২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মানিকগঞ্জে কলেজছাত্র মনির হত্যায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড 

আদালত
মানিকগঞ্জে কলেজছাত্র মনির হত্যায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড  - ছবি : নয়া দিগন্ত

মানিকগঞ্জে চাঞ্চল্যকর কলেজছাত্র মনির হোসেন হত্যা মামলায় চারজনকে মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

মানিকগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ শহীদুল আলম ঝিনুক আজ সোমবার বেলা বারোটার দিকে এই রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- বাদশা মিয়া, লাল মিয়া, আনোয়ার হোসেন ও আজগর চৌধুরী। এদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ডও করা হয়। যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামি আক্তার হোসেনকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে।

রায়ের আদেশের সময় দন্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বাদশা মিয়া ও লাল মিয়া উপস্থিত ছিলেন। বাকি সবাই পলাতক রয়েছে।

এ মামলায় তিনজনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।

সরকার পক্ষের পিপি আব্দুস সালাম জানান, মানিকগঞ্জ খান বাহাদুর আওলাদ হোসেন খান কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র মো: মনির হোসেনকে ২০১৫ সালের ১০ সেপ্টেম্বর ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে অপহরণ করে। পরের দিন ১১ সেপ্টেম্বর মনির হোসেনের মা মালেকা বেগম বাদী হয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলায় বাদশা মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। আসামি বাদশা মিয়ার স্বীকারোক্তি মতে পুলিশ ১২ সেপ্টেম্বর বংশি নদীর ভাষা শহীদ রফিক সেতুর কাছ থেকে মনিরের লাশ উদ্ধার করে।

পরে অপহরণকারীরা সাভারের নামাবাজার খেয়াঘাটে আসামি লাল মিয়ার ট্রলারে করে নিয়ে রানা প্লাজার ধবংসস্তূপের খন্ড খন্ড স্লাপ দিয়ে মনির হোসেনকে বংশাই নদীতে হাত, পা, কোমর ও গলা বেঁধে জীবন্ত নদীতে ফেলে হত্যা করে।

এঘটনায় ২০১৫ সালের ৫ অক্টোবর মানিকগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এক নম্বর আসামি বাদশা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তমূলক জবানবন্দিতে হত্যার কথা স্বীকার করেন।

আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ১৯ এপ্রিল বিজ্ঞ আদালত দ:বি: ৩৬৫/৩৪/৩৮৫/৪৮৬/৩০২/২০১ ধারায় অভিযোগ গঠন করেন। পরবর্তীতে রাষ্ট্রপক্ষ মামলায় মোট ২৬ জন সাক্ষীর জবানবন্দী গ্রহণ করেন।

নিহতের বাবা পরোশ আলী জানান, ‘এই রায়ে আমি খুশি। আজ ছেলের হত্যার প্রকৃত বিচার পেয়েছি। আর যেনো বাবা-মায়ের বুক কেউ খালি করতে না পারেন। তাই অতি দ্রুত রায় কার্যক্রর দেখতে চাই।’

আসামিপক্ষের আইনজীবী শিপ্রা সাহা এই রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, তারা উচ্চ আদালাতে আপিল করবেন। সেখানে ন্যায়বিচার পাবেন।

মামলার বিবরণীতে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১০ সেপ্টেম্বর মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের বিদেশ প্রবাসী পরোশ আলীর একমাত্র পুত্র মানিকগঞ্জ খান বাহাদুর আওলাদ হোসের কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র মনির হোসেন একই এলাকার বাদশা মিয়া সেনাবাহীনিতে চাকরি দেয়ার কথা বলে সাভার নিয়ে যায়। এর পর বাদশার সাথে সেখানে যোগ হয় মো: আক্তার হোসেন জামাল ওরফে কামাল, মো: আজগর চৌধুরী, মো: শুকুর আলী, মো: লাল মিয়া, মো: আনোয়ার হোসেন, মো: মাসুদ ও মো: আলম। তাদের সবার উদ্দেশ্য ছিল মনিরকে হত্যা করবে এবং তার পরিবারের কাছে মোটা অংকের মুক্তিপণ দাবিও করবে।

সাভার নিয়েই ওই দিন রাতেই পুর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সকলে মিলে মনিরের হাত-পা, চোখ-মুখ ও মাজা দড়ি দিয়ে বেঁধে একটি নৌকায় উঠায়। পরে রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপের পাথর দিয়ে মনিরকে দড়ির সাথে বাঁধা হয়। এর পর মোবাইলে মনিরের মায়ের কাছে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে হত্যাকারীরা। এর আগেই মোবাইলে রেকর্ড করা হয় মনিরের কথা ও কান্নার শব্দ।

ফোনে মনিরকে নির্যাতনের আওয়াজ শোনার পর মনিরের মা মালেকা বেগম দিশেহারা হয়ে পড়েন। মুক্তিপণের টাকা দিতেও রাজি হন। কিন্ত তার তার আগেই সর্বনাশ হয়ে যায়। ওই দিন রাতের কোনো এক সময় নৌকায় করে সাভারের নামাবাজার থেকে হেমায়েতপুর-সিংগাইর সড়কের শহীদ রফিক সেতুর কাছে নিয়ে জীবন্ত অবস্থায়ই নদীতে নিক্ষেপ করে মনিরকে হত্যা করা হয়।


আরো সংবাদ



premium cement
দেশের জন্য কাজ করতে আ’লীগের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর শনিবার যেসব এলাকায় ১২ ঘণ্টা বন্ধ থাকবে গ্যাস সরবরাহ ওলামা দলের আংশিক কমিটি ঘোষণা নোয়াখালীতে ইয়াবাসহ গৃহবধূ গ্রেফতার জুলাইয়ে ব্রাজিল সফরে যেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে বিশ্বকে চমকে দিলো ভানুয়াতু বিতর্কিত ক্যাচের ছবির ক্যাপশনে মুশফিক লিখেছেন ‘মাশা আল্লাহ’ উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় ৭৩ জনকে বহিষ্কার করলো বিএনপি মিরসরাইয়ে অবৈধ সেগুনকাঠসহ কাভার্ডভ্যান জব্দ মানিকগঞ্জে আগুনে পুড়ে যাওয়া মলিরানীর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বিশ্বরেকর্ড ইন্দোনেশিয়ার নারী ক্রিকেটার রোহমালিয়ার

সকল