২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

হত্যার আগে মোবাইলে মাকে শোনানো হয় ছেলের বাঁচার আকুতি!

প্রতীকী ছবি - সংগৃহীত

‘তোর পোলারে পিটিয়ে মারতেছি, শোন...’ ছেলেকে হত্যার আগে মোবাইল ফোনে কল দিয়ে এই কথাগুলো বলা হয়েছিল নিহত রাসেল খানের মা শেফালী বেগমকে। এরপর চিৎকার চেচামেচি, নিহত রাসেলের বাঁচার আকুতি আর গোঙ্গানীর শব্দ। এরপর মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে রাসেলকে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় রাসেল খান(২৫)। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে মাদারীপুর সদর উপজেলার করদী এলাকায়। নিহত রাসেল করদী এলাকার হাবিব খানের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ৮/১০ দিন পূর্বে করদী এলাকার সামসু কাজীর ছেলে রাসেল কাজী ও তার বন্ধু রাসেল খানের মাধ্যে একটি সিমকার্ড নিয়ে কথাকাটাকাটি এবং হাতাহাতি হয়। এরই জের ধরে গত ২৭ মার্চ বুধবার রাত ৮টার দিকে স্থানীয় সনমন্দি বাজার থেকে রাসেলকে ডেকে নিয়ে চার/পাঁচ জন মিলে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় ও ঘাড়সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে।

এ সময় গুরতর আহত হয় রাসেল খান। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। রাসেলের অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় কর্ত্যবরত চিকিৎসকরা ওইদিন রাতেই তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন।

এরপরের দিন বৃহস্পতিবার দুপুরে ফরিদপুর থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এরপর সোমবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় রাসেল।

নিহত রাসেলর স্ত্রীর গর্ভে তিন মাসের সন্তান রয়েছে। রাসেল পেশায় একজন ভ্যান চালক ছিলেন।

নিহত রাসেলের মা শেফালী বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, রাসেলকে মারধরের সময় তার আর্তনাদ মোবাইল ফোনে কল দিয়ে আমাকে শোনানো হয়। আমার ছেলে বাঁচার জন্য অনেক চিৎকার করেছে তবুও ওকে ছাড়েনি। মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে ফেলে রেখে যায় হামলাকারীরা।

তিনি আরো বলেন, আমার ছেলের বউ গর্ভবতী। অনাগত সন্তান কাকে বাবা ডাকবে? আমি এই হত্যার বিচার চাই।

নিহত রাসেলের খালাতো ভাই জুয়েল মাতুব্বর বলেন, এভাবে একজন বন্ধুকে আরেকজন বন্ধু হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করতে পারে? আমি এ হত্যাকান্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।

এ বিষয়ে মাদারীপুর সদর মডেল থানার এসআই মোঃ শাহিন সরদার বলেন, নিহত রাসেল খানের মাথা, ঘাড়সহ সমস্ত শরীরে হতুড়ি দিয়ে পেটানো হয়। এই কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় নিহতের পরিবার মাদারীপুর বিজ্ঞ আদালতে অভিযুক্তদের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।

এ বিষয়ে মাদারীপুর সদর মডেল থানার এসআই মোঃ শাহিন সরদার বলেন, নিহত রাসেল খানের মাথা, ঘাড়সহ সমস্ত শরীরে হতুড়ি দিয়ে পেটানো হয়। এই কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় নিহতের পরিবার মাদারীপুর বিজ্ঞ আদালতে অভিযুক্তদের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।


আরো সংবাদ



premium cement