১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

পশ্চিমবঙ্গে শাসক দল পারলেও সব আসনে প্রার্থী দিতে পারেনি বিরোধীরা

পশ্চিমবঙ্গে শাসক দল পারলেও সব আসনে প্রার্থী দিতে পারেনি বিরোধীরা - ছবি : ডয়চে ভেলে

ভোট ঘোষণা হয়ে গেলেও পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলগুলো সব আসনে প্রার্থী দিতে পারেনি। ঘোষিত প্রার্থীরা পুরোদমে নেমে পড়েছেন লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে।

সাত দফায় পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রে ভোট নেয়া হবে। ব্রিগেডের সভা থেকে তৃণমূল কংগ্রেস সব আসনের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দিয়েছে। বিরোধী বিজেপি বাম, কংগ্রেস, আইএসএফ এখনো সব আসনে প্রার্থীর নাম জানাতে পারেনি।

বিজেপির দ্বিতীয় তালিকা
প্রথম দফায় বিজেপি ২০টি কেন্দ্রে প্রার্থীর নাম জানিয়েছিল। দ্বিতীয় পর্যায়ে তারা ১৯টি আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে।

প্রথম দফায় ঘোষিত আসানসোল কেন্দ্র থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নেন প্রার্থী পবন সিং। ফলে এখনো চারটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা বাকি রয়েছে মোদি ব্রিগেডের।

জল্পনা অনুযায়ী তমলুকে প্রার্থী হলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাপস রায় লড়বেন কলকাতা উত্তরে। অর্জুন সিং পেয়েছেন ব্যারাকপুরের টিকিট। কেন্দ্র বদল হয়েছে একাধিক প্রার্থীর।

মেদিনীপুর থেকে সাবেক বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে সরানো হয়েছে বর্ধমান দুর্গাপুর কেন্দ্রে। সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরীকে রায়গঞ্জ থেকে পাঠানো হয়েছে দক্ষিণ কলকাতায়।

বিজেপির দ্বিতীয় দফার তালিকায় একাধিক চমক রয়েছে। সন্দেশখালির প্রতিবাদী মুখ রেখা পাত্রকে বসিরহাটে প্রার্থী করেছে বিজেপি। অভিযুক্ত, ধৃত শিবপ্রসাদ হাজরার বিরুদ্ধে এফআইআর করেছিলেন এই রেখা।

রাজমাতা অমৃতা রায় কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে প্রার্থী। দমদম কেন্দ্রে লড়বেন শীলভদ্র দত্ত। দার্জিলিঙে টিকিট পেয়েছেন রাজু বিস্তা। বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল লড়বেন মেদিনীপুরে। আর এক বিধায়ক অসীম সরকার বর্ধমান পূর্বের পদ্ম প্রার্থী। গতবারের দুই প্রার্থী, সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া ও ভারতী ঘোষ এখনো টিকিট পাননি।

বিজেপি যখন পশ্চিমবঙ্গে কমজোরি একটি দল, তখন দমদম থেকে লোকসভায় গিয়েছিলেন সাবেক বিজেপি রাজ্য সভাপতি তপন শিকদার।

সেই কেন্দ্রে এবারের প্রার্থী শীলভদ্র ডি ডাব্লিউ কে বলেন, ‘বিজেপির জয়ের সম্ভাবনা ১০০ ভাগ। প্রধানমন্ত্রী যে যে কথা বলেছেন, সেগুলো সবই রেখেছেন। ৩৭০ বাতিল, সিএএ চালু, তিন তালাক বাতিল, সবই হয়েছে। সন্দেশখালির মা, বোনেরা চোখের জল ফেলেছেন, রাস্তার ধারে চাকরি প্রার্থীরা বসে রয়েছেন। মানুষ এসবের প্রতিবাদ করতে চাইছে। বাংলার মানুষ বলছে, কেজরিওয়াল গ্রেফতার হতে পারেন। হেমন্ত সোরেন গ্রেফতার হতে পারেন। বাংলার শীর্ষ নেতৃত্ব কবে গ্রেফতার হবেন?’

সিপিএমের নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট তিন দফায় প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে। কংগ্রেসের সাথে সমঝোতার ভিত্তিতে আপাতত ২১টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে তারা। প্রত্যাশা মতোই একাধিক তরুণ নেতা-নেত্রীকে ভোটের ময়দানে নামিয়েছে বামেরা।

যাদবপুরে সিপিএমের প্রার্থী এসএফআইয়ের সাবেক রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য। শ্রীরামপুরে লড়বেন দীপ্সিতা ধর। সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায় টিকিট পেয়েছেন তমলুকে।

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রের প্রার্থী। সাবেক সংসদ অলকেশ দাস লড়বেন রানাঘাট কেন্দ্রে। আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় হাওড়ায় লড়বেন বাম প্রতীকে।

হাওড়া তৃণমূলের মজবুত ঘাঁটি। সব্যসাচী ডি ডাব্লিউ কে বলেন,‘চারিদিকে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছিল যে ধর্ম বা এনআরসি বা রামমন্দিরের নামে ভোট হবে। সারা হাওড়া জুড়ে ভাষা, ধর্ম নিয়ে একটা ঘৃণার পরিবেশ তৈরি করা হয়েছিল। মানুষকে এই পরিস্থিতি থেকে বার করে আনার চাহিদা রয়েছে দেখছি।’

দুর্নীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন,‘বিভিন্ন বিরোধী দলের মুখ্যমন্ত্রীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। যে সেটিংয়ের তত্ত্ব আমরা বলেছিলাম, সেটা এবার মানুষের মধ্যে প্রভাব ফেলবে।’

কংগ্রেসের তালিকা
পশ্চিমবঙ্গের আটটি আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে জাতীয় কংগ্রেস। বহরমপুরে দাঁড়াচ্ছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী। এই কেন্দ্রে লড়ছেন তৃণমূলের তারকা প্রার্থী, সাবেক ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠান।

মালদা দক্ষিণ কেন্দ্রে কংগ্রেসের প্রার্থী ঈশা খান চৌধুরী। এই কেন্দ্রের বিদায়ী সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী ওরফে ডালু বয়সের কারণে সরে দাঁড়িয়েছেন। মালদা উত্তর কেন্দ্রে মুস্তাক আলম রয়েছেন ময়দানে।

জঙ্গিপুর থেকে লড়ছেন মহম্মদ মোর্তাজা হোসেন। পুরুলিয়ায় কংগ্রেস টিকিট দিয়েছেন নেপাল মাহাতোকে। বীরভূম কেন্দ্রে প্রার্থী মিল্টন রশিদ। রায়গঞ্জ থেকে লড়ছেন ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে দলে যোগ দেয়া আলি ইমরান রামজ।

বোঝাপড়া সত্ত্বেও একই কেন্দ্রে বাম ও কংগ্রেস প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। কোচবিহারে বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লকের নীতীশ চন্দ্র রায়কে প্রার্থী করা হয়েছে। এরপর কংগ্রেস ওই কেন্দ্রে টিকিট দিয়েছে পিয়া রায়চৌধুরীকে। এ নিয়ে বামফ্রন্টের অন্দরে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

জোট ঘিরে সংশয়
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে বাম, কংগ্রেস ও আইএসএফ আসন সমঝোতা করেছিল। আইএসএফের নওশাদ সিদ্দিকী এই সমঝোতার একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে বিধানসভায় যান। লোকসভা নির্বাচনের আগে কিন্তু এই বোঝাপড়া এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

আইএসএফ আটটি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। বামেরা টিকিট দেয়ার পরও শ্রীরামপুর কেন্দ্রে প্রার্থী দিয়েছে সিদ্দিকীর দল। মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রেও তাদের প্রার্থী রয়েছে। যাদবপুর কেন্দ্রেও তারা প্রার্থী দিতে চায়। বসিরহাট কেন্দ্রে লড়তে চলেছে আইএসএফ। এই আসনে লড়তে চায় বাম শরিক সিপিআই।

সর্বোপরি ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্র নিয়ে ছবিটা এখনো স্পষ্ট নয়। এখানে এবারও লড়বেন তৃণমূলের বিদায়ী সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অনেক আগেই এই কেন্দ্রে লড়ার ব্যাপারে ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন নওশাদ। এ নিয়ে সিপিএমের সাথে তাদের সমঝোতা এখনো অধরা।

বিরোধী পরিসরে যখন তৃতীয় পক্ষ জায়গা পাওয়ার জন্য মরিয়া তখন প্রার্থী বাছাইয়ে টালবাহানা ভোটারদের প্রভাবিত করতে পারে। যদিও সাবেক প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ও উত্তর কলকাতায় কংগ্রেসের প্রার্থী প্রদীপ ভট্টাচার্য ডি ডাব্লিউ কে বলেন,‘একটু গন্ডগোল আছে এখনো। তবে আশা করছি, দ্রুত সেটা মিটে যাবে। জনমত সমীক্ষায় যা দেখিয়েছে তা থেকে আমাদের ভালো ফল হবে।’

সূত্র : ডয়চে ভেলে


আরো সংবাদ



premium cement
বাংলাদেশে মুসলিম কৃষকের ধানে আগুনকে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার বলে প্রচার শিক্ষানুরাগী এস এম খলিলুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী আজ সিরিয়ার নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দেবে যুক্তরাষ্ট্র! ইতিহাসের প্রথম : ৪০০ বিলিয়ন ডলারের মালিক মাস্ক ২০৩৪ ফুটবল বিশ্বকাপ সৌদি আরবে সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর সচল ফেসবুক-ইনস্টাগ্রাম-হোয়াটসঅ্যাপ ভারতীয় মিডিয়াতে ইসকনের ওপর হামলার খবর ভুয়া : সিএ প্রেস উইং ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন মির্জা ফখরুল টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা ঢাকা সফর নিয়ে ভারতের এমপিদের ব্রিফ করলেন বিক্রম মিশ্রি রাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এমন দুর্নীতি তদন্তে অগ্রাধিকার পাবে

সকল