২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

৩২ কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়ে কাফকো থেকে ৭০ কোটি টাকার সার কিনছে সরকার

-

চলতি অর্থবছরের জন্য কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেডের (কাফকো) কাছ থেকে ৭০ কোটি টাকার সার কিনছে সরকার। প্রাথমিকভাবে কোম্পানিটির কাছ থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্রানুলা ইউরিয়া সার ক্রয় করা হবে। এতে প্রতি টন সারের ক্রয়মূল্য দাঁড়াবে ৩০ হাজার টাকা। এ সার সরকার বিক্রি করবে প্রতি টন ১৬ হাজার টাকায়। এতে ৭০ কোটি টাকার সার কিনে সরকারকে গচ্চা দিতে হবে সাড়ে ৩২ কোটি টাকা। সরকারি সার কারখানায় ইউরিয়া উৎপাদনে প্রতি টনে খরচ পড়ে ২১ হাজার টাকা। কাফকোকে ভর্তুকি দানে গ্যাস সরবরাহ করা হলেও এর উৎপাদিত সার কিনতে হয় আন্তর্জাতিক দামে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সচিবালয়ে আজ সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত একটি ক্রয় প্রস্তাব উপস্থাপন করা হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এ সংক্রান্ত একটি সার-সংক্ষেপে বলা হয়েছে, গত ২৮ মার্চ অনুষ্ঠিত ‘সারবিষয়ক জাতীয় সমন্বয় ও পরামর্শক কমিটির’ বৈঠকে ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য ইউরিয়া সারের চাহিদা ২৬ দশমিক ৫০ লাখ টন এবং বছরান্তে সমাপনী মজুদ ৮ লাখ টনসহ মোট ৩৪ দশমিক ৫০ লাখ টন নির্ধারণ করা হয়। কৃষি মন্ত্রণালয়ের চাহিদা অনুযায়ী ২০১৯-২০ অর্থবছরে ইউরিয়া সার সংগ্রহ পরিকল্পনা শিল্প মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে গত ৯ জুন। এ পরিকল্পনায় কাফকো, বাংলাদেশ থেকে ৫ দশমিক ৫০ লাখ টন ইউরিয়া সার ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
সূত্র জানায়, কাফকো থেকে ইউরিয়া সার ক্রয়ের ক্ষেত্রে ফ্রেইটের প্রয়োজন হয় না। এ ক্ষেত্রে বিসিআইসি তথা সরকারের অর্থ সাশ্রয় হয়ে থাকে। কাফকোর সাথে বিসিআইসির ২০০২ সাল সম্পাদিত চুক্তি এবং ২০০৫ সালের সংশোধিত চুক্তির ধারাবাহিকতায় ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম লটে ৩০ হাজার টন ব্যাগড গ্রানুলার ইউরিয়া সার ক্রয়ের জন্য বিসিআইসি প্রস্তাব করেছে।
কাফকোর সাথে সম্পাদিত চুক্তির আওতায় বিসিআইসি কর্তৃক মূল্য নির্ধারণ ফর্মুলা (আন্তর্জাতিক দরের ভিত্তিতে) অনুযায়ী কাফকোকে প্রথম লটের ইউরিয়ার দর প্রস্তাব পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হয়। কাফকো নির্ধারিত তারিখে প্রথম লটের ৩০ হাজার টন ব্যাগড গ্রানুলার ইউরিয়ার দর প্রস্তাব পাঠায় চুক্তি অনুযায়ী প্রস্তাব দাখিলের পূর্ববর্তী সপ্তাহে এফএমবি ইন্টারন্যাশনাল প্রাইস গাইড, ফার্টিকন নাইট্রোজেন রিপোর্ট, দি মার্কেট ও দি প্রোফারসি রিপোর্টে প্রকাশিত এরাবিয়ান গালফ/মিডল ইস্টের গড় দর বিবেচনায় সারের দাম নির্ধারণ করার বিধান রয়েছে। সে অনুযায়ী বিবেচ্য প্রথম লটের দরের ক্ষেত্রে গত ২৭ জুন প্রকাশিত বুলেটিনের এফওবি দর প্রযোজ্য হবে বলে জানা গেছে।
গত ২৭ জুন তারিখে এফএমবি ইন্টারন্যাশনাল প্রাইস গাইডে প্রতি টন সারের প্রকাশিত দাম ছিল ২৪৩ দশমিক ২৯০ ডলার আর গড় দাম ছিল ২৬৬ দশমিক ৫০ ডলার। ফার্টিকান নাইট্রোজেন রিপোর্টে প্রকাশিত দরও ছিল ২৩৫ দশমিক ২৯০ ডলার আর গড় দাম ছিল ২৬২ দশমিক ৫০ ডলার। দি মার্কেটে প্রকাশিত দর ছিল ২৮৭ দশমিক ২৯০ ডলার আর গড় দাম ছিল ২৮৮ দশমিক ৫০ ডলার। দি প্রোফারসি রিপোর্টে প্রকাশিত দর ছিল ২৪৮ দশমিক ২৯০ ডলার আর গড় দাম ছিল ২৬৯ ডলার। অর্থাৎ প্রতি টন ব্যাগড গ্রানুলার ইউরিয়া সারের গড় দাম ছিল ২৭১ দশমিক ৬২৫ ডলার।
চুক্তি অনুযায়ী গড় দামের সাথে প্রতি টনের ব্যাগিং চার্জ বাবদ যোগ হবে ৫ ডলার। সে হিসাবে এফওবি (কাফকো ব্যাগিং হাউজ) ভিত্তিতে প্রতি টন গ্রানুলার ইউরিয়া সারের দাম পড়বে ২৭৬ দশমিক ৬২৫ ডলার। সে হিসাবে ৩০ হাজার টন সার ক্রয়ে সরকারের ব্যয় হবে ৮২ লাখ ৯৮ হাজার ৭৫০ ডলার অর্থাৎ বাংলাদেশী টাকায় ৭০ কোটি ১২ লাখ ৪৪ হাজার ৩৭৫ টাকা।


আরো সংবাদ



premium cement