২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ওসমানীনগরে নদীগর্ভে বিলিন রাস্তা, কবরস্থান ও ফসলি জমি

ওসমানীনগরে নদীগর্ভে বিলিন রাস্তা, কবরস্থান ও ফসলি জমি - ছবি : নয়া দিগন্ত

সিলেটের ওসমানীনগরের সাদীপুর ইউনিয়নের সাদীখালের ভাঙ্গনে নদীগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে পশ্চিম সুন্দিখলা গ্রামের ভেতরের রাস্তা, মসজিদের দেয়াল, কবরস্থান ও ফসলি জমি।

অতীতে একবার গ্রামের মসজিদটি নদীর ভাঙ্গনে তলিয়ে গেলে গ্রামবাসি বর্তমান স্থানে পুনর্নিমাণ করেন। তখন নদীতে বিলিন হয়ে যায় গ্রামের পুরানো রাস্তা, ফসলি জমি, বাচ্ছাদের খেলার মাঠ।

এরপর থেকে প্রতি বছর বর্ষার মৌসুমে নদীর স্রোত বৃদ্ধি ফেলে নদীর গভীরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং শুকনো মৌসুমে নদীর পানি নিচে নেমে গেলে ভাঙ্গন শুরু হয়। ফলে এক সময়ের ছোট্ট সাদীখাল এখন রুপ নিচ্ছে খুবই গভীর ও প্রশ্বস্থ নদীতে। আর নদীর ভাঙ্গনের কবল থেকে রেহাই পাচ্ছেনা গ্রামের মানুষে প্রার্থনার মসজিদ, চলাচলের রাস্তা, কবরস্থান, ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি।

জানা যায়, উজান থেকে নেমে আসা পানির প্রবাহে উপজেলার পশ্চিম পৈলনপুর ইউনিয়ন হয়ে সাদীপুর ইউনিয়নের ভেতর দিয়ে উমরপুর ইউনিয়নের বানাইয়া হাওরে গিয়ে মিশেছে সাদীখালটি। নামে সাদীখাল হলেও বর্তমানে এটি একটি নদীর আকার ধারণ করছে। বর্ষার মৌসুমে পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেলে এর স্রোতে বানাইয়া হাওরসহ আশপাশের হাওরের সাথে মিশে কুশিয়ারা নদীর সাথে মিলিত হয়ে ভাটিতে প্রবাহিত হয়। এলাকার প্রবীন লোকদের ভাষ্য মতে প্রায় তিন যুগ আগে এ খাল অনেক ছোট ছিল। তখনকার সময়ের ছোট ছেলেরা খেলাধুলা করে বিকালে সাতরিয়ে খাল পাড়ি দিয়েছেন। কিন্তু বর্তমানে খালটির গতি বৃদ্ধি পেয়ে এবং তীর ভেঙে নদীর রুপ ধারণ করেছে। বিগত তিন যুগে ভেঙে নদীর গর্ভে বিলিন হয়েছে পশ্চিম সুন্দিখলা গ্রামের পুরাতন মসজিদ, গ্রামের রাস্তা, ঘরবাড়ি, ফসলি জমি। গেল দুই বছর ধরে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে বর্তমান মসজিদ-সংলগ্ন কবরস্থানসহ নদীতীরের রাস্তা ও ফসলি জমিতে।

গ্রামের বাসিন্দা সজ্জাদ মিয়া (৫০) বলেন, আমাদের আগের বাড়ি ও রাস্তা ভেঙে বর্তমান নদীর মধ্যখানে রয়েছে। এখনকার রাস্তা পরিবর্তন করে আমরা পশ্চিম দিকে এনেছিলাম। এখন নদীতে আবার ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। আগামিতে মসজিদে যাওয়ার রাস্তা তলিয়ে যাবে।

সমাজসেবক ছাবির আহমদ (৫২) বলেন, নদীর তীরে গার্ডওয়াল, কবরস্থান ও মসজিদের গার্ডওয়াল, মসজিদ ও ঈদগাহের মুসল্লিদের অজুর জন্য স্থাপিত সিড়ি সবই আমাদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে করা হয়েছে। ইদানিং মসজিদে আসার রাস্তা, কবরস্থান ও ঈদগাহের দেয়াল ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। আগে নদী গভীর ছিলনা তাই কম বাজেটে আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে কাজ করা গেছে। এখন নদীর গভীরতা অনেক বেশি। তাই আমাদের ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে কাজ করা কঠিন হয়ে পড়ছে। আমরা সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

সাবেক ইউপি সদস্য আক্কাছ আলী তালুকদার (৬৮) বলেন, আমাদের গ্রামের বসতির জায়গা কম। ইদানিং নতুন করে নদীর ভাঙ্গন যেভাবে শুরু হয়েছে তার রোধ না করলে সামনে সমস্যা আছে। তাই সরকারি বরাদ্ধ দিয়ে সমস্যা সমাধানের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট দাবী জানাচ্ছি।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী ও ওসমানীনগর উপজেলা কর্মকর্তা মো: গোলাম বারী বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এলাকার লোকজন একটি লিখিত আবেদন দিলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল