২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ঝাড়ফুঁকের নামে নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ

ধর্ষণ
প্রতিকী ছবি - ছবি: সংগৃহীত

বরিশালের উজিরপুর উপজেলায় ভণ্ড কবিরাজের বিরুদ্ধে ঝাড়ফুঁকের নামে এক নারীকে (৩০) ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ মঙ্গলবার বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত ভণ্ড কবিরাজ আকবর মোল্লা (৪৫)। তিনি উপজেলার শোলক ইউনিয়নের মধ্য ধামুরা গ্রামের মৃত আজাহার মোল্লার ছেলে।

গত মঙ্গলবার উপজেলার মধ্য ধামুরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তবে বিষয়টি এতদিন এলাকার প্রভাবশালীদের হুমকির কারণে প্রকাশ পায়নি বলে অভিযোগ ওই ধর্ষিত নারীর স্বজনদের।

ধর্ষণের শিকার ওই নারীর স্বজনরা জানায়, ১০ বছর আগে শোলক ইউনিয়নের উত্তর ধামুরা গ্রামের ওই নারীর সঙ্গে তার চাচাতো ভাইয়ের বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে একটি ছেলেসন্তানের জন্ম হয়। পাঁচ বছর আগে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে। দুই বছর আগে সন্তানকে দত্তক রেখে সৌদি আরবে পাড়ি জমান ওই নারী।

গত ২৩ আগস্ট তিনি দেশে ফিরে ধামুরা গ্রামে খালার বাড়িতে আশ্রয় নেন। হঠাৎ শারীরিক অসুস্থতা দেখা দিলে তিনি ডাক্তার ও কবিরাজের শরণাপন্ন হন। কিন্তু তার অবস্থার অবনতি ঘটলে একপর্যায়ে তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন।

এই সুযোগে ভণ্ড কবিরাজ আকবর মোল্লা ওই নারীকে সুস্থ করার কথা বলে ঝাড়ফুঁকের নামে প্রথমে গোসল করান। এরপর তার খালাকে কাঁচা হলুদ আনতে পাঠিয়ে ওই মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে ঘরে নিয়ে বিবস্ত্র করে ধর্ষণ করেন আকবর মোল্লা। কিছু সময় পর তার খালা ঘরে ঢুকে বিষয়টি দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করলে আকবর পালিয়ে যান।

তারা আরো জানান, এলাকার বেশ কিছু প্রভাবশালী আকবর মোল্লার পক্ষ নিয়ে ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে।

উজিরপুর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিশির কুমার পাল বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই, তবে অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আরো পড়ুন :
ডুমুরিয়ায় ভণ্ড পীরের আস্তানায় প্রতারিত মানুষ
ডুমুরিয়া (খুলনা) সংবাদদাতা, ০৯ আগস্ট ২০১৮
ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগরে থেমে নেই কথিত সেই পীর বাবার ভণ্ডামী। হৃদয় চমকানো কথা বলে বশ করেছেন গ্রামের সরল সোজা মহিলাদের। বাস্তবে কোন রোগী সুস্থ না হলেও হুজুগে মাতা মহিলারা লাইন দিচ্ছেন তার আস্তানায়। প্রশাসনের নজরদারিতে আস্তানা সাময়িক গুটিয়ে নিলেও এবার তিনি পানিতে ফুঁক দিচ্ছেন আটঘাট বেঁধে। এজেন্টের মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকায় গিয়েও তিনি রোগী দেখছেন। পীর বাবার পানি পড়াতে নাকি ভাল হয় সর্দি জ্বর থেকে শুরু করে বাত ও কোমরে ব্যথা, চর্মরোগ, পিত্তথলি পাথর, গ্যাস্টিক, জন্ডিস, অর্শ্ব, এলার্জী, সাপে কাটা, বিড়াল কুকুরে কামড়ানো, বাড়ি বন্ধ, প্রেম সংক্রান্ত, জ্বীনের আছরসহ নানা জটিল ও কঠিন সমস্যা।

খুলনা জেলার ডুমুরিয়ার চুকনগরে কথিত পীর বাবার নাম আঃ লতিফ। রোস্তমপুর গ্রামের মোকতার মোড়লের ছেলে। বয়স ৩৫ বছরের মত। চুকনগর হাইস্কুল রোডের একটি ঘরে তার আস্তানা। প্রতিদিন শত শত ভক্ত রোগী পানি, তেল, কলার মোচা পড়াসহ নানা তদবীর নিতে আসে পীর বাবার সান্নিধ্যে। সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ১ টা এবং বিকাল ৪ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত রোগী দেখেন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে আস্তানায় গিয়ে দেখা যায় টেবিলের উপর পানি তেল ও দুধের বোতল, কলার মোচা, মাটি মাদুলীসহ নানা তদবীরের সামগ্রী। আর বাইরে অসংখ্যা মহিলাদের লাইন। সবার হাতে পানি ও তেলের বোতল। একেক জনকে একেকভাবে চিকিৎসা করছেন তিনি। তার আস্তানায় ৪টি সাইন বোর্ড ছিল। পত্রিকায় সংবাদ ও প্রশাসনের চাপে তা সরিয়ে ফেলেন। যার একটিতে লেখা ছিল শিক্ষাগত যোগ্যতা, একটিতে রোগের চিকিৎসা ফি। সাপে কাটা ফি ৫০০ টাকা, কুকুরে কামড়ানো ফি ২৫০ টাকা, বিড়ালে কামড়ানো ফি ১৫০ টাকা, অশ্ব রোগী ২০০ টাকা, জ্বিনে ধরা ফি ৩০০ টাকা, প্রয়োজনে বারণ ফি ১০০ টাকা, বাড়ি বন্ধ করা ফি ৩০০ টাকা।

একটি সাইন বোর্ডে লেখা আছে প্রথম সাক্ষাত ৫০ টাকা, দ্বিতীয় সাক্ষাত ৩০ টাকা। আরেকটি সাইন বোর্ডে লেখা- আল্লাহর রহমত চাই, আপনাদের সহযোগিতা চাই, ২০১৯ সালে হজ্ব করতে চাই। এসময় পীর বাবার কাছে চিকিৎসার কোন সনদ আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন কোন সনদ নেই আল্লাহর কালাম পড়ে ফু দিলে সব রোগ ভাল হয়ে যায়। আস্তানায় উপস্থিত কয়েকজন রোগীর সাথে কথা হয় সাংবাদিকদের। এদের মধ্যে রাবেয়া বেগম (৬০) এসেছেন এলার্জী রোগ নিয়ে, রওশানারা (৪০) এসেছেন পেটে ব্যথা রোগের চিকিৎসা নিতে। মাজায় ব্যথা সারাতে এসেছেন হাফিজা বেগম(৪০)।এমনিভাবে বহু রোগী তাদের রোগ নিরাময়ের জন্য হুজুরের দরবারে এসেছেন। কিন্তু তাদের সবাই প্রথম বারের মত এসেছেন। আশপাশের অনেকেই হুজুরের পানি পড়াতে সুস্থ হয়ে গেছেন এই গুজব শুনে এসেছেন তারা।

পুরাতন রোগীদের মধ্যে কথা হয় রোস্তমপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুক্তি ম-লের সাথে তিনি কয়েকমাস আগে মেরুদ-ের হাড়ের ব্যথা নিয়ে হুজুরের কাছে গিয়েছিলেন বলে জানান; তবে মাসাধিককাল যাবৎ তেল-পানি ব্যবহার করে সুস্থ হতে না পেরে তিনি বর্তমানে ভারতের ডাক্তার দেখাচ্ছেন বলে জানান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চুকনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জনৈক শিক্ষক বলেন স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে অনেক রোগীর ভিড় দেখে পায়ের ব্যথার জন্যে আমিও গিয়েছিলাম, কিন্তু ১৫দিন তেল-পানি ব্যবহারে কোন ফল না পেয়ে অবশেষে অন্য ডাক্তার দেখাচ্ছি। এব্যাপারে জানতে চাইলে ডুমুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ এ এস এম মারুফ হাসান বলেন; চিকিৎসা বিজ্ঞানে তেল-পানিপড়া, ঝাড়ফুঁক, গলায় মালা পরানো এসব কোন কিছুতেই রোগ ভাল হওয়ার কোন তথ্য লেখা নেই। তবে, এসব কুচিৎিসায় অসুস্থ লোক ভাল না হলেও সুস্থ লোক অসুস্থ হয়ে যায়। এ বিষয়গুলো যদি এই জামানায় এসেও সাধারণ মানুষ না বোঝে তাহলে আর কিই বা করার আছে।

ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ শাহনাজ বেগম বলেন, আমি কয়েকমাস এখানে যোগদান করেছি। এবিষয়ে আমি কিছু জানতামনা। তবে লাইসেন্স ছাড়া তিনি কিভাবে চিকিৎসা করেন? আর তেল-পানিপড়া দিয়ে কখনও রোগ ভাল হয়না। এ ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

দেখুন:

আরো সংবাদ



premium cement
৪৬তম বিএসএস প্রিলি পরীক্ষা : শুরুতেই স্বপ্নভঙ্গ ৮১ শিক্ষার্থীর মরুর উষ্ণতায় ক্ষতির মুখে কৃষি ছেলেদের কারণে বিপাকে মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির দুই বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে ফ্রান্স, ব্রাজিল ও প্যারাগুয়ে সফরে যাচ্ছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ড সফরকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক বললেন প্রধানমন্ত্রী লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশী যুবক নিহত এখনো শেষ হয়নি বিতর্কিত আউটের রেশ, ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ মুশফিকের ‘ফ্রি ভিসার গল্প’ আর শূন্য হাতে ফেরা লাখো শ্রমিক নোয়াখালীতে প্রবাসীর স্ত্রীর ব্যক্তিগত ছবি দেখিয়ে চাঁদা আদায় দেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে, অথচ বিরোধী দল দেখে না : কাদের

সকল