২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নাগরিকত্ব ভিটে-মাটিসহ জাতিসঙ্ঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী চায় রোহিঙ্গারা

বৃহস্পতিবার প্রত্যাবাসন শুরু : নাগরিকত্ব ভিটে-মাটিসহ জাতিসঙ্ঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী চায় রোহিঙ্গারা - নয়া দিগন্ত

স্বদেশ ফেরার আগে নাগরিকত্ব ভিটে মাটিসহ নিরাপত্তার জন্য মিয়ানমারের রাখাইনে জাতিসঙ্ঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়েছেন দেশটিতে নিপীড়নের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা। প্রত্যাবাসনের তালিকায় নাম থাকা একাধিক রোহিঙ্গা  এবং বিভিন্ন ক্যাম্পের মাঝিরা (রোহিঙ্গা নেতারা ) এমন তথ্য জানিয়েছেন।

রোহিঙ্গা পরিচয়ে নাগরিকত্ব প্রদান, নিজস্ব জমি-বসত ভিটা ফেরত, মিয়ানমারের অন্যান্য গোষ্ঠীর মতো সমান মর্যাদা নিশ্চিত করা, হত্যা ধর্ষণের বিচার ও ক্ষতিপূরণ, আগের সহিংসতার ঘটনায় না ফাঁসানোসহ এরকম অনেক দাবী তাদের।

প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরের জাহেদ হোসেন, জোবাইদা, সানজিদা বেগমসহ একাধিক রোহিঙ্গা বলছিলেন, অনেক কষ্ট করে আমরা এসেছি। আর দুদিন পর দুই বছর পূর্ণ হবে। এখন আর যেতে চাই না। কোনও রোহিঙ্গা নাগরিকত্ব ও সমঅধিকার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে ফেরত যাবে না। কারণ মিয়ানমার সরকার মিথ্যাবাদী। তাদের কোনোভাবে বিশ্বাস করা যাচ্ছে না। আমাদের রোহিঙ্গা কার্ড দিতে হবে। নিরাপত্তা দিতে হবে। জাতিসঙ্ঘের আর্মি দিতে হবে। বিচার করতে হবে।

ময়নাঘোনা ক্যাম্পের মুহসানা খাতুন ও জিয়াবুর রহমানের স্পষ্ট বক্তব্য, এখন তারা মিয়ানমারে ফিরে যেতে প্রস্তুত নন। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট নতুন করে সেনা অভিযান শুরুর পর প্রাণ বাঁচাতে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে আশ্রয় নিয়েছে। মিয়ানমারে নিপীড়নের মুখে গত কয়েক দশকে উখিয়া-টেকনাফের ৩০ টি শিবিরে এখন ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে।

তবে জাতিসঙ্ঘের তথ্য অনুযায়ী, এই সংখ্যা ১১ লাখ ৮৫ হাজার ৫৫৭। তাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ওই অভিযান এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়ে ব্যাপক আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে মুখে শরণার্থীদের ফেরত নিতে সম্মত হয় মিয়ানমার। রোহিঙ্গাদের ঘরে ফেরার পথ তৈরি করতে ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর নেপিদোতে দুই দেশের মধ্যে একটি সম্মতিপত্র সই হয়। সেখানে বলা হয়, প্রথম দফায় শুধু এবার আসা শরণার্থীদের ফেরত নেবে মিয়ানমার। ওই সম্মতিপত্র স্বাক্ষরের তিন সপ্তাহের মধ্যে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করে দুই মাসের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করা হবে বলে উল্লেখ ছিল। কিন্তু দুই বছর পার হতে চললেও প্রত্যাবাসন শুরু হয়নি। ২২ আগস্ট থেকে (বৃহস্পতিবার) ফের রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের কথা শুনে এরই মধ্যে বান্দরবানসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ক্যাম্প ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরের পর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সম্মত হয় মিয়ানমার। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের আগে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলে মনে করছে ইউনিসেফ। মিয়ানমারে ফিরে যাওয়া শিশুদের নিরাপত্তা ও ভালো থাকার নিশ্চয়তা ছাড়া তাদের ফেরার আলোচনা করা অযৌত্তিক বলেই মনে করছেন ইউনিসেফ।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল