নির্বাচনী ফলাফল নিয়ে কংগ্রেসের প্রতিক্রিয়া
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৪ জুন ২০২৪, ২০:৫২
লোকসভা নির্বাচনে ইন্ডিয়া জোটের অবস্থা নিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করেছে কংগ্রেস।
সেখানে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছেন, ‘আমাদের এবারের লড়াইটি ছিল (ভারতের) সংবিধান বাঁচানোর লড়াই।’
এই লড়াইয়ে পাশে থাকার জন্য ভারতের জনগণের পাশাপাশি জোট সঙ্গী এবং কংগ্রেসের নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন গান্ধী।
লোকসভা নির্বাচনের ভোট গণনা চলাকালেই মঙ্গলবার হঠাৎ করেই ভারতের শেয়ার বাজারের সূচকে বড় ধরনের পতন দেখা গেছে।
সেই প্রসঙ্গ টেনে গান্ধী বলেন, ‘আপনারা নিশ্চয়ই আদানির স্টক দেখেছেন। ভারতের মানুষ জানে যে, মোদির সাথে আদানির সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। সেই সম্পর্ক আসলে দুর্নীতির সম্পর্ক আছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘নির্বাচনের ফলাফলে ভারতের জনগণ বলে দিয়েছে যে, নরেন্দ্র মোদি আমরা আপনাকে চাই না। (অমিত) শাহকে চাই না।’
জোট সরকার গঠনের সম্ভাবনাকে নাকচ করছে না কংগ্রেস
লোকসভায় নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের মাধ্যমে সরকার গঠন করতে হলে একটি দলকে অন্তত ২৭২টি আসন পেতে হবে।
কিন্তু এখন পর্যন্ত পাওয়া ভোটের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, বিজেপি কিংবা কংগ্রেস- কেউই এককভাবে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক আসন পায়নি।
কাজেই ক্ষমতার আসনে বসতে হলে তাদেরকে অন্যদলের সাথে জোট গঠন করতে হবে বলেই মনে হচ্ছে।
মোদির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট এখন পর্যন্ত মোট ২৯৪টি আসনে এগিয়ে রয়েছে।
অন্যদিকে, রাহুল গান্ধীর ইন্ডিয়া জোট এগিয়ে আছে ২৩২টি আসনে।
আপাতদৃষ্টিতে সরকার গঠনের দৌড়ে মোদি এগিয়ে রয়েছে মনে হলেও মুহুর্তেই দৃশ্যপট পাল্টে যেতে পারে যদি মিত্র দলগুলো জোট বদলের সিদ্ধান্ত নেয়।
মোদির নেতৃত্বাধীন জোট এনডিএ’র দলগুলোর মধ্যে বিজেপির পরে বেশি আসনে এগিয়ে রয়েছে জনতা দল (ইউনাইটেড) এবং তেলেগু দেশম পার্টি।
এই দু’টি দল অন্তত ৩০টি পেতে যাচ্ছে।
কাজেই তারা এনডিএ থেকে বের হয়ে যদি রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোটে যোগদান করে, তাহলে কংগ্রেসের ক্ষমতায় যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে।
দল দু’টির কথা বলা হচ্ছে, কারণ তারা মোদির জোটে যাওয়ার আগে কংগ্রেসের সাথে জোট বেঁধেছিলো।
এখন পুনরায় তাদেরকে জোটে ফেরাতে কংগ্রেস কী জোরালো কোনো প্রচেষ্টা চালাবে?
‘আগামীকাল (বুধবার) আমাদের জোটের বৈঠক আছে। সেখানে আমরা জোটের শরীক দলগুলোর সাথে এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবো,’ মঙ্গলবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।
সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে যে, কংগ্রেস জোট সরকার গঠনের সম্ভাবনাকে একেবারেই নাকচ করছে না।
এনডিএ কারা?
এনডিএ-এর পূর্ণ অর্থ হলো- ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স। বাংলায় যার অর্থ দাঁড়ায় জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট।
বর্তমান শাসক দল বিজেপির নেতৃত্বে আরো কিছু দল মিলে এই জোট গঠন করেছে।
এতে বেশ কিছু বিশিষ্ট জাতীয় ও আঞ্চলিক দল রয়েছে।
প্রাথমিক ফলাফল থেকে ধারণা করা হচ্ছে, ভারতের ৫৪৩টি নির্বাচনী এলাকার মধ্যে প্রায় ৩০০টিতে এনডিএ এগিয়ে রয়েছে। সরকার গঠনের জন্য একটি জোট বা দলকে ২৭২টি আসনে জিততে হবে।
ইন্ডিয়া কারা?
ভারতের আরেক নাম ইন্ডিয়া। অন্যদিকে এবারের লোকসভা নির্বাচনে বিরোধী দলগুলোর জোটের নামও ‘ইন্ডিয়া।’ তবে জোটের এই নাম দেশ থেকে আসেনি। ইন্ডিয়ার ইংরেজি বানানের পাঁচটি অক্ষরের পূর্ণ অর্থ হচ্ছে ‘ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টাল ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স।’
ইন্ডিয়া জোট ২৮টি বিরোধী দল নিয়ে গঠিত। এরমধ্যে রয়েছে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। আরো রয়েছে সমাজবাদী পার্টি, পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস, দ্রাবিড় মুন্নেত্র কাজগম (ডিএমকে), শিবসেনা (উদ্ধব ঠাকরে), জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টি (শারদ পাওয়ার), যুবজন শ্রমিক রাইথু কংগ্রেস পার্টি (ওয়াইএসআরসিপি) ও ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)- সিপিআই(এম)।
লোকসভার প্রাথমিক ফলাফল অনুসারে, ইতোমধ্যেই বুথফেরত জরিপকে ভুল প্রমাণ করছে ইন্ডিয়া। ধারণা করা হচ্ছে, এবার বিজেপি নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের (এনডিএ) শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী রূপে আবির্ভূত হতে পারে এই জোট।
ভারতে ৪৭ দিন ধরে নির্বাচনী কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর আজ মঙ্গলবার (০৪ জুন) চলছে ভোট গণনা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, এবারের নির্বাচনে প্রায় ৯৭ কোটি মানুষ ভোট দেয়ার যোগ্য ছিল। এর মধ্যে ৩১ কোটি ২০ লাখ নারী ভোটারসহ মোট ৬৪ কোটি ৩০ লাখ ভোটার নির্বাচনে অংশ নিয়েছে, যা একটি বিশ্ব রেকর্ড।
সূত্র : বিবিসি ও অন্যান্য
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা