২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

গুম হওয়া ভাইয়ের অপেক্ষায় ৪ বছর ৯ মাস

ঢাকায় অনুষ্ঠানে নিখোঁজদের আত্মীয়স্বজনরা - ছবি : বিবিসি

যারা গুমের শিকার হয়েছেন তাদের জন্য আজ বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে জাতিসঙ্ঘ ঘোষিত ‘ইন্টারন্যাশনাল ডে অফ দ্যা ভিকটিমস অব এনফোসর্ড ডিসঅ্যাপিয়ারেনসেস’।

বাংলাদেশে গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারগুলোর সংগঠন ‘মায়ের ডাক’-এর দেয়া তথ্য অনুযায়ী , ২০১৩ সাল থেকে দেশে গত পাঁচ বছরে গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৭২৭ জন।

গুম হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে কেউ কেউ ফেরত এলেও তাদের অধিকাংশ এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।

আর এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশনের হিসেবে, গত নয় বছরে গুম হয়েছে ৪৩২ জন - যার মধ্যে সন্ধান মিলেছে ২৫০ জনের।

বাংলাদেশে গুমের তালিকায় রয়েছেন সাবেক সাংসদ ইলিয়াস আলী, সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার চৌধুরী আলম, সাবেক রাষ্ট্রদূত মারুফ জামান ছাড়াও অনেক রাজনৈতিক কর্মীসহ নানা পেশার মানুষ।

২০১৩ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় নিখোঁজ হন সাজেদুল ইসলাম।

তার পরিবারের অভিযোগ, র‍্যাব পরিচয় দিয়ে কিছু লোক তাকে তুলে নেয়। তিনি ছিলেন বিএনপির একজন মাঠ পর্যায়ের নেতা।

একই দিনে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজের আরো সাতজন নিখোঁজ হয়ে যান, যাদের সন্ধান এখনও মেলেনি।

ওইসব পরিবারের অভিযোগ, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাই তাদের তুলে নিয়ে গেছে।

যদিও পুলিশ বা র‍্যাবের পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ বরাবরই প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।

সাজেদুল ইসলামের বোন সানজিদা ইসলাম বলছেন, সাড়ে চার বছর ধরে প্রতিটি মুহূর্তে ভাইয়ের জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনছেন তারা।

‘আমার ভাই বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় আরও পাঁচজন বন্ধুসহ আড্ডা দিচ্ছিলেন, সন্ধ্যার পর ৪ঠা ডিসেম্বর রাতে। র‍্যাব-১ লেখা একটি ভ্যান ও মাইক্রোতে করে র‍্যাবের ইউনিফর্ম পরা কয়েকজন আসেন। তারা আমার ভাইসহ অন্যদের মুখ বেঁধে তুলে নিয়ে যান।’

সানজিদার দাবি, সেখানে কিছু নির্মাণ শ্রমিক ছিলেন যারা এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন।

তিনি বলেন, ‘এক ঘণ্টার মধ্যেই পরে র‍্যাব অফিসে যাই আমরা। তারা অস্বীকার করে। পরে আমরা থানায় যাই জিডি করার জন্য। কিন্তু পুলিশ জিডি গ্রহণ করেনি। এই চার বছর নয় মাস আমরা প্রশাসনের প্রতিটি জায়গায় গিয়েছি।’

‘পুলিশ র‍্যাবের নাম থাকায় জিডি নেয়নি, মামলাও নেয়নি থানায়। প্রায় তিন বছর নানা চেষ্টার পর আমার মা একটা রিট করেন হাইকোর্টে। আদালত একটি রুল জারি করে, কিন্তু পরে আর শুনানি হয়নি।’

এতদিন পর ভাইয়ের সন্ধান পাওয়ার আশা করেন কি? - এমন প্রশ্নের জবাবে সানজিদা ইসলাম বলেন, ‘আমরা আশা করি। ভাইয়ের দু’টি মেয়ে আছে। আমার মা প্রতিটি মুহূর্ত অপেক্ষা করছেন। যেভাবে হঠাৎ করে নিয়ে গেছে হয়তো সেভাবেই একদিন হঠাৎ করে ফেরত দেবে।’

‘চার বছর নয় মাস পার করেছি। আশা করি আমার ভাই ফেরত আসবেন। তিনি শুধু রাজনীতি করতেন। আর কোনো দোষ ছিলো না।’

সানজিদা ইসলাম জানান, মানবাধিকার কমিশন ছাড়াও জাতীয় আন্তর্জাতিক নানা সংস্থাকে জানানো হয়েছে কিন্তু সরকারের তরফ থেকে কোনো উদ্যোগ তাদের চোখে পড়েনি।

বাংলাদেশে বেশ কিছু গুমের ঘটনায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হলেও এসব বাহিনী এবং সরকারের পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ নাকচ করে দেয়া হয়েছে।

বরং সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিখোঁজ হয়ে যাওয়া লোকদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement
চুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত, ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত আমদানি ব্যয় কমাতে দক্ষিণাঞ্চলের সূর্যমুখী তেলের আবাদ পাকুন্দিয়ায় গানের আসরে মারামারি, কলেজছাত্র নিহত আবারো হার পাকিস্তানের, শেষ সিরিজ জয়ের স্বপ্ন পাটকেলঘাটায় অগ্নিকাণ্ডে ৩ দোকান পুড়ে ছাই ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা শুরু দোয়ারাবাজারে পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীকে হত্যা : স্বামীর আমৃত্যু কারাদণ্ড গাজীপুরে ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রীর লাশ উদ্ধার ভারতে দ্বিতীয় পর্বে ৮৮ আসনে ভোট খালেদা জিয়ার সাথে মির্জা ফখরুলের ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ অব্যাহত

সকল