হুমায়ুন সাঈদীর দাফন সম্পন্ন
- পিরোজপুর ও ইন্দুরকানী সংবাদদাতা
- ২০ জুন ২০১৮, ১৫:১৪, আপডেট: ২০ জুন ২০১৮, ১৫:৫৭
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছোট ভাই হুমায়ুন কবির সাঈদীর (৫৬) দাফন আজ বুধবার সম্পন্ন হয়েছে।
ঢাকার মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মঙ্গলবার প্রথম জানাজায় মাওলানা সাঈদীর মেঝ ছেলে শামীম বিন সাঈদী ইমামতি করেন।
বুধবার সকাল ৯টায় তার নিজ গ্রাম পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার এস.ডি মদিনাতুল উলুম দাখিল মাদরাসা ময়দানে মাওলানা আব্দুল বারীর ইমামতিতে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বুধবার জোহর নামাজের পর খুলনার দারুল কোরআন সিদ্দিকিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা ইদ্রিস আলীর ইমামতিতে পিরোজপুরের সাঈদী ফাউন্ডেশন মাঠে তৃতীয় জানাজা শেষে সাঈদী ফাউন্ডেশনের মসজিদ সংলগ্ন মাওলানা সাঈদীর বড় ছেলে মাওলানা রাফিক বিন সাঈদীর কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।
জানাজায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা সাঈদীর সেজ ছেলে ইন্দুরকানী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদ সাঈদী, পিরোজপুর জেলা জামায়াতের আমীর তাফাজ্জাল হোসাইন ফরিদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পিরোজপুর জেলা সভাপতি মাওলানা ইয়াহিয়া, জেলা বিএনপির সদস্য ব্যারিস্টার মেজর (অব.) এম. সরোয়ার হোসেন, মাওলানা সাঈদীর মেজ ভাই মোস্তফা আহসান সাঈদী, জামায়াত নেতা মাওলান আব্দুর রব, ছাত্রশিবিরের জেলা সভাপতি মো: আল-আমিন শেখসহ ছাত্রশিবির, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্য, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছোট ভাই আলহাজ হুমায়ুন কবির সাঈদী (৫৬) সোমবার সকালে ঢাকার ইব্রাহীম কার্ডিয়াক (বারডেম) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন।
আরো পড়ুন :
মাওলানা সাঈদী প্যারোলে মুক্তি পাননি
মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে প্যারোলে মুক্তি দেয়নি সরকার। মাওলানা সাঈদীর ছোট ভাই হুমায়ুন কবির সাঈদীর নামাজে জানাজায় অংশ নিতে গত সোমবার তার প্যারোলে মুক্তির আবেদন করা হয় পরিবারের পক্ষ থেকে।
মাওলানা সাঈদীর ছেলে ইন্দুরকানী উপজেলা চেয়ারম্যান মাসুদ সাঈদী নয়া দিগন্তকে বলেন, আমরা আশা করেছিলাম সরকার মানবিক কারণে তাকে কিছু সময়ের জন্য মুক্তি দেবে। গত সোমবার বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন জমা দেয়ার পর আমি এবং আমাদের আইনজীবীর মাধ্যমে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করি মন্ত্রণালয়ের সাথে। আমাদের জানানো হয়, তার মুক্তির বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তার মুক্তি হবে। তাদের এ আশ্বাসের কারণে আমরা নামাজে জানাজার নির্ধারিত সময় জোহর থেকে আসরে পরিবর্তন করেছি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সরকার তাকে মুক্তি দেয়নি।
মাসুদ সাঈদী বলেন, আব্বাকে মুক্তি না দেয়ায় শেষ পর্যন্ত আমার বড় ভাই শামীম সাঈদী চাচার জানাজার নামাজ পড়িয়েছেন। মতিঝিল বয়েজ স্কুল মাঠে বিকেল ৪টায় জানাজার নামাজ হয়েছে। নামাজে জানাজার পর পিরোজপুরে লাশ নিয়ে যেতে হবে তাই আসরের পর পর্যন্ত আর অপেক্ষা করা হয়নি।
এ দিকে মাওলানা সাঈদী প্যারোলে মুক্তি পেতে পারেন এ খবরে কয়েক হাজার ভক্ত জোহরের নামাজের আগে থেকেই ভিড় করেন মতিঝিল বয়েজ স্কুল মাঠে। তাদের আশা ছিল মাওলানা সাঈদীকে একনজর দেখা।
গত সোমবার সকালে ঢাকার ইব্রাহীম কার্ডিয়াক (বারডেম) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন মাওলানা সাঈদীর ছোট ভাই হুমায়ুন কবির সাঈদী (৫৬)।
মাওলানা সাঈদীকে এর আগে দুইবার প্যারোলে মুক্তি দেয়া হয়। প্রথমবার ২০১১ সালের ২৮ অক্টোবর মুক্তি পান তার মা গুলনাহার ইউসুফের মৃত্যুর পর। দ্বিতীয় বার মুক্তি পান ২০১২ সালের ১৪ জুন তার বড় ছেলে রাফিক বিন সাঈদীর মৃত্যুর পর। প্যারোলে মুক্তি পেয়ে তিনি তার মা এবং ছেলের জানাজার নামাজ পড়ান। প্রতিবার মাওলানা সাঈদীর প্যারোলে মুক্তির পর অগণিত মানুষের ঢল নামে জানাজার মাঠে। রাফিক বিন সাঈদীর জানাজার নামাজও অনুষ্ঠিত হয়েছিল মতিঝিল বয়েজ স্কুল মাঠে। মাওলানা সাঈদীর মা ২৭ অক্টোবার ২০১১ এবং রাফিক বিন সাঈদী ১৩ জুন ২০১২ সালে ইন্তেকাল করেন।
২০১০ সালের ২৯ জুন গ্রেফতার করা হয় মাওলানা সাঈদীকে। ১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।