সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৬৬ সেন্টিমিটার উপরে, প্লাবিত সুনামগঞ্জ শহর
- তৌহিদ চৌধুরী প্রদীপ, সুনামগঞ্জ
- ১৮ জুন ২০২৪, ২০:৫৯, আপডেট: ১৮ জুন ২০২৪, ২২:০২
টানা কয়েক দিনের ভারি বর্ষণ ও ভারতীয় পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে সুনামগঞ্জ শহর ও পাশের কয়েক উপজেলা। শহরতলীর আশপাশে বাসা বাড়িতে প্রবেশ করেছে পানি।
মঙ্গলবার (১৮ জুন) দুপুর ১২টায় সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জের ষোলঘর পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৬ সেন্টিমিটার ও ছাতক উপজেলায় ১৫৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
ভারতের মেঘালয়-চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় সুনামগঞ্জের সীমান্তবর্তী সদর উপজেলার বনগাঁও নখরিয়া ছড়া সীমান্ত নদী, ধোপাজান চলতি নদী, তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা ও পাটলাই নদী এবং দোয়ারাবাজার উপজেলার খাসিয়ামারা, চিলাই ও ছেলা নদী দিয়ে পাহাড়ি ঢলের পানি দ্রুতবেগে প্রবাহিত হয়ে জেলার প্রধান নদী সুরমা কালনী ও কুশিয়ারা কানায় কানায় ভরপুর হয়ে ভাটির জনপদে এই স্বল্পমেয়াদী বন্যার সৃষ্টি হয়েছে।
অন্যদিকে সিলেট জেলার বন্যার পানি ছাতক উপজেলায় আঘাত হেনে জেলার অন্যতম দেখার হাওর ও জাউয়ার হাওর অতিক্রম করে সুনামগঞ্জ শহরকে প্লাবিত করে চলেছে।
সুনামগঞ্জ পৌরসভার, আফতাবনগর, পাটানবাড়ি, ওয়েজখালী, গনিপুর, কালিপুর, মোক্তারপাড়া, মধ্যবাজার, পশ্চিমবাজার, পূর্ব সুলতানপুর, মল্লিকপুর, জামতলা, মরাটিলা, কাজির পয়েন্ট, ধারারগাঁও, মোহাম্মদপুর, নবীনগর, উত্তর আরপিন নগর, তেঘরিয়া, নতুনপাড়াসহ বর্ধিত পৌর এলাকার প্রায় আড়াই সহস্রাধিক বাসাবাড়িতে পানি উঠেছে। সকাল থেকে শহরের কাজির পয়েন্ট, তেঘরিয়া, পূর্ব সুলতানপুর ও নতুনপাড়াসহ প্রায় ২৫টি আবাসিক এলাকার রাস্তাঘাট পানিতে নিমজ্জিত হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
বৃষ্টির পানি পাহাড়ী নদী দিয়ে এপারে নামায় জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষীপুর ইউনিয়নের পাশ দিয়ে প্রবাহিত খাসিয়ামারা নদীর বেড়িবাঁধ ও বোগলাবাজার ইউনিয়নের চিলাই নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে আশপাশের ৫০টি গ্রাম ও সড়ক প্লাবিত হয়ে প্রায় লাখো মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। ইতোমধ্যে বৃষ্টি ও বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে জগন্নাথপুর উপজেলার নিচু এলাকা। সুনামগঞ্জ বিশ্বম্ভরপুর ও তাহিরপুর উপজেলার একমাত্র ১০০ মিটার সংযোগ সড়কটিতে পানি উঠে যাওয়ায় গত তিন দিন ধরে জেলা সদরের সাথে সড়ক যোগাযোগ বিছিন্ন রয়েছে। সদর উপজেলার ইব্রাহিমপুর ডলুরা সড়কটি প্লাবিত হয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন প্রায় লক্ষাধিক মানুষ।
সীমান্তের ওপার মেঘালয় চেরাপুঞ্জিতে গেল চার দিন ধরেই বৃষ্টি হচ্ছে। গেল ৪৮ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে বৃষ্টি হয়েছে ৩৬৫ মিলিমিটার এবং সীমান্তের ওপারে হয়েছে ৪৪১ মিলিমিটার।
সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি অধ্যক্ষ শেরগুল আহমেদ বলেন, শহরের প্রধান সড়কে পানি উঠেছে। অনেক মানুষের বাসা বাড়িতে পানি। আমদের উকিলপাড়া প্রেসক্লাবের ভিতরে হাঁটুপানি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (পাউবো) মামুন হাওলাদার বলেন, সুরমা, কুশিয়ারা, কালনী নদীর পানি মেঘনা নদীতে গিয়ে প্রবাহিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত কিছুটা দুর্ভোগ বাড়বে। তবে আগামী তিন দিনের মধ্যে পানি স্থির হয়ে ধীরে ধীরে কমতে পারে। যদি আগামী দুই দিন এ বৃষ্টি আরো বাড়ে। তাহলে ওই অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, ‘সুনামগঞ্জ বন্যা শুরু হচ্ছে। তবে ভয়ের কোনো কারণ নেই। আমার বাসায়ও পানি উঠেছে। আমি অফিসিয়াল কাগজপত্র ও আসবাবপত্র দোতলায় উঠাচ্ছি। জেলায় বন্যা শুরু হয়েছে আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। সকলকে ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি মোকাবেলা করার অনুরোধ জানান। জেলায় মোট ৫১৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। প্রশাসনের উদ্যোগে খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা