২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

‘আতশবাজি বিক্রির টাকার ভাগ নিয়ে খুনের পর লাশ ফেলা হয় পদ্মায়’

আটক অভিযুৃক্ত - সংগৃহীত

মাদারীপুরের শিবচরের মটরসাইকেল চালক আনোয়ার বেপারির হত্যা রহস্য উম্মোচিত হয়েছে। আতশবাজি ও পটকা জাতীয় বোমা বিক্রির ভাগবাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দেও জের ধরেই খুন হয় আনোয়ার। লাশের যাতে খোজ না মিলে এ জন্য ট্রলারের গ্রাফি দিয়ে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে মৃতদেহ ফেলা হয় পদ্মা নদীতে।
রবিবার রাতে নেত্রকোনার কমলকান্দা থেকে গ্রেফতারের পর এ মামলার অন্যতম আসামী মনির ফকির পুলিশের কাছে চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি দিয়েছে। এ হত্যাকান্ডে ১০-১২ জন জড়িত বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে। ঈদের পাঞ্জাবী দেয়ার কথা বলে কৌশলে আনোয়ারকে ডেকে আনা হয়েছিল বলে ঘাতক মনির জানায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, উপজেলার কাঠালবাড়ি ইউনিয়নের তোতা বেপারিকান্দি গ্রামের আনোয়ার বেপারি (আয়নাল-২৮) সাথে আতশবাজি ও পটকা বিক্রি নিয়ে একই এলাকার মনির ফকিরের গ্রুপের সাথে বিরোধ চলছিল। এরই জের ধরে প্রভাবশালী বংশের সন্তান আনোয়ার মনির গ্রুপের লোকদের মারধর করে। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে ১৩ জুন রাতে ঈদের পাঞ্জাবী দেয়ার কথা বলে আনোয়ারকে ডেকে আনে মনির, আতিকসহ ওই গ্রুপের ১০-১২ জন।
এরপর প্রথমে আনোয়ারের গলায় ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। পরে ট্রলারে উঠিয়ে ধারালো গ্রাফি দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে লাশ ট্রলার যোগে মাঝ পদ্মা নদীর স্রোতে নিয়ে যায় খুনিরা। লাশের হাত পা বেধে ফেলে দেয়া হয় পদ্মায়।
খুনিদের ধারণা ছিল মূল স্রোতে ভেসে লাশটি নিখোঁজ হয়ে যাবে। লাশটি নদীতে ফেলে ঘাতকদের এক গ্রুপ ট্রলারে করে মাওয়ায় ও অপর গ্রুপ নদীর অপর একটি চরে নেমে পালিয়ে যায়। ১৫ জুন লাশটি ভেসে উঠলে পদ্মা নদীর মুন্সিগঞ্জের লৌহজং এর চায়না প্রজেক্টের কাছ থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। লাশের মাথা ও গলায় ৩টি ধারালো অস্ত্রে আঘাতের চিহৃ ছিল। লাশ উদ্ধারের দিনই আতিক ফকির নামের একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
শিবচর থানার এসআই আমির হোসেনের নেতৃত্বে রবিবার রাতে মনিরকে নেত্রকোনার কমলকান্দার নাজিরপুর বাজার থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মনির ধর্মীয় কাজে যাওয়ার নাম করে সেখানে পালিয়ে ছিল। নিহত আনোয়ার উপজেলার কাঠালবাড়ির আইয়ুব আলী বেপারির ছেলে। মনির ফকির শিবচরের কাঠালবাড়ি ইউনিয়নের মাগুরখন্ড গ্রামের হাজী নুরুল ইসলাম ফকিরের ছেলে।
গ্রেফতারকৃত মনির ফকির বলেন, পটকা ও আতশবাজি বিক্রির ভাগ নিয়ে আনোয়ার আমাদের উপর অত্যাচার করতো। তাই আমরা পরিকল্পিতভাবে ঈদের পাঞ্জাবী দেওয়ার কথা বলে আনোয়ারকে বাড়ি থেকে ডেকে এনে হত্যা করি। লাশ যাতে না পাওয়া যায় তার জন্য রশি দিয়ে লাশের হাত-পা বেধে পদ্মা নদীতে ফেলে দেই।
এসআই আমির হোসেন বলেন, পটকা ও আতশবাজি নিয়ে এ হত্যাকান্ডে ১২-১৫ জন জড়িত। হত্যা ও জড়িতদের সব তথ্য আমাদের হাতে এসেছে।
শিবচর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ শাজাহান মিয়া বলেন, মনিরকে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে হত্যা রহস্যটি উম্মোচন হয়েছে। আসামীদের ধরতে অভিযান চলছে। মনিরকে আদালতে প্রেরন করা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement