২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

যুদ্ধাহত ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার সদস্যদের গাড়ির ট্যাক্স মওকুফ হচ্ছে

-

যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যদের গাড়ির ট্যাক্স ও ফিটনেস ফি মওকুফ করে দেয়া হচ্ছে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত প্রস্তাবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সম্মতি দেয়া হয়েছে। এর ফলে আগামীতে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা, মৃত্যুবরণকারী যুদ্ধাহত/খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর নামে থাকা একটি সনদের বিপরীতে একটি গাড়ির ট্যাক্স ও ফিটনেস ফি প্রদান করার প্রয়োজন পড়বে না। তবে এর আগে এ সম্পর্কিত একটি গেজেট প্রকাশ করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের গাড়ির রোড ট্যাক্স ও ফিটনেস ফি মওকুফ করার বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়ে একটি প্রস্তাব পাঠায়। এই প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা, মৃত্যুবরণকারী যুদ্ধাহত/খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর নামে থাকা একটি সনদের বিপরীতে রেজিস্টেশনকৃত একটি গাড়ির ট্যাক্স মওকুফের বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনসাপেক্ষে ‘দি ইস্ট পাকিস্তান মোটর ভেহিকেল রুলস ১৯৬৬ এর ২৩(৯) উপ-বিধি’ অনুযায়ী অফিসিয়াল গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে রোড ট্যাক্স মওকুফের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।
এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিদ্যমান আইনে মোটরযানের ফিটনেস ফি মওকুফের কোনো সুযোগ নেই। তবে সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সড়ক ও সড়ক পরিবহন বিভাগের (বর্তমানে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ) স্মারক নং-এমডিআরটি/১এ-১/৮৫(অংশ-২)-২৪ তারিখ-০৬-০২-১৯৮৬ অনুযায়ী বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্টের গাড়িগুলো সমাজসেবা কাজে নিয়োজিত থাকার কারণে এসব গাড়ির ফিটনেস ফি বিশেষ ক্ষেত্র বিবেচনা করে মওকুফ করা হয়েছে। সে বিবেচনায় মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের চিহ্ন বহনকারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের গাড়ির রোড ট্যাক্স ও ফিটনেস ফি মওকুফ করা সমীচীন হবে।
সূত্র জানায়, এই বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গত ৮ আগস্ট তার মতামতে উল্লেখ করেছেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের নানাভাবে অনেক সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয়ে থাকে। সেগুলোকে আরো বিস্তৃত করার কোনো প্রয়োজন নেই। অবশ্যই যেখানেই কোনো ভাতা দেবার ব্যবস্থা আছে তা আমরা সময়ে সময়ে পুনর্বিবেচনা করি। যাই হোক, ৩ নং অনুচ্ছেদের প্রস্তাবিত সুযোগটি একটি নির্দিষ্টসংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা বা তাদের উত্তরাধিকারীর মধ্যে সীমিত থাকবে বিবেচনা করে সেইটি অনুমোদন করা যেতে পারে।’
এই বিষয়ে অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা গত মঙ্গলবার এই প্রতিবেদককে বলেছেন, অর্থমন্ত্রীর মতামতসহ আমরা এই বিষয়ে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি। এখন তাদের দায়িত্ব হচ্ছে এই সুযোগ দেয়ার আগে একটি গাইডলাইন প্রণয়ন করা, যাতে এই সুবিধার কোনো অপব্যবহার না হয়। এই গাইডলাইন তৈরিতে তারা আমাদেরও পরামর্শ নিতে পারে।
বিআরটিএ’র এক সূত্র জানায়, শুধু ২৪০০ সিসি নিচের গাড়ির ক্ষেত্রে এই সুবিধা পাওয়া যাবে। আর এ ধরনের সুবিধা দেয়ার আগে অবশ্যই একটি গাইডলাইন তৈরি করা হবে। আইন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনক্রমে এ সংক্রান্ত একটি গেজেট খুব শিগগিরই প্রকাশ করা হতে পারে। জানা গেছে, বর্তমানে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যা প্রায় সাড়ে চার হাজার। উল্লেখ্য, সিসি প্রকারভেদে একটি গাড়ির জন্য প্রতি বছর একজন গাড়ির মালিককে রোড ট্যাক্স ও ফিটনেস বাবদ ২৫ হাজার টাকা থেকে অর্র্ধ লাখ টাকা সরকারকে কর হিসেবে দিতে হয়।


আরো সংবাদ



premium cement