২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

উদ্বেগেই শুরু মধুমাস

-

তাপ প্রবাহের দাপট দেখিয়ে বিদায় নিলো বৈশাখ। পঞ্জিকার শাসন অনুযায়ী গ্রীষ্মের সমাপ্তি ঘটে আজ জ্যৈষ্ঠের শুরু, যা লোকমুখে মধুমাস নামেই পরিচিত। যদিও বাংলা অভিধানে চৈত্র মাসকেই ‘মধুমাস’ বলা হয়। কিন্তু অভিধানের সে মধুমাস অভিধানেই আছে। সামাজিক কারণে জ্যৈষ্ঠ মাসের সাথে মধুমাস বিশেষণটি জড়িয়ে গেছে।
চৈত্র-বৈশাখের খরতাপে অতিষ্ঠ তৃষ্ণার্ত মানুষের প্রাণ জুড়াতে প্রাকৃতিক নিয়মে এ মাসেই বাজারে আসে হরেক রকমের ফল। শহর গ্রামের সর্বত্রই চলে রসালো ফলের উৎসব। দাবদাহের তৃষ্ণার্ত প্রাণকে শীতলতার পরশ বুলিয়ে দিতে এখন ফুটি, বাঙ্গি, তরমুজ, কাঁঠাল, লিচু, কালো জাম, ক্ষুদিজাম, আনারস, আমলকী, আতা, করমচা, জামরুল, বেল, গাব ইত্যাদি ফলে বাজার পরিপূর্ণ। তবে ফলের এমন ভরা মওসুমেও বাজারের এসব ফল কতটুকু নির্ভেজাল এমন আশঙ্কায় ভোক্তাদের উদ্বেগের শেষ নেই।
জ্যৈষ্ঠের শুরুতেই রাজধানীর ফলের দোকান ও আড়তগুলোতে চলছে এসব ফল কেনাবেচা। দাম বেশি হলেও রসনা তৃপ্ত করার প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে নেই কেউ। তবে মওসুমের প্রথম দিক বলে এখন বাজারে ফলের দাম বেশ চড়া। বিত্তবানরা কিনলেও সাধারণের চেয়ে থাকা ছাড়া উপায় নেই। গতকাল বাজার ঘুরে এমন চিত্রই পাওয়া গেছে।

শান্তিনগর বাজরের বিক্রেতারা জানান, বর্তমানে প্রতি কেজি গোবিন্দভোগ আম ২০০ টাকা ও হিমসাগর ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যদিও এ আমের মান নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। এ ছাড়া কদমি লিচু প্রতি শ’ ৮০০ টাকা, সবুজ গোলাপি আভা নিয়ে টক মিষ্টি স্বাদের স্থানীয় জাতের মোটা বিচির লিচু প্রতি শ’ চার শ’ থেকে পাঁচ শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে বোম্বাই চায়না-৩ ও বেদনা জাতের লিচু বাজারে এলে লিচুর বাজার সহনীয় হবে বলে বিক্রেতারা জানান।
বাংলাদেশে বৃহত্তর রাজশাহী, দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, যশোর, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রাম জেলায় সবচেয়ে বেশি লিচু উৎপাদন হয়। দেশের পুরনো উচ্চফলনশীল লিচু হলো বোম্বাই। এ ছাড়া রয়েছে রাজশাহী, মাদ্রাজি, মঙ্গলবাড়িয়া, কদমী, কালীপুরী, মুজাফফরপুরী, বেদানা এবং চায়না-৩ উল্লেযোগ্য। বিক্রেতারা বলছেন, মধুমাস মাত্র শুরু হলেও পরিপক্ব আম লিচুর স্বাদ পেতে আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।
এ ছাড়া তরমুজের মওসুম শেষদিকে হওয়ায় ছোট আকৃতির প্রতি পিস কমপক্ষে ৫০০ টাকা, আনারস রাঙ্গামাটি প্রতিটি ৫০ টাকা, বাঙ্গি প্রতিটি কমপক্ষে ৬০ টাকা, জামরুল কেজি ১০০ টাকা, কালোজাম কেজি ৩৫০ টাকা ও কাঁঠাল প্রতিটি ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যদিও পরিপক্বতার বিষয়টির প্রশ্নবোধক। তবে সরবরাহ বাড়লে ফলের দাম কমবে বলেও জানান তারা।
পরিবেশ তাপমাত্রা ফলের জাত ইত্যাদি কারণে প্রাকৃতিকভাবে একেক সময় একেক ফল পাকে। এর মধ্যে সময়ের সবচেয়ে বেশি হেরফের হয় আম সংগ্রহের ক্ষেত্রে। এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী বেশি লাভের জন্য আম সংগ্রহের ঠিক সময়ের আগে ক্যালসিয়াম কার্বাইড এ ফরমালিন ব্যবহার করে। এমন পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন চিকিৎসক ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, রাসায়নিক দিয়ে পাকানো ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে। অধিক মুনাফার লোভে অসাধু এসব ব্যবসায়ী জনসাধারণের হাতে বিষ তুলে দিচ্ছে। বিগত বছরগুলোতে এমন অপরাধে অনেকের কারাদণ্ডও হয়েছে। কিন্তু এরপরও ফল বিষমুক্ত হয়নি। কোনো না কোনোভাবে তাতে রাসায়নিকের ব্যবহার অব্যাহত আছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভেজাল পণ্য ও খাদ্যদ্রব্যে মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিকের ব্যবহার মৃত্যুর হার বাড়াচ্ছে। খাদ্যে ভেজালজনিত বেশ কয়েকটি রোগ, বিশেষ করে আমাশয়, অ্যাপেনডিক্স, রক্তচাপ, হৃদরোগ ও ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুহার উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। এসব রোগে মানুষের মৃত্যুহার বেড়ে যাওয়ার অর্থ হলো খাদ্যে ভেজাল ক্রমান্বয়ে বাড়ছে এবং তা নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ছে। নিয়ন্ত্রণহীন খাদ্যবাজারকে দ্রুততার সাথে কঠোর নজরদারির আওতায় আনতে না পারলে খাদ্যগ্রহণে মৃত্যুহার সামনের দিনগুলোয় আরো বাড়বে বলেও তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন।  

 


আরো সংবাদ



premium cement
দেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে, অথচ বিরোধী দল দেখে না : কাদের আশুলিয়ায় বাঁশবাগান থেকে নারী পোশাক শ্রমিকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার মিয়ানমারের কর্মকর্তারা ফেরত গেলেন, কিন্তু রোহিঙ্গা সঙ্কট কি আরো জটিল হচ্ছে দিনাজপুরে দুই ট্রাকের সংঘর্ষ, চালক-হেলপার নিহত মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২ সখীপুরে বৃষ্টির জন্য অঝোরে কাঁদলেন মুসল্লিরা দক্ষিণ ভারতে কেন কাজ করেনি বিজেপির হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের নতুন আংশিক কমিটি বাংলাদেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসায় বিনিয়োগ সম্ভাবনা অন্বেষণে থাইল্যান্ডের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান ট্রাম্পের বিচার নিয়ে বিভক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট চুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত, ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত

সকল