২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ট্রেনের টিকিট কাটার ভোগান্তি বেশি এবার অগ্রিম টিকিট বিক্রি আজ শেষ

-

বিগত কয়েক বছরের মধ্যে এবারই ট্রেনের আগাম টিকিট কিনতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হয়েছেন যাত্রীরা। গতকাল শনিবারও ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্টেশনে দাঁড়িয়ে থেকে অনেকেই নিরাশ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।
এ দিনও মোবাইল অ্যাপসে যারা টিকিট কাটতে ব্যর্থ হয়েছেন, তারা বাধ্য হয়ে যোগ দিয়েছেন লাইনে। রেল কর্তৃপক্ষের ৫ দিনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি আজ রোববার শেষ হচ্ছে। ঢাকার কমলাপুরসহ পাঁচ জায়গা থেকে আজ দেয়া হবে ৪ জুন যাত্রার টিকিট।
টিকিটপ্রত্যাশীদের অভিযোগ, এবারের মতো এতো ভোগান্তি আর যন্ত্রণা কখনো পোহাতে হয়নি। এর দায় কোনোভাবেই রেলপথ মন্ত্রণালয় বা সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলরা এড়াতে পারবেন না বলে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
গতকাল সকাল ৯টা থেকে কমলাপুর স্টেশনে আগাম টিকিট বিক্রি শুরু হয়। চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। অগ্রিম টিকিট বিক্রির ৪র্থ দিনেও স্টেশনে টিকিটপ্রত্যাশীদের ভিড় ছিল উপচে পড়া। আর যারা টিকিট নিতে আসেন তাদের বেশির ভাগেরই অভিযোগ একই। অ্যাপসে চেষ্টা করে না পাওয়ার কারণে তারা স্টেশনে এসে শেষ চেষ্টার জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছেন। কমলাপুর স্টেশন থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে যাতায়াতকারী ১৬টি ট্রেনের ১৪ হাজার ৯৫টি টিকিট বিক্রি হয়।
রাজশাহীতে যাওয়ার জন্য বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট কিনতে ভোরের আলো ফোটার আগেই কমলাপুর স্টেশনে এসে লাইন ধরেন শাকিল আহমেদ। পরদিন অর্থাৎ শনিবার বেলা সাড়ে ৩টায়ও তিনি টিকিট কাউন্টার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেননি।
তিনি সাংবাদিকদের তার ক্ষোভের কথা জানিয়ে বলেন, এখানে ভিড় কম হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অ্যাপস থেকে টিকিট কিনতে না পেরে সবাই লাইনে এসে দাঁড়িয়েছে। শেষ পর্যন্ত টিকিট পাবো কি না তা নিয়ে সন্দেহ করছি। তার পরও আশা ছাড়ছি না। লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট কিনতে আসা সেলিম নামের এক টিকিটপ্রত্যাশীর অভিযোগ, একটি টিকিট দিতে কাউন্টারে ১০ মিনিটেরও বেশি সময় নিচ্ছে। এত সময় নিলে তাহলে কিভাবে হবে?
টিকিটপ্রত্যাশীদের অভিযোগ, এবার কোটা বাতিল হলেও স্টেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নানা কৌশলে তাদের লোকজনদের চাহিদা পূরণ করেছেন। এর মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর (জিআরপি পুলিশ) সদস্য পরিচয় দিয়ে লাইন ভেঙে টিকিট নিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন আমিনুল ইসলাম নামের একজন। এ প্রসঙ্গে কমলাপুর স্টেশনের ম্যানেজার মোহাম্মদ আমিনুল হক সাংবাদিকদের বলেন, এ রকম কিছু হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ২২ মে থেকে ঢাকার কমলাপুরসহ পাঁচ জায়গা থেকে এবার আগাম টিকিট বিক্রি শুরু হয়। প্রথম দিন থেকেই টিকিটপ্রত্যাশীরা রেল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। বিশেষ করে অ্যাপসের ভোাগান্তি নিয়ে। এ নিয়ে রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন টিকিটপ্রত্যাশীদের ভোগান্তির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। একই সাথে তিনি ঘোষণা দেন অ্যাপসের টিকিট অবিক্রীত থাকলে ২৭ মে থেকে সেগুলো বিক্রির জন্য কাউন্টারে দিয়ে দেয়া হবে।
এ দিকে দক্ষতা, সক্ষমতা ও সমন্বয়হীনতার কারণে ই-টিকিটিং প্রার্থীদের ভোগান্তি সৃষ্টি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। গতকাল শনিবার সংগঠনটির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ ও কার্যকরী পরিষদের সদস্য কাজী আমান উল্যাহ মাহফুজসহ কমলাপুর রেলস্টেশন পরিদর্শন শেষে এ অভিযোগ করেন। পরিদর্শনকালে লাইনে দাঁড়ানো টিকিটপ্রত্যাশীদের কথা শোনেন মহিউদ্দিন আহমেদ। পরে অ্যাপভিত্তিক প্রতিষ্ঠান সিএনএস কর্মকর্তা ও স্টেশন ম্যানেজার আমিনুল হকের সাথে কথা বলেন তিনি।


আরো সংবাদ



premium cement