১৫ মে ২০২৪, ০১ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৬ জিলকদ ১৪৪৫
`


আরিফকে না দেখে মন খারাপ সারসের

আরিফকে না দেখে মন খারাপ সারসের - ছবি : সংগৃহীত

বছরখানেক আগের ঘটনা। একটি ভিডিওকে ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল গোটা ভারতে। আরিফ নামে এক যুবক তার জমিতে একটি অসুস্থ সারস দেখতে পেয়েছিলেন। পাখিটি একেবারে অচৈতন্য অবস্থায় পড়েছিল। রক্তাক্ত অবস্থাতেও ছিল পাখিটি। এরপর আরিফ নামে উত্তরপ্রদেশের ওই যুবক তাকে সেবা করে সুস্থ করে তোলেন। এদিকে এরপর আর অন্য কোথাও যায়নি সারসটি। আমেথির ওই যুবক যেখানেই যেত সেখানেই যেত সারসটি।

সারস পাখি যে এভাবে বন্ধু হতে পারে তা না দেখলে বিশ্বাস হবে না। তবে ভারতের বনদফতর এই ভিডিও দেখার পরেই এলাকায় হানা দেয়। এরপর তারা পাখিটিকে নিয়ে কানপুর চিড়িয়াখানায় চলে আসে। কিন্তু বন্ধুকে ছেড়ে একেবারে মন মরা হয়ে গেছে ওই সারস। এমনকি কিচ্ছু খেতে চাইছে না। চিড়িয়াখানায় আনার প্রায় ৪০ ঘণ্টা পরে সেটি শুধু মাত্র কিছু আলু সেদ্ধ আর ছোট মাছ মুখে তুলেছে। আসলে আরিফই ছিল তার বন্ধু। কিন্তু সেই বন্ধু কোথায় গেল?

চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ বুঝতে পারে পাখিটি ধীরে ধীরে গভীর অবসাদের মতো অবস্থায় চলে যাচ্ছে। এরপরই ওই খাঁচার সামনে আরিফের একটি ছবি এনে রাখার ব্যাপারে প্রস্তাব দিয়েছেন এসপি বিধায়ক অমিতাভ অগ্নিহোত্রী, তাতে যদি কিছুটা খুশি থাকে পাখিটা। চিড়িয়াখানার এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রায় ৪০ ঘণ্টা নিষ্ক্রিয় অবস্থায় পড়েছিল পাখিটি। দুই কেজি জ্যান্ত মাছ দেয়া হয়েছিল। পাখিটি খাচ্ছিল না। খাঁচার মধ্যে নিস্তেজ হয়ে পড়েছিল। তবে সোমবার সকালে প্রথমবার সেটি মাছ মুখে তোলে।

আসলে বন্ধুকে কাছে না পেয়ে ভীষণ মন খারাপ সারসের। চিড়িয়াখানার ডিরেক্টর কেকে সিং জানিয়েছেন, তিনজন পশু চিকিৎসক সারসটির উপর নজর রাখছে। এমন একটা খাঁচায় পাখিটাকে রাখা হবে যেখানে তাকে মানুষ দেখতে পায়। হয়তো ওদের দেখলে মন খারাপ ভালো হয়ে যাবে। তার জন্য স্পেশাল ডায়েটও করা হচ্ছে।

এসপি বিধায়ক পাখির খাবারও পৌঁছে দিয়েছেন।

এদিকে বনদফতরের দাবি, পাখিটাকে পাওয়ার পরে আরিফের উচিত ছিল দফতরকে খবর দেয়া। আর আরিফ বলেন, আমি তো পাখিটাকে বেঁধে রাখিনি। ওটা আমার সাথে থাকত। আমার দোষটা কোথায়? আমি সারসটাকে সুস্থ করে ভেবেছিলাম জঙ্গলে ছেড়ে দিয়ে আসব। কিন্তু ও আমার বন্ধু হয়ে গেল। আমাকে ছেড়ে কোথাও যেত না। আমি কী করব?
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস

 


আরো সংবাদ



premium cement