কমলগঞ্জে ৪০টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দী
- আব্দুল হামিদ, কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
- ২১ জুন ২০২৪, ১১:৫৪
কমলগঞ্জে কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে ধলাই নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। পানি বিপৎ সীমার ২৬ সে:মি: ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধলাই নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে কমলগঞ্জ পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কুমড়া কাঁপন এলাকায় হালকা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এতে ৩০টি পরিবার বিপাকে পড়েছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় কমিশনার আহাদুর রহমান বুলুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এলাকার কিছু মানুষের দ্বন্দ্বের কারণে ড্রেন ও রাস্তা নির্মাণে ব্যাঘাত ঘটেছে। মেয়রের সাথে আলাপ করে শিগগিরই সমাধান করা হবে।’
এ দিকে, সদর ইউনিয়নের চৈতন্যগঞ্জ, রহিমপুর ইউনিয়নের চৈত্রঘাট ও মুন্সিবাজার ইউনিয়নের খুশালপুরে প্রতিরক্ষা বাঁধে ভাঙ্গন দিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে প্রায় ৪০টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পানি প্রবেশ করে কমলগঞ্জ-মৌলভীবাজার সড়কের ছয়কুট এলাকায় এবং আদমপুর ইউনিয়নের কাঁঠালকান্দি-আধাকানি সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে।
এছাড়া ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের প্রায় ১২টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে নদীর পানি আরো বৃদ্ধি পেয়ে বন্যার আশঙ্কায় করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড ও এলাকাবাসী।
ভারতের ত্রিপুরার বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ত্রিপুরা ও আসামে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ বৃষ্টির পানি আবার সুরমা, কুশিয়ারা, মনু, ধলাই ও খোয়াই নদী দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে ধলাই নদীতে পানি আরো বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া অফিস সুত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার ২ মি:মি, শুক্রবার ১৩৬ মি:মি ও বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ৯ মি:মি: বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। টানা বৃষ্টিতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ধলাই নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি বৃদ্ধি পেয়ে কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের চৈতন্যগঞ্জ এলাকার এবং রহিমপুর ইউনিয়নের চৈত্রঘাট ও মুন্সিবাজার ইউনিয়নের খুশালপুর গ্রামে ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধে ভাঙন দিয়েছে। ভাঙ্গন দিয়ে পানি প্রবেশ করে নারায়নপুর, চৈতন্যগঞ্জ, বাঁধে উবাহাটা, খুশালপুর ছয়কুট, বড়চেগ, জগন্নাথপুর, প্রতাপী, গোপীনগর, আধকানী, কাঁঠালকান্দীসহ প্রায় ৪০টি গ্রামে বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলি জমি ও বাড়ি ঘরে পানি প্রবেশ করছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাকিব আহমেদ বলেন, ‘ধলাই নদীর পানি বুধবার ও বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় ভানুগাছ রেলওয়ে সেতু এলাকায় ধলাই নদীর পানি বিপৎ সীমার ২৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ধলাই নদীটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রয়েছে।’
এ দিকে, ধলাই নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ধলাই নদীর সাথে সংযুক্ত ড্রেন দিয়ে পানি প্রবেশ করে পৌর এলাকার তিনটি ওয়ার্ডের পানিশালা, চন্ডীপুর ও নছরতপুর এলাকায় বসতবাড়ি, ডাক বাংলো, কমলগঞ্জ মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও বাজারে পানি প্রবেশ করেছে।
ধলাই নদীর ভাঙ্গনকৃত বাঁধ ও ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ এলাকাসমূহ পরিদর্শন করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন, কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো: জুয়েল আহমদ, রহিমপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ বদরুল প্রমুখ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের তিনটি স্থানে ভাঙন দেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘নদীতে পানি বাড়ছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করছি। পর্যাপ্ত পরিমাণের ত্রাণ মজুদ আছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে এবং সার্বক্ষনিক নজরদারি রয়েছে। এছাড়া সবকটি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ও সকালে রহিমপুর ইউনিয়নের বন্যাকবলিত বড়চেগ এলাকা পরিদর্শন করেন কৃষিমন্ত্রী উপাধ্যক্ষ ড. মো: আব্দুস শহীদ এমপি।
এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান ইমতিয়াজ আহমেদ বুলবুল, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা