১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

রাফায় ফিলিস্তিনিদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ইসরাইলের কোনো পরিকল্পনা নেই

- ছবি : ভয়েস অব আমেরিকা

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছেন, গাজার দক্ষিণে রাফায় আশ্রয় নেয়া ১০ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনিদের নিরাপদ রাখার ব্যাপারে কোনো গ্রহণযোগ্য পরিকল্পনা ইসরাইল এখনো দেয়নি।

তিনি বলেন, সাত মাসের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধ শেষ হলে কী হবে, সে বিষয়েও ইসরাইল কোনো পরিকল্পনা দেয়নি।

কয়েক মাস আগে গাজার উত্তরাঞ্চলে স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের ওপর ইসরাইলি হামলা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য যে ১৩ লাখ ফিলিস্তিনি ইসরাইলের আদেশে দক্ষিণ গাজার রাফায় পালিয়ে এসেছিলেন, তাদের মধ্যে প্রায় তিন লাখ মানুষকে আবার সরে যাবার আদেশ দেয়া হয়েছে। ইসরাইল তাদের এবার রাফার উত্তরপূর্বে, গাজার ভূমধ্যসাগর উপকূলে চলে যেতে বলেছে।

তবে, রোববার টেলিভিশন চ্যানেল এনবিসির ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে ব্লিংকেন বলেন, ফিলিস্তিনিদের নিরাপত্তা দেয়া বা তাদের পর্যাপ্ত মানবিক সাহায্য দেয়ার ব্যাপারে ইসরাইলের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই।

যুদ্ধের পর কী হবে?
ব্লিংকেন বলেন, এখানে অন্য একটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘গাজা যুদ্ধ শেষ হবার পর কী হবে, সে বিষয়ে কোনো পরিকল্পনা আমরা দেখি নাই। কারণ, এখন ইসরাইল যে পথে আগাচ্ছে, তারা যদি রাফা আক্রমণও করে, তারপরও হাজার হাজার সশস্ত্র হামাস রয়ে যাবে।’

যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কূটনীতিক বলেন, ‘উত্তরে যে সব এলাকায় ইসরাইল অভিযান চালিয়েছে, আমরা দেখেছি ওই সব এলাকায়, এমনকি খান ইউনুসেও হামাস ফিরে আসছে।’

ব্লিংকেন বলেন ‘কাজেই, ইসরাইল যে গতিপথে আছে, রাফায় অভিযান চালানো, এমনকি হামাসের অবশিষ্ট ব্যাটালিয়নগুলো পরাস্ত করার জন্য, সেখানে বেসামরিক মানুষকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার সম্ভাবনা থাকে, বিশেষ করে যদি তাদের নিরাপত্তার জন্য কোনো পরিকল্পনা না থাকে। আরো ঝুঁকি থাকে সমস্যার সমাধান না করার, যে সমস্যা আমরা দু’দেশই সমাধান করতে চাই, যার মানে হলো আমরা নিশ্চিত করতে চাই হামাস যেন আর কখনো গাজা শাসন না করে।’

ইসরাইলের প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী যুক্তরাষ্ট্র বারবার রাফায় পূর্ণমাত্রার স্থল অভিযানের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়েছে। কিন্তু ইসরাইলের সামরিক বাহিনী রাফায় বিমান হামলা এবং সীমিত পরিসরে স্থল আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।

বাইডেনের হুঁশিয়ারি
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরাইলের জন্য বরাদ্দ দু’টি অস্ত্রের চালান ৩,৫০০টি ২২৭-কিলোগ্রাম এবং ৯০৭-কিলোগ্রাম বোমা-স্থগিত রেখেছেন। তিনি আশঙ্কা করছেন, এই বোমাগুলো রাফা আক্রমণে ব্যবহার করা হতে পারে।

গত সপ্তাহে বাইডেন আরো বলেন, ইসরাইল রাফায় পূর্ণমাত্রায় অভিযান চালালে তিনি কিছু আক্রমণাত্মক অস্ত্রের চালানও আটকে দেবেন।

যুদ্ধবিরতি এবং হামাসের হাতে ১০০-এর মতো বন্দীর মুক্তি নিয়ে ইসরাইল এখনো যে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে, তা অচলাবস্থার মুখে পড়েছে।

অন্যদিকে, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বারবার বলেন, রাফা থেকে হামাস উৎখাত না করা পর্যন্ত তার দেশ যুদ্ধ থামাবে না। ব্লিংকেন এই চলমান বিশৃঙ্খলা নিয়ে হুঁশিয়ারি দেন।

তিনি বলেন ‘ইসরাইল যে গতিপথে আছে, তাতে তারা সম্ভবত একটা গেরিলা যুদ্ধ পাবে, যেখানে অনেক সশস্ত্র হামাস থাকবে। অথবা তারা (ইসরাইল) যদি চলে যায় তাহলে সেখানে একটা শূন্যতা সৃষ্টি হবে যেখানে নৈরাজ্য চলবে, বা হামাস সেই শূন্যতা পুড়ন করবে।’

‘গাজায় এবং পুরো অঞ্চলেরর জন্য টেকসই ফলাফল এবং নিরাপত্তা পাবার অনেক ভালো একটি পথ নিয়ে আমরা তাদের সাথে কথা বলছি।’

ব্লিংকেন বলেন, ‘এই (যুদ্ধ) শেষ করার সবচেয়ে দ্রুত পথ হচ্ছে হামাস যদি বন্দীদের ছেড়ে দেয়। আমরা একটা যুদ্ধ বিরতি পাবো, যেটার ওপর ভর করে আমরা আরো টেকসই কিছু তৈরি করতে পারবো। সব পক্ষ কথা বলে যাচ্ছে।’

রাজনৈতিক অঙ্গনে বিভক্তি
গাজায় আমেরিকান নীতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনের বিভক্তি রোববার সহজেই অনুমেয় ছিল।

ডেমোক্র্যাটিক দলের ভেতরে ইসরাইলের যুদ্ধ পরিচালনার বিরোধিতা যারা করেন, তাদের সাথে মিত্র প্রগতিশীল দল-নিরপেক্ষ সেনেটর বার্নি স্যন্ডারস, এনবিসি চ্যানেলকে বলেন, ‘ইসরাইলের আর যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সাহায্য থেকে একটি পয়সাও উচিত না। ইসরাইল...সমগ্র ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধে গেছে এবং তার ফলাফল হয়েছে একদম ভয়াবহ।’

রিপাবলিকান দলের সেনেটর লিন্ডসে গ্রেহাম ইসরাইল-হামাস যুদ্ধকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সাথে তুলনা করে এনবিসিকে বলেন, ‘আমরা হিরোশিমা আর নাগাসাকির ওপর দু’টি অ্যাটম বোমা ফেলেছিলাম কেন? যাতে যুদ্ধে না হেরে যুদ্ধ শেষ করা যায়… সেটা সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল… ইসরাইল, তুমি ইহুদী রাষ্ট্র হিসেবে বেঁচে থাকার জন্য যা করার দরকার সেটাই করো।’

গত বছর ৭ অক্টোবর হামাস দক্ষিণ ইসরাইলে অতর্কিত হামলা চালিয়ে প্রায় ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা এবং ২৫০ জনকে বন্দী করলে যুদ্ধের সূচনা হয়। গাজায় ইসরাইলের পাল্টা আক্রমণে ৩৫,০০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে যাদের বেশিভাগ নারী ও শিশু।

সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা


আরো সংবাদ



premium cement
মিয়ানমারে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী শহর থেকে শত শত সৈন্যসহ জেনারেল আটক শনিবার থেকে শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা হবে’ পাওনা টাকা চাওয়ায় চা দোকানির হাত ঝলসে দেয়ার অভিযোগ হাসিনার বিবৃতিকে ভারত সমর্থন করে না : বিক্রম মিশ্রি ডুয়েটে কৃষি যন্ত্রপাতি প্রতিভা অন্বেষণে সেমিনার ও প্রদর্শনী মেলা শুক্রবার গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরি চলাচল স্বাভাবিক মধ্যপ্রাচ্য সফরে যাচ্ছেন ব্লিঙ্কেন, যেসব বিষয়ে আলোচনা হবে ট্রাইব্যুনালে যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি কংগ্রেসে সমালোচকদের সম্মুখীন ব্লিংকেন

সকল