১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ জিলকদ ১৪৪৫
`


ডাকসু নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে তারা জিতলো কীভাবে : তথ্যমন্ত্রী

- ছবি : নয়া দিগন্ত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন যারা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিলো, তারাও-তো ভিপিসহ অন্যান্য পদে জিতেছে। আমার প্রশ্ন, ডাকসুর নির্বাচন যদি সুষ্ঠু না হয়, তাহলে তারা জিতলো কীভাবে?

বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ৫০ বছর উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এ প্রশ্ন রাখেন।

তিনি বলেন, নেতৃত্বের বিকাশের জন্য ছাত্রসংসদের কোনো বিকল্প নেই। আমি আজকের অবস্থানে কখনো আসতে পারতাম না যদি, স্কুলের শিক্ষা না থাকতো। আমি চট্টগ্রাম মুসলিম হাই স্কুলের ছাত্র। সেখানে বক্তৃতা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা হতো। এই বিশ্ববিদ্যালয়েও আমি যখন ছাত্র, তখন ন্যাশনাল টেলিভিশন ডিবেট হতো। এটি অত্যন্ত জনপ্রিয় ও সম্মানজনক একটি অনুষ্ঠান ছিল। আমি সোহরাওয়ার্দী হলের বিতর্ক দলের দলনেতা ছিলাম। আমি স্কুলের বিতর্ক দলের দলনেতা ছিলাম। স্কুল যদি আমাকে শিক্ষা না দিতো, তাহলে আমার পক্ষে আজকের অবস্থানে আসা সম্ভব হতো না।

‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন নির্বাচন হয়, তখন আমি ছাত্র না। এরপরও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান ছিলাম। এগুলো নেতৃত্ব বিকাশের ক্ষেত্রে দারুণ সহায়ক। আমি আশা করবো, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েও শিগগিরই চাকসুর নির্বাচন হবে।’

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছুদিন আগে ডাকসু নির্বাচন হয়েছে। সেখানকার প্রশাসন কিছু ত্রুটির কথা স্বীকার করেছে। সেটি নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। যারা নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিল তারাও-তো জয়লাভ করলো।

গবেষণা ও প্রকাশনার মাধ্যমে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিকাশ ঘটে মন্তব্য করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বর্তমানে ছাত্ররা কেউ কম্পিউটার সায়েন্স কেউ ব্যবসায় প্রশাসন আর কেউ আইন বিষয়ে পড়তে চায়। বিজ্ঞানের ছাত্র হতে চায় কম। এ জন্য এখন গবেষণা কমে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মান নির্ধারণ করে গবেষণার উপর।

আমাদের সময়ে বাবারা ভালো ছাত্রদের রসায়ন, পদার্থ এগুলোই পড়াতেন। গবেষণার উপর বিশেষ করে রসায়ন বিভাগের আরো জোর দেওয়া প্রয়োজন। গবেষণার জন্য আরো ফান্ড সরকারের কাছে চাওয়া প্রয়োজন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসংখ্যার উপর রেটিং হয়না। গবেষণার মাধ্যমে একটি বিশ্ববিদ্যালয় অনন্য উচ্চতায় যেতে পারে। আমেরিকার কর্নেল ইউনিভার্সিটিতে এতো গবেষণা হয়, সেখান থেকে এ পর্যন্ত ৩৪ জন নোবেল পুরস্কার পেয়েছে। আমি মনে করি, রসায়ন পড়ার পর চাকরির অনেক সুযোগ রয়েছে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ৮০-র দশকে মালয়েশিয়ার ছাত্ররা আমাদের শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে পড়তে আসতো। এখন আমাদের ছেলেরা সেখানে পড়তে যায়। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে অনেক আগেই উন্নত দেশের কাতারে পৌঁছতো বাংলাদেশ। এরপরও আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশটাকে উন্নয়নে অনেক দূরে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। ‘তাঁর নেতৃত্বে সব সূচকে পাকিস্তান থেকে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের রপ্তানি আয় প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলার আর পাকিস্তানের ২৪ বিলিয়ন, বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় প্রায় ১ হাজার ৮০০ ডলার আর পাকিস্তানের ১ হাজার ৬৪০ ডলার। বাংলাদেশের গড় আয়ু ৭২ দশমিক ৮ বছর সেখানে পাকিস্তানে ৬৮ বছর।

দেশের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ১০ বছর আগে যে ছেলে বিদেশ গেছে, সে ছেলে দেশে এসে তার শহর ও গ্রাম চিনতে পারে না। কারণ সবকিছুতে উন্নয়ন হয়েছে, আগের চিত্র বদলে গেছে। এ পরিবর্তন শেখ হাসিনার কারণে হয়েছে।

চবিতে প্রাকৃতিক পরিবেশ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) উন্নয়ন কাজ করতে গিয়ে যেন প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আমেরিকান কর্নেল ইউনিভার্সিটির মিল আছে। ওই ইউনিভার্সিটিও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বড়। এখানকার মতো সেখানেও পাহাড় ও প্রচুর গাছপালা আছে। দেশের অন্য কোনো ক্যাম্পাস প্রাকৃতিকভাবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো এতো সুন্দর নয়।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ বছর পার হয়েছে। আরও শত শত বছর টিকে থাকবে। এই প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট করা যাবেনা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন, যেকোনো উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড করার ক্ষেত্রে যেনো প্রাকৃতিক পরিবেশ ঠিক রেখে করা হয়।

তথ্যমন্ত্রীর পুরো বক্তৃতায় ছিল তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের স্মৃতিচারণ, শিক্ষক ও ঘনিষ্ঠ সহপাঠীদের গল্প। এসময় তিনি কয়েকজন প্রিয় শিক্ষক ও সহপাঠীদের স্মরণ করেন, শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন।

দু’দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য সূবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিকেএসএফ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মূখ্য সচিব মো. আবদুল করিম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য ড. শিরীণ আখতার, চবি বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সফিউল আলম, সুবর্ণ জয়ন্তী আয়োজক কমিটির আহবায়ক ও রসায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মনির উদ্দিন।


আরো সংবাদ



premium cement
এক বছর পর দাউদকান্দিতে ড. মোশাররফ গোপালগঞ্জ বশেমুরবিপ্রবিতে সুষ্ঠুভাবে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন রাজধানীতে আ’লীগের শান্তি সমাবেশ আজ কুয়াকাটা সৈকতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সমুদ্রস্নান সরকারি হাসপাতালে অবৈধ ক্যান্টিন ও ওষুধের দোকান বন্ধের নির্দেশ ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে আ’লীগ জনগণকে নাগরিক হিসেবে বাতিল করেছে : জোনায়েদ সাকি ইবিতে ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা টঙ্গী পর্যন্ত বর্ধিত হচ্ছে মেট্রোরেলের লাইন মালয়েশিয়ায় বিএমইটি কার্ডের নামে প্রতারণার ফাঁদ : সতর্ক করল দূতাবাস ফিলিস্তিনে হামলার প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জে খেলাফত মজলিসের বিক্ষোভ মিছিল আল মাহমুদপুত্র মীর তারিকের ইন্তেকাল

সকল