১৮ মে ২০২৪, ০৪ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫
`


নির্বাচন পর্যবেক্ষকেরা অনুতপ্ত

নির্বাচন কমিশনের বোধোদয় হবে কি?

-

গণতান্ত্রিক দেশগুলোতে নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। কমিশনের যোগ্যতা এবং নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গির ওপর নির্ভর করে নির্বাচন কতটুকু সফল হবে। নির্বাচন কমিশন যদি অভিজ্ঞ ও যোগ্য হয়; কিন্তু নিরপেক্ষ না হয়, তা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে দুর্বল করে দেয়। আমাদের দেশের নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা প্রয়োগের যে সাংবিধানিক হাতিয়ার রয়েছে; নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে সেগুলো ব্যবহারের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত উদ্যোগ নিতে তাদের দেখা যাচ্ছে না। ফলে নির্বাচন ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। একটি নির্বাচন কতটা অবাধ, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হয়েছে; পর্যবেক্ষকেরা এর মূল্যায়ন করে থাকেন। তাই নির্বাচন কমিশন নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণে উপযুক্ত পর্যবেক্ষকদের আমন্ত্রণ জানায়। ৩০ ডিসেম্বরের সংসদ নির্বাচন আয়োজনে সরকার বিদেশী পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতির ব্যাপারে নিরুৎসাহ দেখিয়েছে। একইভাবে কমিশন আরো একধাপ এগিয়ে পর্যবেক্ষকদের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ থেকে দূরে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করেছে।
সরকারের পক্ষ থেকে সাড়া না পেয়ে বিদেশী পর্যবেক্ষকেরা এই নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করা থেকে নিজেদের সরিয়ে নেন। অন্য দিকে, স্থানীয় সরকার নির্বাচন ও জাতীয় নির্বাচনে দেশীয় যেসব পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে, এবার তাদের অনেকে পর্যবেক্ষণের সুযোগ পায়নি। নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্যমূলক ছাঁটাই-বাছাইয়ের কারণে এমনটি ঘটেছে বলে মনে হওয়া স্বাভাবিক। ফলে এবারের নির্বাচনে পর্যবেক্ষক ছিলেন নগণ্য। যারা সুযোগ পেয়েছেন, তাদের সাথে বিভিন্নভাবে ‘ক্ষমতাসীনদের সম্পর্ক’ রয়েছে বলেও বলা শোনা যাচ্ছে। আবার পর্যবেক্ষণ নিয়ে পরস্পরবিরোধী কথা শোনা গেছে। এর মধ্যে অন্তত একটি প্রতিষ্ঠান নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে তারা ‘অনুতপ্ত’ বলে জানিয়েছে। সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন নামে একটি সংস্থার পক্ষ থেকে এমন অনুতাপের কথা জানানো হয়। তারা ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ এবং নতুন করে ভোট হওয়া উচিত বলে মনে করেন। যুক্তরাজ্যভিত্তিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে ফাউন্ডেশনটির প্রধান বলেছেন, নির্বাচনের আগের রাতে ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরা ব্যালট বাক্স ভরে রাখেন এবং তারা ভোটারদের ভয়ভীতি দেখিয়েছেন। প্রিজাইডিং অফিসার ও ভোটারদের কাছ থেকে এমন অভিযোগ শোনার পর তার মনে হচ্ছে, নতুন করে নির্বাচন হওয়া দরকার। ফাউন্ডেশনের হয়ে কাজ করা কানাডার নারী পর্যবেক্ষক তানিয়া ফস্টার জানালেন, তার কাছে এখন মনে হচ্ছে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে অংশ না নিলেই বোধহয় ভালো হতো। জানা গেল, এ প্রতিষ্ঠানের সাথে ক্ষমতাসীন দলের দুই নেতার সম্পর্ক রয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী দলগুলোর সাথে কোনো সম্পর্ক থাকলে নির্বাচনে সেই প্রতিষ্ঠান পর্যবেক্ষণের সুযোগ পাওয়ার কথা নয়। নির্বাচন কমিশন যখন নানা অজুহাতে অনেককে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ থেকে বঞ্চিত করেছে, তখন কোনো বিতর্কিত প্রতিষ্ঠান কিভাবে সুযোগ পায়, সেটি একটি প্রশ্ন।
টিআইবির পক্ষ থেকে পরিচালিত অনুসন্ধানে ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপির তথ্য উঠে এসেছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থাও নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। ৩০ ডিসেম্বরের সংসদ নির্বাচন কতটা সুষ্ঠু হয়েছে, সেই প্রশ্ন ক্রমেই বড় হয়ে উঠছে। এ অবস্থায় একটি পর্যবেক্ষক টিমের পক্ষ থেকে অনুতাপের বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে বড় ধরনের প্রশ্নের মুখোমুখি করে দিয়েছে। কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে, যেসব প্রশ্ন উত্থাপন হয়েছে, যাচাই করে সেগুলোর ব্যাপারে স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেয়া। দুর্ভাগ্য হচ্ছে, কমিশন নিজের দায়িত্ব পালন করার পরিবর্তে এ ব্যাপারে সরকারকে নৈতিকভাবে বৈধ করার অনাকাক্সিক্ষত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে এ ধরনের নির্বাচন কতটা ভঙ্গুর করেছে, সে ব্যাপারে কমিশনের বোধোদয় হওয়া উচিত।


আরো সংবাদ



premium cement
শিরোপা খরা কাটাতে ভারতকে চাপ সামলাতে হবে : মিসবাহ কলার কাঁদি ভাগাভাগি নিয়ে ছোট ভাইয়ের হাতে বড় ভাইয়ের মৃত্যু, আটক ৪ কুষ্টিয়াতে কৃষককে কুপিয়ে হত্যা স্কুলছাত্র অন্তর হত্যা মামলার পলাতক আসামি গ্রেফতার ‘ইন্ডিয়া জোটের প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী বাছাই হয়ে গেছে’ এখনো ম্যান সিটি প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা জিতেনি, গার্দিওলার সতর্কবাণী সাউথ পয়েন্টে কারাতে বেল্ট বিতরণ আচরণবিধি ভঙ্গ করলেই তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে : ইসি আহসান হাবিব গাজায় ১০ দিন ধরে চিকিৎসা সামগ্রী পাওয়া যাচ্ছে না মুন্সীগঞ্জের মধ্য কোর্টগাঁও এলাকার পুকুর থেকে লাশ উদ্ধার জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে কেউ যেন বৈষম্যের শিকার না হন : রাষ্ট্রপতি

সকল