২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সিধা পথে আসুন : ফখরুল

-

সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য সরকারকে অবিলম্বে সিধা পথে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, সরকারকে বলতে চাই, দয়া করে সিধা রাস্তায় আসুন। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন, তার সাথে আলাপ করুন। গতকাল দুপুরে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, বিরোধী দলের নেতৃবৃন্দের সাথে বসুন, কথা বলুন। কথা বলে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন কিভাবে হবে তার পথ বের করুন। এ ছাড়া অন্য কোনো পথ নেই, এ ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নেই। দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য, তাদের শান্তির জন্য, সমৃদ্ধ বাংলাদেশের জন্য, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের জন্য আলোচনায় বসে সমস্যার সমাধান করুন। অন্যথায় এর সব দায়দায়িত্ব আপনাদেরকেই বহন করতে হবে, অন্য কাউকে নয়।
নির্বাচন কমিশন নিজেরাই বিভক্ত হয়ে পড়েছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা যথেষ্ট সহনশীলতার পরিচয় দিয়েছি। একটি মাত্র কারণ, আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। আমরা বিশ্বাস করি, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতার পরিবর্তন হোক। আর মানুষ পরিবর্তন চায়।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে ২০ দলীয় জোট জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) উদ্যোগে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে এই আলোচনা সভা হয়। জাগপার সহসভাপতি ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধানের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ জামাল উদ্দিনের পরিচালনায় সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, এনপিপির সভাপতি ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাগপার সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, সহসভাপতি আবু মোজাফফর মো: আনাছ, এম এ মান্নান, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদুর রহমান খান ও দলের মুখপাত্র রাশেদ প্রধান বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যের শুরুতে জাগপার প্রতিষ্ঠাতা মরহুম শফিউল আলম প্রধানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, গোটা দেশের মানুষ আজকে ঐক্যবদ্ধ। তারা এই সরকারের পরিবর্তন চায়। সেই পরিবর্তনটা চায় নিঃসন্দেহে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। সেই নির্বাচনটা অবশ্যই সবার কাছে গ্রহণযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক এবং নিরপেক্ষ হতে হবে; তা না হলে এখানে কোনো নির্বাচন হবে না। আসুন আমরা সবাই ২০ দল, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, বাম দলগুলো ও অন্যান্য যারা বাইরে আছেন তারা সবাই মিলে গণতন্ত্রের পক্ষে, জনগণের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই পরিবর্তনটাকে নিয়ে আসি।
সরকারের দ্বৈতনীতির সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ২৩ তারিখে একটা জনসভা করতে চেয়েছিল সিলেটে। সরকার বলেছে নাশকতা হতে পারে সুতরাং এটা দেয়া যাবে না। আজকে (গতকাল) হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রাস্তাঘাট বন্ধ করে সরকারি টাকায় গাড়ি-ঘোড়া নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সভা করেছেন। এখানে কোনো নাশকতা হবে নাÑ আমরা করতে গেলেই নাশকতার চিন্তা! বিরোধী দল কথা বলতে গেলেই রাষ্ট্রদ্রোহিতা! ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মতো মানুষ, তিনি নাকি রাষ্ট্রদ্রোহিতা করেছেন! তার বিরুদ্ধে এখন জমির মামলা শুরু হয়ে গেছে! যেহেতু তিনি সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। এগুলো মানুষ বোঝে। মানুষকে বোকা ভাবার কোনো কারণ নেই।
নির্বাচন কমিশন বিভক্ত : বর্তমান নির্বাচন কমিশনের কমিশনারদের দ্বিধাবিভক্ত বক্তব্য প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, পত্রিকায় দেখলাম, একজন নির্বাচন কমিশনার প্রকাশ্যে বলেছেন যে, আমি সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন করার জন্য যে প্রস্তাবগুলো দিয়েছিলাম সেগুলো বিবেচনা করা হচ্ছে না। আরেকজন কমিশনার তার প্রস্তাবকে অসাংবিধানিক বলছেন। এসব বক্তব্যে নির্বাচন কমিশন নিজেরাই তো বিভক্ত হয়ে পড়েছে। কমিশন তো একটাই থাকতে হবে। তাদের যা কিছু বক্তব্য আসবে তা কমিশনের একটাই আসতে হবে। আজকে যে সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে নির্বাচন কমিশনে, এই সঙ্ককটটাই হচ্ছে এখন রাষ্ট্রের সঙ্কট।
তিনি বলেন, জোর করে তাদেরকে দিয়ে একটা দলকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য সব প্রকার নিয়মকানুন তৈরি করে ২০১৪ সালের মতো আরো একটা নির্বাচন করে ক্ষমতায় চলে যাওয়াটা কখনো নির্বাচন হতে পারে না। এমনকি নির্বাচন কমিশনও সেই দায়িত্ব পালন করতে পারে না। তারা যদি করে সেটা সংবিধান বিরুদ্ধকাজ হবে, তারা যে শপথ নিয়েছে তার বিরুদ্ধে চলে যাবে। এটা নিঃসন্দেহে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ হবে। আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি এই নির্বাচন কমিশন যোগ্য নয়। তারা কাজ করতে পারবে না, নির্বাচন করতে পারবে না। বাস্তবতাটা কী? এই কমিশনের নিজস্ব কোনো ক্ষমতা নেই। পুরোটাই নির্ভর করতে হয় সরকারের উপরে। যে সরকার ইতোমধ্যে সব প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করে ফেলেছে, যে সরকার ডিএনএ টেস্ট করে সরকারি কর্মকর্তা নিয়োগ করছে, এতটুকু গন্ধ যদি থাকে বিরোধী দলের তাহলে তাকে কোথাও নিয়োগ দেয়া হয় না, পোস্টিং দেয়া হয় না, সেই সরকারের ব্যক্তিদের দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনা অসম্ভব।
মির্জা ফখরুল আরো বলেন, নির্বাচন কমিশন সচিবের কথা শুনলে মনে হয়, তিনিই প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তা। আর প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তাকে মনে হয় সবচেয়ে অসহায় ব্যক্তি। সকালে একটা বলেন, বিকেলে আরেকটা বলেন, সাত দিন আগে এক কথা বলেন, সাত দিন পর আরেক কথা বলেন। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সাথে তার খুব একটা পার্থক্য দেখি না। এটাই বাস্তবতা যে, এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে কিভাবে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হবে? গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে এই পর্যন্ত ‘গায়েবি’ মামলার পরিসংখ্যান তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ইতোমধ্যে গায়েবি মামলার সংখ্যা পাঁচ হাজার ছাড়িয়ে গেছে, মোট মামলার সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ৯০ হাজার। গায়েবি মামলার আসামি করা হয়েছে পাঁচ লাখ। আমাদের এই হিসাবগুলো আসছে প্রত্যেক নেতাকর্মীর এফআইআর-এর কাগজপত্র থেকে। এই সরকার আসার পর থেকে আমাদের মামলার আসামির সংখ্যা ২৫ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। সদাশয় সরকার কী জবাব দেবে যে, একটা রাজনৈতিক দল, যে রাজনৈতিক দল গণতন্ত্রের বিশ্বাস করে, উদার গণতন্ত্রের বিশ্বাস করে, নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনে বিশ্বাস করে সেই রাজনৈতিক দলের ২৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয় তাহলে সেই দলটি কিভাবে কাজ করবে? আজকে এই সরকার এ রকম একটা অবস্থা তৈরি করেছে।
নজরুল ইসলাম খান, বলেন, সরকার ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পর থেকে খুবই বিচলিত। তারা এখন খুবই আতঙ্কে আছেন। কিন্তু আমরা আশ্বস্ত করতে চাই যে বিএনপি প্রতিহিংসার রাজনীতি করে না। আসুন সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে আলোচনায় বসে একটি পথ বের করুন।


আরো সংবাদ



premium cement
‘ফ্রি ভিসার গল্প’ আর শূন্য হাতে ফেরা লাখো শ্রমিক নোয়াখালীতে প্রবাসীর স্ত্রীর ব্যক্তিগত ছবি দেখিয়ে চাঁদা আদায় দেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে, অথচ বিরোধী দল দেখে না : কাদের আশুলিয়ায় বাঁশবাগান থেকে নারী পোশাক শ্রমিকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার মিয়ানমারের কর্মকর্তারা ফেরত গেলেন, কিন্তু রোহিঙ্গা সঙ্কট কি আরো জটিল হচ্ছে দিনাজপুরে দুই ট্রাকের সংঘর্ষ, চালক-হেলপার নিহত মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২ সখীপুরে বৃষ্টির জন্য অঝোরে কাঁদলেন মুসল্লিরা দক্ষিণ ভারতে কেন কাজ করেনি বিজেপির হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের নতুন আংশিক কমিটি বাংলাদেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসায় বিনিয়োগ সম্ভাবনা অন্বেষণে থাইল্যান্ডের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

সকল