২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ন্যাটোকে রাশিয়ার হুঁশিয়ারি

ন্যাটোকে রাশিয়ার হুঁশিয়ারি - সংগৃহীত

মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোকে পূর্বদিকে অগ্রসর হওয়ার ব্যাপারে কড়া সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ন্যাটো যদি ইউক্রেন ও জর্জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে চায় তাহলে তার পরিণতি ভালো হবে না।

বৃহস্পতিবার মস্কোয় একদল রুশ কূটনীতিকের সঙ্গে বৈঠকে পুতিন এ সতর্কতা উচ্চারণ করেন। তিনি বলেন, রাশিয়ার পশ্চিম সীমান্তে ন্যাটোর পক্ষ থেকে সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েন গ্রহণযোগ্য নয়।

রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, এ ধরনের পদক্ষেপ রাশিয়ার নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি সৃষ্টি করছে এবং আমরা এ ধরনের আগ্রাসী পদক্ষেপের উপযুক্ত জবাব দেব।

পুতিন আরো বলেন, যারা পরিস্থিতিকে আরো ঘোলাটে করার জন্য ইউক্রেন ও জর্জিয়াকে ন্যাটো জোটে নিতে চান তাদের উচিত এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন নীতির সম্ভাব্য পরিণতি সম্পর্কে চিন্তুভাবনা করা।  সম্প্রতি ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিংকিতে দ্বিপক্ষীয় শীর্ষ সম্মেলনে মস্কোর এ প্রতিবাদের কথা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জানানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেন পুতিন।

দক্ষিণ ওশেটিয়া অঞ্চল নিয়ে বিরোধের জের ধরে জর্জিয়া ও রাশিয়ার মধ্যে ২০০৮ সালে যুদ্ধ হয়। জর্জিয়ার আরেকটি বিচ্ছিন্নতাবাদী অঞ্চল আবখাজিয়াকে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়ার লক্ষ্যে রাশিয়া সেখানে সেনা মোতায়েন করে রেখেছে। এদিকে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া প্রজাতন্ত্রে অনুষ্ঠিত এক গণভোটের জের ধরে এটিকে রুশ ফেডারেশনে অন্তর্ভুক্ত করার পর পাশ্চাত্যের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কের মারাত্মক অবনতি হয়।

ঝুঁকিতে ন্যাটো জোট!

তুরস্ক সরকার রাশিয়ার কাছ থেকে অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ কেনার যে পরিকল্পনা করেছে তা ন্যাটো জোটকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে বলে একজন শীর্ষস্থানীয় মার্কিন জেনারেল হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন।

ইউরোপে মোতায়েন মার্কিন বিমান বাহিনীর কমান্ডার- জেনারেল টড ওয়াল্টার্স বলেছেন, ন্যাটোভুক্ত দেশ তুরস্ক যদি এস-৪০০ ব্যবহার করা শুরু করে তাহলে এই ব্যবস্থা আমেরিকার এফ-৩৫ জঙ্গিবিমানকে শনাক্ত করার প্রযুক্তি রপ্ত করে ফেলবে।

আমেরিকা দাবি করে, তাদের অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান এফ-৩৫ যেকোনো রাডার বা আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে সক্ষম।

জেনারেল ওয়াল্টার্স বলেন, ইউরোপ জুড়ে এফ-৩৫ জঙ্গিবিমান মোতায়েন রয়েছে এবং তুরস্ক এস-৪০০ ব্যবহার করা শুরু করলে রাশিয়া এই যুদ্ধবিমানের প্রযুক্তি আয়ত্ব করে ফেলতে পারে যা ন্যাটো জোটের জন্য সুবিধাজনক হবে না।

লন্ডন সফররত এই মার্কিন জেনারেল আরো বলেন, তুরস্কের পক্ষ থেকে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার পরিকল্পনা ‘উদ্বেগজনক’ হলেও দেশটির সঙ্গে ‘এই মুহূর্তে’ ঘনিষ্ঠ সামরিক সহযোগিতা চালিয়ে যাবে ওয়াশিংটন।  

তুরস্ক ১৯৫২ সাল থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো জোটের সদস্য। 

অস্তিত্ব সঙ্কটে ন্যাটো!

সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর আটলান্টিক চুক্তি সংস্থা বা ন্যাটো সামরিক জোটের অস্তিত্ব থাকার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। ইরানের প্রেসটিভিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে একথা বলেছেন, খ্যাতিমান রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও মার্কিন লেখক জন স্টেপলিং।

তিনি আরো বলেন, ন্যাটোকে আমেরিকা বিদেশি সেনাজোট হিসেবে ব্যবহার করছে। ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিংকিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একান্ত বৈঠক করতে যাওয়ার আগে জন স্টেপলিং একথা বললেন। ন্যাটোর কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে নানা অভিযোগ করে আসছে মস্কো।


আরো সংবাদ



premium cement