২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

অর্থের অভাবে ঢাবি-জাবিতে ভর্তি হতে পারছে না ইমরান-অর্পন

- ছবি : নয়া দিগন্ত

দরিদ্র পরিবারের মেধাবী দুই ছাত্র দিন মজুরের ছেলে ইমরান হোসেন ও দর্জির ছেলে অর্পন কর্মকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেলেও অর্থের অভাবে ভর্তি হতে পারছে না।

অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেলেও এখন প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাড়িয়েছে অর্থনৈতিক সমস্যা। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পেরে সামনে এখন অন্ধকার দেখছেন বলে জানিয়েছে মেধাবী এই দুই শিক্ষার্থী।

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা সদরের পাহাড়পুর ও সারিষাদাইর পালপাড়া গ্রামে মেধাবী এই দুই শিক্ষার্থী ইমরান ও অর্পনের বাড়ি। রোববার দিবাগত রাতে এই দুই মেধাবী ছাত্র মির্জাপুর রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এসে তাদের পরিবারের অভাবের কথা এই প্রতিনিধির কাছে তুলে ধরেন।

মেধাবী ছাত্র ইমরানের পিতার নাম হাবিবুর রহমান। পিতা পেশায় কৃষি কাজ করেন। ইমরানের মা সাহিদা বেগম মারা যাওয়ার পর সৎ মায়ের সংসারে অনেক কষ্ট করে পড়াশোনা চালিয়ে আসছে। চার ভাই এক বোন পড়াশোনা করছে।

ইমরান হোসেন ২০১১ সালে সারিষাদাইর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিএসসিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি, ২০১৪ সালে জেএসসি পরীক্ষায় ট্যালেন্টপুল বৃত্তি ও জিপিএ-৫, মির্জাপুর এস কে পাইলট মডেল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় হতে হিসাব বিজ্ঞানে ২০১৭ সালের এসএসসি এবং ২০১৯ সালের মির্জাপুর সরকারী কলেজ থেকে হিসাব বিজ্ঞানে এইচ এসসি পরীক্ষায় ৪ দশমিক ৯২ পয়েন্ট পেয়েছে। এইচএসসি পাশের পর অর্থের অভাবে কোন কোচিং করতে না পারলেও নিজের ইচ্ছায় এ এছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ডি ইউনিট থেকে ম্যানেজমেন্টে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। তার ভর্তির মেধা স্কোর-১০৫।

ভর্তির সুযোগ হলেও অর্থের অভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারছে না বলে ইমরান জানিয়েছেন। দরিদ্র ও অসহায় এই মেধাবী ছাত্র ইমরান হোসেন প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রীসহ দেশ ও বিদেশের বিত্তবানদের কাছে আর্থিক সহযোগিতা চেয়েছেন।

অপর মেধাবী ছাত্র আপন কর্মকারের পিতার নাম ঋষিকেশ কর্মকার। পিতা পেশায় দর্জির কাজ করেন। মাতা চন্দনা কর্মকার গৃহিনী। মা বাবা ও এক ভাই দুই বোনের অভাবের সংসার। ২০১১ সালে সারিষাদাইর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিএসসিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়ে সে মির্জাপুর উপজেলায় প্রথম স্থান লাভ করে। ২০১৪ সালে জেএসসি পরীক্ষায় ট্যালেন্টপুল বৃত্তি ও গোল্ডেন জিপিএ-৫, বিজ্ঞান বিভাগ থেকে মির্জাপুর এস কে পাইলট মডেল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় হতে ২০১৭ সালের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ এবং ২০১৯ সালে ময়মনসিংহ নটেরডেম কলেজ থেকে এইচ এসসি পরীক্ষায় ৪ দশমিক ৯২ পয়েন্ট পেয়েছে।

অর্থের অভাবে কোচিং করতে না পারলেও নিজের ইচ্চায় এইচ এসসি পাশের পর এ এছর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে বি ইউনিট থেকে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। তার ভর্তির মেধা স্কোর- ৬৫।

এছাড়াও সিলেট শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়েও ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। ভর্তির সুযোগ হলেও অর্থের অভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারছে না বলে অর্পন কর্মকার জানিয়েছেন। দরিদ্র ও অসহায় এই মেধাবী ছাত্র অর্পন প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রীসহ বিত্তবানদের কাছে আর্থিক সহযোগিতা চেয়েছেন।

এ ব্যাপারে সরিষাদাইর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মিসেস মুক্তি সাহা জানায়, ইমরান ও অর্পনের পরিবার খুবই দরিদ্র ও অসহায়। এ পর্যন্ত তিনি তাদের সাহায্য ও সহযোগিতা দিয়ে এগিয়ে নিয়ে এসেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সযোগসহ উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে এই দুই মেধাবী ছাত্রকে আর্থিক সহযোগিতার জন্য তিনি সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন।


আরো সংবাদ



premium cement