২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রেলযাত্রার নিরাপত্তায় করণীয়

-

সাধারণত নিরাপদ, আরামদায়ক আর সাশ্রয়ী যোগাযোগব্যবস্থা রেলপথ। এটি অন্য পরিবহনের চেয়ে যেমন নিরাপদ; তেমনি খরচও কম। নানবিধ সুবিধার কারণে যাত্রীরা ট্রেনে যাতায়াত করে থাকেন। রেলওয়ের এক তথ্য মতে, বছরে ৪২ লক্ষাধিক যাত্রী ট্রেনে যাতায়াত করে থাকেন। অন্য দিকে, সারা দেশে দুই হাজার ৮৩৫ কিলোমিটার রেলপথের মধ্যে এক হাজার ১০০ কিলোমিটার লাইনই ঝুঁকিপূর্ণ। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের অব্যবস্থাপনায় প্রায়ই ঘটছে ট্রেন দুর্ঘটনা। প্রাণ হারাচ্ছেন যাত্রীরা। সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার মন্দভাগে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথা ও সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়। এতে ১৬ যাত্রী নিহত এবং আহত হয় অর্ধ-শতাধিক যাত্রী।
নিরাপদ মনে করে লোকাল ও আন্তঃনগর ট্রেনে প্রতিনিয়ত এক জেলা থেকে অন্য জেলায় কর্মক্ষেত্রে যেতে বিপুল যাত্রী রেলভ্রমণ করে থাকেন। কিন্তু তা কতটা নিরাপদ! নারী ও শিশুর নিরাপত্তা কতটুকু? ট্রেনে ইভটিজিং এবং নারী ও শিশু ধর্ষণচেষ্টা এখন আগের চেয়ে বেড়েছে। তারা পদে পদে বিড়ম্বনা আর ঝামেলার শিকার। এসব অঘটনের মূল কারণ যাত্রীর তুলনায় বগির সংখ্যা অপর্যাপ্ত। বগি সঙ্কটে যাত্রীরা বঞ্চিত হচ্ছেন সেবা থেকে। অন্য দিকে, স্টেশনে টিকিট কালোবাজারে বিক্রি করায় যাত্রীরা হয়রানি শিকার হচ্ছেন। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সরকার। রেলের একশ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারী এর সাথে জড়িত রয়েছেন। এ ছাড়া অনেক চেকার টিকিট না দিয়ে যাত্রীদের কাছে থেকে ইচ্ছেমতো টাকা আদায় করছেন। এতেও বিপুল অঙ্কের টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না হয়ে অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পকেটে চলে যাচ্ছে। তা ছাড়াও ভিআইপি ও বিভিন্ন কোটায় ট্রেনের টিকিট রাখা হয় প্রায় ৩৮ শতাংশ। ট্রেন ছাড়ার কয়েক ঘণ্টা আগে সেগুলো চড়া দামে বিক্রি করেন কিছু বুকিং ক্লার্ক থেকে শুরু করে রেলের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা। সরকার রেল খাতে হাজার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করলেও কাক্সিক্ষত উন্নয়নের ছোঁয়া এ খাতে দৃশ্যমান নয়। সর্ষের মধ্যে ভূত থাকায় এমন অবস্থা হয়েছে বলে নাগরিকদের ধারণা। ভূত তাড়াতে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া ছাড়া বিকল্প নেই। অর্থ বরাদ্দ হবে, সে অর্থের সদ্ব্যবহার হবে না, তা হতে পারে না। রেলওয়েকে আধুনিক এবং যুগোপযুগী করে যোগাযোগের সহজ মাধ্যম করে তোলার ক্ষেত্রে যেসব প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তা চিহ্নিত করে অপসারণ করতে হবে। অর নিরাপদ করতে দক্ষ চালক, সহকারী, পয়েন্টম্যান, গেটম্যান, স্টেশন মাস্টারসহ প্রয়োজনীয় নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ দিতে হবে। তাদের নিবিড় নজরদারিতে রাখতে হবে। এতে রেলভ্রমণ নিরাপদ, জনবান্ধব হবে বলে সবার বিশ্বাস। পাশাপাশি দুর্নীতি ও অস্বচ্ছতা দূর করে রেলখাতকে লাভজনক করা সম্ভব। তাই রেলকে দুর্নীতিমুক্ত করতে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করা অতীব প্রয়োজন। হ
লেখক : শিক্ষার্থী, ইবি


আরো সংবাদ



premium cement