ভারতের দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল সোমবার বলেছেন, ‘বারবার বলা সত্ত্বেও তাকে ইনসুলিন ইঞ্জেকশন দেয়া হচ্ছে না।’
তিহার জেলে বন্দী দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর সুগার লেভেল সোমবার রাতে ৩২০ হয়ে যায়। তারপর তাকে ইনসুলিন ইঞ্জেকশন দেয়া হয়।
তিহার জেল কর্তৃপক্ষ অবশ্য কেজরিওয়ালের অভিযোগ মানতে চাননি। তাদের বক্তব্য, অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেসের (এইমস) বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সাথে ভিডিও কনফারেন্সে কেজরিওয়াল ইনসুলিনের বিষয়টি উল্লেখ করেননি। এর প্রয়োজনীয়তার কথাও জানাননি।
কেজরিওয়াল তিহার জেলের সুপারকে একটা চিঠি লেখেন। সেখানে তিনি জানান, গত ১০ দিনে তিনি বারবার ইনসুলিন দেয়ার কথা বলেছেন। ফলে জেল কর্তৃপক্ষের দাবি তিনি মানতে পারছেন না।
আপ নেতা ও দিল্লির মন্ত্রী সৌরভ ভরদ্বাজ বলেন, ‘আজ এটা স্পষ্ট হয়ে গেছে যে মুখ্যমন্ত্রী একেবারে ঠিক কথা বলেছিলেন। তার ইনসুলিন দরকার ছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মকর্তারা ইচ্ছে করে চিকিৎসা করাচ্ছিলেন না। বিজেপি একটা প্রশ্নের জবাব দেক, যদি ইনসুলিন দরকার না হয়ে থাকে, তাহলে কেন তা দেয়া হলো?’
আপ নেতা অনুপ ঠাকুর বলেন, ‘২০১২ সাল থেকে আমি কেজরিওয়ালকে দেখছি। অনেক জায়গায় এক সাথে গেছি। কেজরিওয়াল পকেটে সবসময় লজেন্স বা চকোলেট রাখেন। কারণ তার সুগার লেভেল ওঠানামা করে। নেমে গেলে তখন লজেন্স খেয়ে নেন। তার সুগার আছে এটা নিয়ে তো কোনো সন্দেহ নেই। সেখানে তিনি ইনসুলিন চাইলে তো সাথে সাথে তা দেয়া উচিত।’
আদালতে ইডি অভিযোগ করেন, কেজরিওয়াল অসুস্থ হওয়ার জন্য আম খাচ্ছেন বা এমন খাবার খাচ্ছেন যা তার খাওয়া উচিত নয়।
দিল্লির বিজেপি সভাপতি অনুপ সচদেব অভিযোগ করেন, ‘কেজরিওয়াল এই সব কথা বলে এবং স্বাস্থ্যের দোহাই দিয়ে দিল্লিবাসীর সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করছেন। কেজরিওয়াল সুগারের রোগী তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু জেলে তার শরীর ভালো আছে। তাই তিনি ইনসুলিন চাননি।’
অনুপের বক্তব্য, ‘কেজরিওয়ালের খাবার আসে তার বাড়ি থেকে। একদিন তাকে কয়েক টুকরো আম দেয়া হয়েছে। আর রামনবমীর দিন লুচি-আলুর দম দেয়া হয়েছিল। একজন ডায়বেটিসের রোগী কয়েক টুকরো আম তো খেতেই পারেন। সেই সাথে দরকার হলে তাকে ইনসুলিনও দেয়া উচিত।’
কেজরিওয়াল চিঠিতে বলেন, ‘যে চিকিৎসক আমার সাথে দেখা করতে এসেছেন তাকে আমি দেখিয়েছি। প্রতিদিন আমার সুগার লেভেল ২০০ থেকে ২৫০-এ রয়েছে। না খেয়ে যখন সুগার পরীক্ষা করা হয়েছে, তা ১৬০ থেকে ২০০ এসেছে। প্রতিদিন আমি ইনসুলিন চেয়েছি। তারপরে আপনারা কী করে বলতে পারেন, আমি ইনসুলিনের কথা বলিনি?’
তিহার জেলের ডিজি এএনআইকে বলেন, ‘দিনে নয় শ’ থেকে এক হাজার ডায়াবেটিক বন্দীর সুগারের বিষয়টি আমায় খেয়াল রাখতে হয়। যদি কেউ রাজনৈতিক কারণে এই ধরনের কথা বলেন, তাহলে আমার কিছু করার নেই। আমি তার মধ্যে ঢুকব না।’
আদালতের নির্দেশ
আদালত এখন কেজরিওয়ালের স্বাস্থ্যের বিষয়টি দেখার জন্য এইমসকে একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করতে বলেছে। তারা বিশেষ করে কেজরিওয়ালের ইনসুলিনের বিষয়টি দেখবে।
সূত্র : ডয়চে ভেলে