১৭ মে ২০২৪, ০৩ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৮ জিলকদ ১৪৪৫
`


আরো একটা ১৫ আগস্ট করার জন্য শকুনরা ঘুরছে : শামীম ওসমান

শামীম ওসমান - ছবি : সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমান বলেছেন, শেখ হাসিনাকে টার্গেট করে আরো একটা ১৫ আগস্ট করার জন্য মাথার উপরে শকুনরা ঘুরছে। সেটা হলে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষমতায় থাকবে কি না? আমার যতেষ্ঠ সন্দেহ রয়েছে।

শনিবার সকালে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলায় বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা ইউএনও নাহিদা বারিক এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দীন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই, সাধারণ সম্পাদক এড. আবু হাসনাত শহীদ বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি চন্দনশীল, যুগ্ম সম্পাদক শাহনিজাম, শহর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন সাজনু।

আমরা শুধু রাজাকার-রাজাকার, আল-বদর, আল-বদর বলে চিল্লাচ্ছি! রাজাকার, আল-বদরদের তো একটা নীতি ছিলো ওরা পাকিস্তানে বিশ্বাস করতো। ওদের পাপের প্রায়শ্চিত্য ওরা পেয়েছে, যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি হয়েছে। তাই আমার কাছে মনে হয় আমাদের একটু সাবধান হওয়া দরকার। রাজনীতি করতে এসেছি যদি সত্য কথা বলতে না পারি তাহলে কথা বলে লাভ কি?

শামীম ওসমান বলেন, সারাদেশে এখন বঙ্গবন্ধুর জয়জয়কার কিন্ত ১৯৭৫ সালের বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের পর আমরা কোথায় ছিলাম? জেগে উঠতে পারিনি কেন? এর কারণ আমরা অপ্রস্তুত ছিলাম। পাকিস্তানী বাহিনী যেখানে দুইবার বঙ্গবন্ধুকে ফাঁসির মঞ্চে নিয়েও ফাঁসি দিতে পারেনি দুঃখজনক হলেও এইদেশেই আমরা লোকটিকে মেরে ফেললাম। তাকে মারতে মার্কিন সপ্তম বাহিনী, পাকিস্তানের বাহিনী কিংবা অন্য কেউ আসেনি।

শামীম ওসমান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার ভাষণে ন্যায্যতার গণতন্ত্রের কথা বলেছিলেন। কিন্ত আমরা যারা রাজনীতি করি তারা ন্যায্য কথা খুব কম মানুষই বলি। আমাদের দেশে অনেক ধরণের মানুষ আছে। এরমধ্যে ৮০ শতাংশ মানুষ কোনো কথা বলেনা। মাত্র ২০ শতাংশ মানুষ কথা বলে। এর মধ্যেই রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, প্রশাসন, ভালো বুদ্ধিজীবী এবং দুই নম্বর বুদ্ধিজীবীরা কথা বলে। এদের কেউ পাকিস্তানপন্থী, কেউ আমেরিকাপন্থী, কেউ ভারতপন্থী হয়ে কথা বলে। বঙ্গবন্ধুর সাথে সকলের পার্থক্যটা হলো বঙ্গবন্ধু কোনপন্থী হয়ে কথা বলেননি। তিনি শুধু জনগণপন্থী হয়ে জনগণের কথা বলেছেন।

শামীম ওমান বলেন, রেললাইন যেমন সমান্তরালভাবে চলে তেমনি এই দেশের দুটো শ্রেণি বিশ্বাসঘাতক ও বিশ্বাসভাজন। বিশ্বাসঘাতকরা অনেক নাটক করতে পারে। এদেশে বহু স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির লোক ছিলো, যে রাজাকার ছিলো তার পিতা মুক্তিযোদ্ধা ছিলো। এমন অনেকেই আছেন। প্রসঙ্গটা অন্যখানে সেটি হচ্ছে খন্দকার মোশতাকে অনুসারী কারা আছে। পেছন দিয়ে যারা ছুরি মারে তারাই মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত করার ক্ষমতা রাখে। কথাই আছে ‘ঘরের শত্রু বিভীষণ’। এরা বাংলাদেশের কোন শহরে আছে শুধু তাই নয়, এরা আনাচে কানাচে সব জায়গাতেই আছে। আমাদের সচেতন থাকতে হবে।

শামীম ওসমান মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমার বাবা, দুই ভাই মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, আমিও নিজের চোখে মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি। নারায়ণগঞ্জে আমি এমন অনেক মুক্তিযোদ্ধাকে চিনি যাদের ঘরে ভাত নাই, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের কাফনের কাপড় কেনার পয়সাও হয়না। সরকার অনুদান দেয়ায় তারা সম্মানিটা পাচ্ছেন। কিন্ত স্বাধীনতার পরে এটাও দেখেছি যে, অনেকেই মুক্তিযুদ্ধের নাম নিয়ে জমিদখল, ভূমিদস্যুতা করে মুক্তিযোদ্ধাদের নাম বেঁচে ওরা সম্পদের পাহাড় গড়েছে। আমাদের খুঁজে দেখা প্রয়োজন ৭১র আগে কার কি সম্পদ ছিলো এবং ৭১র পরে মুক্তিযুদ্ধের নাম ভাঙিয়ে কারা কত সম্পদ কামিয়েছে? বঙ্গবন্ধু হত্যা তাদের পিছনে তাদের অবদানও কিন্ত কমনা। শুধু রাজাকার আলসামসদের দায়ী করলে হবেনা। তাই আপনাদের সকলের কাছে অমি আহবান জানাই সত্যকে সত্য বলেন। যারা সমাজকে পুড়ে পুড়ে খাওয়ার চেষ্টা করেন, যারা বুদ্ধিজীবী হয়ে নিজেদের বুদ্ধি বিক্রি করার চেষ্টা করে।

শামীম ওসমান বলেন, শেখ হাসিনাকে টার্গেট করে আরো একটা ১৫ আগস্ট করার জন্য মাথার উপরে শকুনরা ঘুরছে। সেটা হলে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষমতায় থাকবে কি না? আমার যতেষ্ঠ সন্দেহ রয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement