২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বিদেশে যাওয়ার নামে একজনেরও প্রাণহানি দেখতে চাই না : পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

-

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোঃ শাহরিয়ার আলম এম.পি বলেছেন, ‘প্রত্যেক প্রবাসী আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা চাই সবাই নিয়ম মেনে বিদেশ যাবে। এক্ষেত্রে কোন অনিয়ম ছাড় দেওয়া হবে না। আর অবৈধভাবে বিদেশ যেতে গিয়ে আমরা একজনের হয়রানি বা প্রাণহানিও দেখতে চাই না। এক্ষেত্রে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে’।
মঙ্গলবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে অভিবাসন খাত নিয়ে অনুসন্ধানী ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার স্বীকৃতি হিসেবে ১২ সাংবাদিককে ব্র্যাক মাইগ্রেশন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
অভিবাসনের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে সাংবাদিকদের অবদানকে স্বীকৃতি দিতে ব্র্যাক ও আইওএম-এর উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, এ ধরনের স্বীকৃতি সাংবাদিকদের অনুপ্রাণিত করবে। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে এতো এতো সংবাদমাধ্যম, পত্রিকা, অনলাইন কতোকিছু। সাংবাদিকেরা যদি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের মাধ্যমে প্রতিটা জেলার অভিবাসন খাতের প্রতারকদের চিহ্নিত করতে পারে, তবে সরকারের পক্ষে ব্যবস্থা নেয়া সহজ হয়। সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা যদি না নেয়া হয় সেক্ষেত্রে সাংবাদিকরা সরকারকে ধরতে পারবেন যে, প্রতারকদের চিহ্নিত করার পরেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের প্রায় এক কোটি লোক দেশের বাইরে। এরা প্রত্যেকেই আমাদের কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ। সাম্প্রতিক সময়ে ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে ইউরোপে যাওয়ার ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এমন করুণ মৃত্যু কাম্য নয়। তিনি বলেন, লোকজন যখন শোনে ইউরোপে যাওয়ার পর টাকা দিতে হবে তখন অনেকেই উৎসাহিত হয়। তারা জানে না এভাবে যেতে গিয়ে প্রাণহানি ঘটতে পারে। সাংবাদিকদের এই বিষয়গুলো তুলে ধরা উচিত। একজনও যদি অবৈধপথে ইউরোপে পৌঁছাতে পারে সেই ঘটনা কোন দৃষ্টান্ত হতে পারে না।
অভিবাসীদের অধিকার রক্ষায় গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। তিনি বলেন, অভিবাসন খাতে ধাপে ধাপে প্রতারিত হয় সাধারণ মানুষ। নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হয়। গণমাধ্যম রাডারের মতো কাজ করতে পারে। সাংবাদিকদের উচিত ঘটনার আগেই এমনভাবে সংবাদ প্রকাশ করা উচিত যাতে সরকার কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে পারে। তবে সাংবাদিকতা হতে হবে মানুষের কল্যাণে। বিশেষ করে অভিবাসন খাতে সাংবাদিকদের আরও বেশি সংবেদনশীল হতে হবে।
অভিবাসন খাত নিয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন যুগ্ম সচিব মোঃ ফজলুল করিম।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ঢাকার অ্যাক্টিং হেড অব কোঅপারেশন দোর্তে বোসে বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো অনিয়মিত ও বিপদজনক অভিবাসনের বিপক্ষে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) বাংলাদেশ মিশনের প্রধান গিওরগি গিগাওরি বলেন, দেশের বাইরে অভিবাসীদের নানা সমস্যা উঠে আসলেও দেশে ফিরে আসার পর কী ঘটছে সেটা গণমাধ্যমে আরও বেশি করে আসা উচিত।
ব্র্যাকের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ বলেন, অভিবাসন খাতে সাংবাদিকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তবে মূল ধারার গণমাধ্যমের পাশাপাশি নতুন ধারার মাধ্যমগুলোতেও সক্রিয় হতে হবে।
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) অতিরিক্ত মহাপরিচালক কেএম রুহুল আমিন বলেন, বিদেশগামীদের দক্ষ করে বিদেশ পাঠাতে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে ২০১৮ সালে অভিবাসন বিষয়ে গণমাধ্যমের ভুমিকা নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান।
আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা। এ বছর ১২ সাংবাদিক পুরস্কার পেয়েছেন। জাতীয় সংবাদপত্রে পুরষ্কারপ্রাপ্তরা হলেন, নিউ এজ পত্রিকার মুহাম্মদ ওয়াসিম উদ্দিন ভুঁইয়া, ডেইলি স্টারের পরিমল পালমা, এবং ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের আরাফাত আরা। সংবাদপত্র আঞ্চলিক ক্যাটাগরিতে পুরষ্কার পেয়েছেন সিলেটের দৈনিক জালালাবাদ পত্রিকার প্রতিবেদক শাফী চৌধুরী। টেলিভিশন (নিউজ) ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছেন ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির মেজবাহুল ইসলাম, বাংলাভিশনের মিরাজ হোসেন গাজী এবং এবং চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের মোর্শেদ হাসিব হাসান। টেলিভিশন (অনুষ্ঠান) ক্যাটাগরিতে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির তালাশ পুরস্কার পেয়েছে। রেডিও ক্যাটাগরিতে পুরস্কার জিতেছেন বাংলাদেশ বেতারের উপ-আঞ্চলিক পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান। অনলাইন ক্যাটাগরির পুরস্কারজয়ীরা হলেন প্রিয় ডটকম-এর মো. ইমরুল কায়েস, বিডিনিউজের আবদুল্লাহ আল হোসাইন এবং বাংলাট্রিবিউন-এর সাদ্দিফ সোহরাব। এছাড়া ব্লগ/মতামত ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছেন হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
অভিবাসন পুরস্কারের বিজয়ীদের নির্বাচনে চার সদস্যের বিচারক মণ্ডলীই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ বছর বিচারক হিসেবে ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ফজলুল করিম, সাংবাদিক শাহনাজ মুন্নী এবং ইউএন উইমেন-এর প্রোগ্রাম এনালিস্ট তপতী সাহা।
অভিবাসন বিষয়ক বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতাকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়ার কাজটি ২০১৫ সাল থেকে দেশে প্রথমবারের মত শুরু করে ব্র্যাক। এরই ধারাবাহিকতায় ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম চতুর্থবারের মত ‘অভিবাসন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০১৮’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অর্থায়নে ব্র্যাক ও আইওএম যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।


আরো সংবাদ



premium cement
শিল্পী-সাংবাদিক দ্বন্দ্ব নিয়ে এলো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত যশোর কারাগারে হাজতিদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ব্যাপক আতঙ্ক চিকিৎসার জন্য ঢাকা ছাড়লেন বিএনপি নেতা আমীর খসরু কুষ্টিয়াতে মসজিদ কমিটি নিয়ে সংঘর্ষে আহত ৫ চেয়ারম্যান তপন ও অজিত মেম্বারকে ধরিয়ে দিতে পারলে পুরস্কার ঘোষণা নারায়ণগঞ্জে ২৪ ঘণ্টায় ১৪ ডাকাত সদস্য গ্রেফতার রাজশাহীতে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি ছাড়াল যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশী শ্রমিকদের ভিসা সহজ করার আহ্বান প্রবাসী প্রতিমন্ত্রীর চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী না হয়ে অংশীদার হওয়া উচিত : শি জিনপিং ওকাব সভাপতি নজরুল ইসলাম, সম্পাদক জুলহাস আলম পাবনায় ১০ কোটি টাকার অনিয়মে ৩ ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে

সকল