১৮ মে ২০২৪, ০৪ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫
`


নব প্রেরণায় উদ্যমী বাংলাদেশ

অনুশীলনে নামছেন সাকিব আল হাসান। তার পেছনে মুশফিকুর রহীম : এএফপি -

বাংলাদেশ ক্রিকেট দল বিশ্রামে ছিল। একেবারে চার দিন। ঘুরে বেড়িয়েছে। মানসিক প্রশান্তি অর্জন করেছে। নতুন উদ্যোমে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য শেষ প্রস্তুতি সেরে ফেলেছে। সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্নকে পুঁজি করে টাইগাররা আজ আবার মাঠে নামছে। এবার তাদের সামনে বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম পরাশক্তি টিম ইন্ডিয়া।
কী করতে হবে এই ম্যাচে বাংলাদেশকে তা দলের প্রতিটি ক্রিকেটারই জানেন এবং বোঝেন। বার্মিংহামে উত্তেজনাকর এই ম্যাচে জয়ী হয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য জীবন বাজি রাখতে হবে। পিচের সাথে সখ্যতা গড়ে রান তুলতে হবে। স্কোরবোর্ডে বড়সড় ফিগার না বসালে ভারতের সাথে পেরে ওঠা যাবে না সেটা জেনে গেছে মাশরাফি বাহিনী। ভারতের সাথে ওয়ান ডে ম্যাচে লড়াইয়ে বাংলাদেশ অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে। কিন্তু বিশ্বকাপের মতো বৃহৎ আসরে নতুন কিছু ঘটে যেতে পারে। কারণ দিনটা যাদের হবে তারাই তো শেষ হাসি হেসে বীরের মতো মাঠ ছাড়বে। কারণ ক্রিকেটযুদ্ধে কেউই অজেয় নয়। যেমন ভারত। তারা এবারের বিশ্বকাপে উড়ন্ত সূচনা করেছিল। কিন্তু সপ্তম ম্যাচে এসে মুখ থুবড়ে পড়ে গেল। রোববার হেরে গেল স্বাগতিক ইংল্যান্ডের কাছে। নতুন ইতিহাস গড়ার জন্য কোহলি বাহিনী তাদের সেরাটা মেলে ধরার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পেরে ওঠেনি। পরাজিত হয়েছে ৩১ রানে। এই হারের ফলে তারা ১১ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও জমে গেছে বিশ্বকাপ। আর স্বাগতিক ইংল্যান্ড জয়ী হয়ে সেমিফাইনালে খেলার আশাকে জিইয়ে রেখেছে।
উজ্জীবিত বাংলাদেশ নতুন ছন্দে কারিশমার ঢেউ তুলবে মাঠে। তবে ভারত খুব শক্তিশালী দল। তাদের লম্বা ব্যাটিং লাইন আপে দুই নিউক্লিয়াস হলেন অধিনায়ক বিরাট কোহলি এবং রোহিত শর্মা। এই দুইজনকে ইনিংসের শুরুর দিকে আউট করতে পারলে মেন ইন ব্লুদের চাপে ফেলতে পারা যাবে। বার্মিংহাম যে স্পিনারদের জয়গান রচনা করেনি তা তো ইংল্যান্ড-ভারত ম্যাচেই প্রমাণিত হয়ে গেছে। কারণ ভারতের দুই স্পিনার চাহাল ৮৮ এবং কুলদীপ ৭২ রান দিয়েছেন। ফলে পেস ব্যাটারিকেই প্রধান অস্ত্র হিসেবে ধরে টাইগাররা তাদের আক্রমণ সাজাবে। কারণ, এ পর্যন্ত বাংলাদেশী পেসাররা শুধুই দুঃশ্চিন্তাই উপহার দিয়েছেন। কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমান এবং সাইফুদ্দিন কিছুটা আলোচনায় থাকলেও অধিনায়ক মাশরাফি এ পর্যন্ত খেলা ৬ ম্যাচে ২৭৯ রান দিয়ে একটি মাত্র উইকেট পেয়েছেন। তবে উইকেট না পেলেও মাশরাফির ওপর পূর্ণ আস্থা ওয়ালশের। তিনি বলেছেন, মাশরাফি উইকেট পাচ্ছে না এটা ঠিক আছে। কিন্তু তার ইকোনমি ভালো। তাকে নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। তবে শেষ দুই ম্যাচ ভারত এবং পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলা। সে পরের দুই ম্যাচে উইকেট পাবে।
ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা স্পিনের বিপক্ষে দুর্দান্ত নৈপুণ্য প্রদর্শন করেন। যা টাইগার থিংকট্যাংকের মাথায় আছে। ফলে আজকের ডু অর ডাই ম্যাচে বাংলাদেশ দলে একটি পরিবর্তন হতে পারে। মেহেদি হাসান মিরাজের স্থানে দেখা যেতে পারে পেসার রুবেলকে। দলে সুযোগ পেলে অভিজ্ঞ এবং পরিণত রুবেল তার আগুনে বোলিং এবং বিধ্বংসী ইয়র্কার দিয়ে বিপক্ষ দলের ব্যাটিং ভিত নাড়িয়ে দিতে চান। গত বিশ্বকাপের সেই স্মৃতি এখনো সবার হৃদয়ের মণিকোঠায় জ্বলজ্বল করে জ্বলছে। কোয়ার্টার ফাইনালে বিরাট কোহলি ৩ রান করে রুবেলকে উইকেট উপহার দেন। এ ছাড়া টি-২০ বিশ্বকাপে এই দুইজনের সাক্ষাতে বিরাট কোহলি খুব স্বস্তির সাথে রুবেলকে মোকাবেলা করতে পারেননি। কোহলি এবং রোহিত শর্মাকে ইনিংসের শুরুর দিকে সাজঘরে ফিরিয়ে দিতে পারলে ভারতের মিডল অর্ডার তেমন কিছুই করতে পারবে না বলে লাল-সবুজের দল বিশ্বাস করে। বাংলাদেশ দলে তিন পেসার খেললে স্পিন বিভাগ সামলাবেন বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান এবং মোসাদ্দেক হোসেন। এ ছাড়া বোনাস হিসেবে তো রয়েছে সৌম্য সরকারের স্লো মিডিয়াম পেসের মিসাইল।
প্রথমে ব্যাট করতে হলে বাংলাদেশ কত রানের টার্গেট ভারতের সামনে ঝুলিয়ে দেবে। টিম মিটিংয়ের প্রাথমিক আলোচনায় একটা ধারণাও প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা হয়েছে। তাহলো সাড়ে তিন শ’। তা না হলে তিন শ’ প্লাস স্কোর করতে হবে। স্কোর বড় না হলে পেরে ওঠা যাবে না। ফলে এই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই ব্যাটসম্যানদের দুর্গম পথ পাড়ি দিতে হবে সৃষ্টি সুখের উল্লাসে। ভারতের দুই পেসার সামি এবং বুমরাহ দারুণ ফরমে আছে। সামি ইতোমধ্যে হ্যাটট্রিক করেছেন। এমনকি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৫ উইকেট নিয়ে তিনি হুংকার দিয়ে বাংলাদেশকে সাবধান করে দিয়েছেন। তবে সামি এবং বুমরাহকে নিয়ে তেমন অতিরিক্ত কোনো কিছুই চিন্তার রাজ্যে ডালপালা মেলতে দিতে রাজি নন টাইগাররা।
তামিম, সৌম্য, লিটন, সাকিব, রিয়াদ, মুশকিফ, মোসাদ্দেক। কি উজ্জ্বল এক একটি স্বর্ণালি নাম। এরা যদি উইলো হাতে বিদ্যুৎছটার মতো চমক দেখাতে পারেন তাহলে ভারতের অনেক অঙ্কের হিসাব এলোমেলো হতে বাধ্য। রান চেজ করার সময় গ্রিক মহাকাব্য ইলিয়াডের বীর একিলিসের মতো মরণপণ লড়াই করতে হবে। সংশপ্তকের মতো ম্যাচের শেষ বল পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে। তা হলেই এবারের বিশ্বকাপে মধুর প্রতিশোধ নেয়া সম্ভব হবে। ভারত সব সময়ই ছোট দল হিসেবে বাংলাদেশকে অবজ্ঞা করে থাকে। তারা সব সময়ই চায় যে টাইগাররা তাদের সমীহ করুক। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না যে এটা ওয়ানডে ক্রিকেট। চরম অনিশ্চয়তার খেলা। না হলে টেস্ট পরিবারের নবীন সদস্য আফগানিস্তান ভারতকে জানান দিয়েছিল যে ক্রিকেট ইতিহাসে নতুন অধ্যায় সংযোজিত হতে পারে। ফলে বাংলাদেশ আত্মবিশ্বাসী নতুন কিছু করার প্রেরণায়। মাশরাফি জানেন ভারতকে পরাজিত করা কঠিন তবে অসম্ভব নয়। তিনি সত্য এবং সুন্দরের পথে থেকে নব চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে কোহলি-ধোনির মুখোমুখি হবেন। অতীতকে ভুলে নতুন এক বাংলাদেশ আজ মাঠে নামবে। ব্যাটে বলে কবিতার ছন্দ তুলে নতুন ইতিহাস গড়বে। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন পূরণের অঙ্গীকারে আরো এক ধাপ এগিয়ে যাবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
আফগানিস্তানে গুলিতে ৩ স্প্যানিশ ও ৩ আফগান নিহত বিভিন্ন অপরাধে সাতজনের ফাঁসি কার্যকর করল ইরান কিরগিস্তানে আতঙ্কে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা ‘প্রাচীন হিব্রুদের সাথে ইসরাইলি ইহুদিদের জেনেটিক সংযোগ নেই’ মিয়ানমারের স্বর্ণের খনিসমৃদ্ধ এলাকা দখলে নিলো বিদ্রোহীরা ধর্ষণ মামলায় জুজুৎসুর সাধারণ সম্পাদক গ্রেফতার সেকান্দর সাফিয়া ফাউন্ডেশনের ‘বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ বিষয়ক সেমিনার’ অনুষ্ঠিত কিরগিজস্তানে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের ঘরে থাকার পরামর্শ সরকারি কেন্দ্রে ধান বেচতে পারে না কৃষক, লাভ খাচ্ছে দালালরা ব্যবসা সম্প্রসারণে ইএসজি কমপ্লায়েন্স রিপোটিং স্ট্যান্ডার্ড থাকা জরুরি জীবন দিয়ে দেশবিরোধী অপশক্তিকে মোকাবেলা করবো : বাহাউদ্দিন নাছিম

সকল