০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`


যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে থেমেছিল পাক-ভারত যুদ্ধ

-

গত মাসে ভারত পাকিস্তান যুদ্ধ পরিস্থিতির সময় উভয় দেশ পরস্পরের দিকে মিসাইল তাক করেছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্ততায় উভয় দেশ নিবৃত হয়। বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক খবরে বলা হয়েছে, চোখ বাঁধা ভারতীয় পাইলটের ভিডিও দেখার পরই ভারত অন্তত ছয়টি মিসাইল প্রস্তুত করে পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে। জবাবে পাকিস্তানও প্রস্তুতি নেয় উপযুক্ত ‘জবাব’ দেয়ার। কিন্তু এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়। নয়াদিল্লি, ইসলামাবাদ ও ওয়াশিংটনের একাধিক সূত্র অনুযায়ী সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের দাবি, ওই সময় দু’দেশের সম্পর্ক এতটাই উত্তপ্ত ছিল যে, মার্কিন কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ না হলে দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে যুদ্ধ লেগেই যেত।

তাছাড়া ‘শান্তির বার্তা’ হিসেবে পাকিস্তান ভারতীয় পাইলটকে ফেরত দেয়ার পর উভয় দেশ কিছুটা নমনীয় হয়। সংবাদে বলা হয়েছে, অভিনন্দনের ওই ভিডিও দেখার পরই ভারতীয় কূটনৈতিক ও সামরিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। নয়াদিল্লি সরাসরি হুমকি দেয়, পাকিস্তানের মাটিতে ছয়টি মিসাইল দিয়ে হামলা চালানো হবে। তবে কী ধরনের মিসাইল বা কোথায় সেগুলি ফেলা হবে, নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে সে সব স্পষ্ট করা হয়নি সেই সময়। তবে এই খবর পেয়েই পাকিস্তানও পাল্টা হুঙ্কার ছাড়ে, ভারত একটা মিসাইল ফেললে তারা তিনটি ফেলবে। এই উত্তেজনার আঁচ পেয়েই তড়িঘড়ি হস্তক্ষেপ করে যুক্তরাষ্ট্র। উত্তেজনা এতটাই চরমে ছিল যে দুই প্রতিবেশী দেশকে নিরস্ত করতে মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনকে পর্যন্ত ময়দানে নামতে হয়।

পাকিস্তানে হামলা চালাতে গিয়ে আটক হয় ভারতীয় পাইলট অভিনন্দন বর্তমান। প্রথমে ভারতের পক্ষ থেকে স্বীকার করা হয়নি যে পাকিস্তানের হাতে বন্দি হয়েছে তাদের পাইলট। এরপর পাকিস্তান দুটি ভিডিও প্রকাশ করে। প্রথমটিতে চোখ বাধা অবস্থা পাইলট অভিনন্দনকে নাম, পরিচয় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এই ছবি দেখার পরই ভারতীয় গোয়েন্দা এবং সামরিক মহলে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

ওয়াশিংটন, ইসলামাবাদ এবং নয়াদিল্লির সূত্র উদ্ধৃত করে রয়টার্সের দাবি, ওই ভিডিও দেখেই ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল ‘সিকিওর লাইনে’ সরাসরি আইএসআই প্রধান আসিম মুনিরকে ফোন করেন। ডোভাল পাকিস্তানকে জানিয়ে দেন, অভিনন্দনকে তারা আটক করলেও পাকিস্তানের মাটিতে সন্ত্রাস দমনে ভারত পিছপা হবে না। সেই সময়ই ছয়টি মিসাইল হামলা চালানোর প্রস্তুতির কথাও জানতে পারেন মার্কিন গোয়েন্দারা।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, পাকিস্তান সরকারের এক মন্ত্রী ও পশ্চিমা এক কূটনৈতিক আলাদাভাবে নিশ্চিত করেছেন যে, ওই সময়ই ভারত অন্তত ছয়টি মিসাইল পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ‘টার্গেট’ করে রেখেছিল। তবে কিভাবে বিষয়টি পাকিস্তান টের পেয়েছিল তা তিনি প্রকাশ করেননি।

পাকিস্তানের ওই মন্ত্রী জানান, নয়া দিল্লিকে ইসলামাবাদ বলে দিয়েছিল, ‘আপনারা একটা মিসাইল ফেললে আমরা তিনটি ছুড়বো। ভারত যাই করবে, আমরা তার তিন গুণ পাল্টা আঘাত করব।’ তবে অজিত ডোভালের অফিস রয়টার্সকে এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি। পাকিস্তান সেনাবাহিনীও এ নিয়ে মন্তব্য এড়িয়ে গিয়ছে। আসিম মুনিরও রয়টার্সের প্রশ্নের উত্তর দিতে রাজি হননি।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও ওই সময় ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের সাথে ফোনে কথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্রের অন্য কর্মকর্তারাও বিষয়টি নিয়ে দৌড়ঝাপ করেছেন। যার ফলে হয়তো বড় ধরনের যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া থেকে রক্ষা পেল উপমহাদেশ।


আরো সংবাদ



premium cement