গতকাল সোমবার সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে সচিবালয়ে নিজ দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় আন্দোলন ও ধর্মঘটের চিন্তা ছেড়ে আইন মেনে গাড়ি চালাতে পরিবহন মালিক, চালক ও শ্রমিকদের প্রতিও আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যত চাপই থাকুক না কেন আইন বাস্তবায়ন হবেই।
সেতুমন্ত্রী বলেন, এই সড়ক পরিবহন আইনে নতুন কিছু বিষয় যুক্ত করা হয়েছে, যা বাংলাদেশের এ-সংক্রান্ত আইনে আগে ছিল না। এরই মধ্যে বিশ্বের উন্নত দেশের মতো চালকদের জন্য পয়েন্ট পদ্ধতি রাখা হয়েছে। অপরাধ করলেই পয়েন্ট কাটা যাবে। আবার এবারই প্রথম পরিবহন মালিকদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। দুর্ঘটনার শিকার পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেয়ার বিধান যুক্ত হয়েছে। ট্রাফিক ওজন সীমা নির্ধারণের পাশাপাশি পরিবেশ দূষণের বিষয়টি সম্পৃক্ত করা হয়েছে। দূরপাল্লার গাড়িচালকদের গাড়ি চালানোর সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুন সড়ক আইনকে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আইনটি কার্যকরে অনেকেই আরো বেশি সময় চেয়েছিলেন, কিন্তু আমি তাতে রাজি হইনি। প্রধানমন্ত্রীও আইনটির বাস্তবায়ন চান। তাই আইনটি কার্যকর করতে শুরু করেছি। সবাই সহযোগিতা করলে আমরা এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারব।
তিনি বলেন, প্রথমে আইনটি সহনীয় পর্যায়ে কার্যকর করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেও এ আইনে শাস্তি দেয়া যাবেÑ এ বিষয়ে একটি গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। আইনটির বিধিমালা প্রণয়নের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিশেষ করে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এ আইনটির বিষয়ে জনগণকে সচেতন করে তোলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আইন প্রয়োগকারী যাতে এটি কার্যকরে অযথা কোনো হয়রানি বা বাড়াবাড়ি না করে, সে জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করেছি।
তিনি বলেন, সড়ক নিরাপদ ও দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে শুধু সরকারি উদ্যোগই যথেষ্ট নয়। সমাজের বিভিন্ন অংশীজনকে এ ক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে বিএনপির দেয়া চিঠি প্রসঙ্গে কাদের বলেন, বিএনপির নেতৃত্বে অনেক বিজ্ঞ-অভিজ্ঞ ব্যক্তি আছেন। আমি অবাক হয়ে যাই যে এমওইউ (সমঝোতা স্মারক) ও চুক্তির মধ্যে কী পার্থক্য তারা এটা বোঝে না কেন? নাকি এটি জেনেও না জানার ভান করছেন। আসলে এখানে কোনো চুক্তি হয়নি। এমওইউ হয়েছে চারটি আর তিনটি ওপেনিং। আর এখানে গোপন কিছু নেই, সবই প্রকাশ্য। শুদ্ধি অভিযান থমকে গেছে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, শুদ্ধি অভিযান যে থামেনি প্রধানমন্ত্রী পার্লামেন্টে বলে দিয়েছেন। উনি বলেছেন, উপজেলা পর্যায়ে পর্যন্ত শুদ্ধি অভিযান চলতে থাকবে।
বিভিন্ন অপকর্ম করে দল থেকে বহিষ্কৃত অনেকেই দেশে ফিরছেন এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কাদের বলেন, আমার মনে হয় না সে রকম সুযোগ আছে। কেননা পুলিশের নজরদারি আছে, নিশ্চয় তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। সে রকম কিছু হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। এখানে কারো ব্যাপারে কোনো প্রকার শৈথিল্য প্রদর্শনের সুযোগ নেই। টার্গেট অ্যাচিভ করার জন্য যত রকমের সেক্রিফাইস প্রয়োজন আমরা করব। এখানে প্রধানমন্ত্রী তার তো রেহাই দেননি, এটি তো আপনাদের বুঝতে হবে।
ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান নাঈমের বিয়ের অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে গুলি ছোড়ার বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, যে কয়েকজন কাউন্সিলরের মধ্যে শুদ্ধি অভিযানে মিডিয়ায় রিপোর্ট এসেছে, এর মধ্যে তার নামটি নেই। কোনো প্রকার দুর্নীতি বা অপকর্মের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে আসেনি। বিয়ের অনুষ্ঠানে কবে কী একটা কী করছে সেটি এখন আসছে, তার পরও আমি বিষয়টা খতিয়ে দেখব।
শুদ্ধি অভিযানের কারণে ব্যবসায়ীরা বিশাল অঙ্কের টাকা উঠিয়ে নিয়েছেÑ এ সম্পর্কে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রমাণ দিন কোথায় কোথায় টাকা উঠিয়ে নিয়েছে, আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।


আরো সংবাদ



premium cement