০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`


তথ্যপ্রযুক্তি ও সংবাদমাধ্যমে আলেমদের অংশগ্রহণ

তথ্যপ্রযুক্তি ও সংবাদমাধ্যমে আলেমদের অংশগ্রহণ। - ছবি : সংগৃহীত

একবিংশ শতাব্দী গোটা মুসলিম উম্মাহর জন্য এক বিরাট চ্যালেঞ্জ নিয়ে এসেছে। এ চ্যালেঞ্জ বহুমাত্রিক। বাণিজ্য ও সংস্কৃতির বিশ্বায়ন, জ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় বিস্ময়কর সাফল্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অকল্পনীয় অগ্রগতি, মানবসম্পদের ব্যবহার, সর্বাধুনিক মারণাস্ত্রের আবিষ্কার ও ব্যবহার, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় অপ্রতিহত আধিপত্য, আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে পারঙ্গমতায় মুসলিম জনগোষ্ঠী হয়ে পড়েছে একপ্রকার কোণঠাসা ও অসহায়। চলমান এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে বৈশ্বিক পরিসরে মুসলমানদের অস্তিত্ব-অবস্থান সঙ্কটাপন্ন হয়ে পড়ার সমূহ আশঙ্কা বিদ্যমান। ইহুদি, খ্রিষ্টান ও অমুসলিম জনগোষ্ঠীর ছুড়ে দেয়া এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ওলামায়ে কেরামের সমন্বিত কর্মকৌশল গ্রহণ করতে হবে। প্রথমত, বাংলাদেশের আলেমদের সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে হবে। যেকোনো বিষয় বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বিশ্লেষণ করতে হবে। পারস্পরিক দলাদলি ও ইখতিলাফ ভুলে গিয়ে ঐক্যের পথ ধরতে হবে। বিভিন্ন বিষয়ে ইখতিলাফ ছিল, আছে ও থাকবে। ইখতিলাফ নিয়ে ঐক্যের বাতাবরণ সৃষ্টি করতে হবে। ঐক্যের বিকল্প নেই। ‘আমিই শ্রেষ্ঠ’ বা ‘আমার দলই শ্রেষ্ঠ’ এমন মনোবৃত্তি পরিহার করে পারস্পরিক সম্মান ও মানামানির সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনতে হবে। একজন গ্রহণযোগ্য মুরব্বি নির্বাচন করে জাতীয় জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তার সিদ্ধান্ত মেনে চলতে হবে। প্রয়োজনে জাতীয় মুরব্বিকে সহায়তা করতে একটি উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন উপদেষ্টা পর্ষদ থাকতে পারে। আধুনিক শিক্ষিতদের তুলনায় মাদরাসার ফারেগিনরা যাতে পশ্চাতে পড়ে না থাকেন সে জন্য সুচিন্তিত কর্মপন্থা নির্ধারণ করতে হবে। ভাষাজ্ঞানে পারদর্শিতা, আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা, শিক্ষা, প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশ নেয়ার মাধ্যমে দায়িত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠান একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার কৌশল ও হাতিয়ার হতে পারে।

মিডিয়ার সাথে আলেমদের যুক্ত হওয়ার প্রয়োজন যে কতটুকু তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। আধুনিক যুগে জনমত গঠন ও নিয়ন্ত্রণে গণমাধ্যমের ভূমিকা ব্যাপক এবং বিস্তৃত। ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াকে ব্যবহার করে আলেমসমাজ ধর্মপ্রচার, সুস্থ সংস্কৃতির লালন ও ইসলামী মূল্যবোধের বিকাশে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখতে পারেন। মাদরাসার ফারেগিনদের একটি অংশ সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ নিয়ে ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় সহ-সম্পাদক, ফিচার লেখক, প্রতিবেদক, উপস্থাপক, সম্পাদনা সহকারী ও কলাম লেখক হিসেবে সরাসরি যোগ দিতে পারেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন বড় মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ফারেগিন ছাত্রদের জন্য এক বা দুই বছর মেয়াদি সাহিত্য ও সাংবাদিকতা কোর্স চালু করে কলম সৈনিক সৃষ্টি করার পথ সুগম করতে পারেন, যারা পেশাগত জীবনে ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক হিসেবে মিডিয়ার সাথে যুক্ত হতে পারেন, এটি সময়ের অপরিহার্য দাবি।
সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন মাদরাসাকেন্দ্রিক বাংলা মাসিক পত্রিকা প্রকাশের প্রচলন শুরু হয়েছে। এটি ইতিবাচক দিক। এসব পত্রিকা ঘরে লেখকগোষ্ঠী তৈরি হচ্ছে। এ ক্ষেত্রটিকে আরো সম্প্রসারণ করা দরকার জাতির বৃহত্তর স্বার্থে।

উল্লেখ করা প্রয়োজন, বিবিসি, সিএনএন, রয়টার্স, এএফপিসহ সারা পৃথিবীর ৮০ ভাগ ইলেকট্র্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া ইহুদি-খ্রিষ্টানদের দখলে। ইহুদি-খ্রিষ্টান ধর্মপ্রচারকরা বিভিন্ন ভাষায় ধর্মীয় ম্যাগাজিন ছেপে লাখ লাখ কপি বিনামূল্যে বিতরণ করেন। এ পরিস্থিতিতে আলেমরা হাত-পা গুটিয়ে নীরব বসে থাকতে পারেন না। বিশেষজ্ঞ আলেম তৈরির করার বিকল্প নেই। মুফাসসির, মুহাদ্দিস, মুফতি, ইমাম, খতিব, লেখক, গবেষক, মুবাল্লিগের পাশাপাশি মিডিয়াকর্মী তৈরি করতে হবে।

আলেমদের বর্তমান যুগে ইংরেজি ভাষা শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত জরুরি বিষয়। ইন্টারনেট প্রযুক্তি হতে শুরু করে জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রতিটি শাখায় ইংরেজির প্রভাব অপ্রতিহত ও অপ্রতিরোধ্য। ইংরেজিকে বাদ দিয়ে অথবা অবজ্ঞা করে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা সম্পূর্ণরূপে অসম্ভব। ইংরেজি ভাষা আধুনিক সভ্যতা ও জ্ঞান বিজ্ঞানের চালিকাশক্তি ও কেন্দ্রবিন্দু । আলিয়া পদ্ধতির মাদরাসার পাঠ্যতালিকায় ইংরেজি আছে। কওমি মাদরাসার মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত ইংরেজি বই পাঠ্যতালিকাভুক্ত করা যেতে পারে। এ ছাড়া দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন করার পর দুই বা এক বছর মেয়াদি শর্ট কোর্সের মাধ্যমে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে ছাত্রদের দক্ষতা বাড়ানো যেতে পারে। একজন সচেতন আলেমে দ্বীনকে মাতৃভাষা বাংলা, ধর্মীয় ভাষা আরবি ও আন্তর্জাতিক ভাষা ইংরেজি শিখতে হবে। কেবল হালকাভাবে শিখলে চলবে না; দক্ষতা ও পারঙ্গমতার স্বাক্ষর রাখতে হবে।

বাংলাদেশের আলেম-ওলামা ও মাদরাসা নিয়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় গোয়েবলসীয় কায়দায় মিথ্যাচার শুরু হয়েছে। দাড়ি-টুপিওয়ালাদের পাইকারি হারে টার্গেট করা হচ্ছে। মাদরাসাকে বলা হচ্ছে জঙ্গিদের নিরাপদ আস্তানা। ইসলামী এনজিওদের চিহ্নিত করা হচ্ছে সন্ত্রাসী লালনে টাকার জোগানদাতা হিসেবে। এ কথা স্পষ্ট ভাষায় এবং জোর তাগিদের সাথে বলা যায় যে, জঙ্গি তৎপরতায় বাংলাদেশের মাদরাসার কোনো ছাত্র-শিক্ষক প্রাতিষ্ঠানিকভাবে জড়িত নয়। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত কোনো মাদরাসায় কোনো সময় সামরিক ট্রেনিং দেয়ার ব্যবস্থা ছিল না এবং এখনো নেই। এমনকি বাংলাদেশের বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএনসিসির অধীনে যে সামরিক প্রশিক্ষণ দেয়া হয়, তারও কোনো ব্যবস্থা মাদরাসায় নেই। শত বছর ধরে হাজার হাজার আলিয়া ও কওমি মাদরাসা এতদঞ্চলে পবিত্র কুরআন ও হাদিসের শিক্ষাদানের মাধ্যমে দেশপ্রেমিক, চরিত্রবান, যোগ্য ও আদর্শবান জনগোষ্ঠী তৈরির মহৎ কাজ আঞ্জাম দিয়ে আসছে। এ ক্ষেত্রে মাদরাসার সফলতা বলতে গেলে ঈর্ষণীয়। মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকরা মাতৃভ‚মি বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, ধর্মীয় মূল্যবোধ, জাতীয় নিরাপত্তা ও অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে অঙ্গীকারবদ্ধ। ধর্মপ্রচার, নিরক্ষরতা দূরীকরণ, সমাজসেবা ও নৈতিক আবহ সৃষ্টিতে মাদরাসার অবদান সর্বজনস্বীকৃত। মাদক, সন্ত্রাস, বোমা ও জঙ্গি প্রশিক্ষণের সাথে এসব মাদরাসার দূরতম সম্পর্কও নেই। এসব মাদরাসার পরিবেশ অত্যন্ত পবিত্র, নৈতিকতানির্ভর ও শান্ত-সুনিবিড়।

দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় অখণ্ডতার চেতনা দৃঢ়ভাবে লালনের মাধ্যমে মাদরাসা শিক্ষা মানুষ গড়ে তোলার আদর্শ শিক্ষাঙ্গন। মাদরাসাগুলোতে ছাত্রছাত্রীদের দেশপ্রেম, কর্তব্যবোধ, সামাজিক দায়িত্ব পালন, ধর্মীয়, নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধ শিক্ষা দেয়া হয়। নৈতিক শিক্ষাদানের মাধ্যমে সুনাগরিক উপহার দেয়ার ক্ষেত্রে মাদরাসাগুলোরও রয়েছে ব্যাপক ভ‚মিকা। পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে সর্বশ্রেণীর ওলামা ও মাশায়েখদের ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে এক প্ল্যাটফর্মে জমায়েত হয়ে মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে সম্ভব। ওলামা ও মাশায়েখদের নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের সাথে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে। ঐক্যের বিকল্প নেই এ সত্য যত তাড়াতাড়ি অনুধাবন করা যায় ততই মঙ্গল। অন্যথায় সাম্রাজ্য ও আধিপত্যবাদী অক্ষশক্তি এবং তাদের এ দেশীয় সংবাদপত্র ও কলামিস্টদের সম্মিলিত, স্বকল্পিত ও গোয়েবলসীয় প্রোপাগান্ডায় মাদরাসা সম্পর্কে দাতাগোষ্ঠী, সরকার ও সাধারণ মানুষের মন বিষিয়ে উঠবে। ফলে মাদরাসার প্রভাববলয় সঙ্কুচিত হয়ে আসবে, দ্বীনি শিক্ষা হয়ে পড়বে বাধাগ্রস্ত।

সম্প্রতি কানাডার বৃহত্তম সংবাদপত্র টরোন্টো স্টার ‘মার্কিন বাইবেল প্রচারকরা ইরাকের জন্য সুবৃহৎ পরিকল্পনা গ্রহণ করে’ এই শিরোনামে এক চাঞ্চল্যকর প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, সাদার্ন ব্যাপটিস্ট কনভেনশনের প্রেসিডেন্ট মি. চার্লস স্ট্যানলি যুদ্ধ বিধ্বস্ত ও স্বজনহারা ইরাকি জনগণকে তাদের অসহায়ত্বের সুযোগে রিলিফ সরবরাহের পাশাপাশি খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষিত করার এক মহাপরিকল্পনায় হাত দেন। মি. চার্লস স্ট্যানলি সাবেক প্রেসিডেন্ট সিনিয়র বুশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং পরবর্তী প্রেসিডেন্ট জুনিয়র বুশের ইরাক আক্রমণের অন্যতম দোসর। চার্লস স্ট্যানলি আটলান্টার ফার্স্ট ব্যাপটিস চার্চের প্রধান পুরোহিত। বিশ্বের বৃহত্তম টিভি চ্যানেল ক্যাবল নিউজ নেটওয়ার্ক (সিএনএস) যা বুশ প্রশাসনের বশংবদ বলে কুখ্যাত, সেই চ্যানেলটির প্রধান দফতর ও আটলান্টায় অবস্থিত। গির্জার প্রধান পুরোহিতের দায়িত্ব পালন ছাড়াও চার্লস স্টানলি ইনটাচ মিনিস্ট্রি নামে একটি ধর্মপ্রচারণা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন সেখান থেকে ১৪টি ভাষায় স্ট্যানলির ধর্মীয় ভাষণ বিশ্বব্যাপী প্রচারিত হয়ে থাকে। প্রেসিডেন্ট বুশ ইরাক আক্রমণের আগে চার্লস স্টানলি তার বিশ্বব্যাপী প্রচারণায় বক্তব্যটি প্রচার করতে থাকে ‘ঈশ্বর মার্কিন সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন ভালোকে সম্প্রসারণ ও মন্দকে প্রতিহত করতে। অতএব এই সরকার বাইবেল প্রদত্ত নৈতিক ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে মার্কিন জাতিকে রক্ষা এবং বিশ্বে যারা দাসত্বে আবদ্ধ রয়েছে তাদের মুক্ত করতে যুদ্ধে যাচ্ছে।’ তার এ ভাষণ আরবিতে অনুবাদ করে উপগ্রহ টিভি ও রেডিওর মাধ্যমে সারা আরব জাহান বিশেষত মধ্যপ্রাচ্যে বারবার প্রচার করা হয়। স্ট্যানলির প্রতিষ্ঠান ছাড়া মার্কিন ডানপন্থী খ্রিষ্টানদের আরো বহু মিশনারি সংগঠন ইরাকে খ্রিষ্টধর্ম প্রচার কর্মকাণ্ড বিস্তার করতে প্রয়াসী হয়েছে (মাঈনুল আলম, দৈনিক পূর্বকোণ, ২৭ মে ২০০৩, পৃষ্ঠা-৪)। এমনিতে ইরাকজুড়ে আগে থেকে খ্রিষ্টান জনগোষ্ঠী আছে প্রায় ১০ লাখ। মার্কিনিদের ছত্রছায়ায় এনজিও ও মিশনারিদের অব্যাহত প্রয়াসের ফলে খ্রিষ্টানের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে ক্রমশ। তারাই পাচ্ছে যুদ্ধোত্তর ইরাকে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা ও অর্থানুকূল্য। ফলে একসময় লেবাননের মতো ইরাকেও দেখা দিয়েছে দীর্ঘস্থায়ী নৈরাজ্য ও অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি।

নিজেদের দুর্বলতা ও ত্রুটির প্রতি লক্ষ রেখে মুসলিম উম্মাহর মেধাবী সন্তানদের বিশেষত আলেমদের এগিয়ে আসতে হবে সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা জ্ঞানের ভাণ্ডারকে আত্মস্থ করার মহান ব্রত নিয়ে। আধুনিক সমাজের আবিষ্কার ও অভিজ্ঞতাকে বিজ্ঞান গবেষণা, তথ্যপ্রযুক্তি, সাংবাদিকতা, যোগাযোগ ও শিক্ষা ক্ষেত্রে কাজে লাগাতে হবে। একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সক্ষমতা অর্জনে তাদের সেই আত্মবিশ্বাস ও হারানো আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে; যে বিশ্বাস ও আস্থার ফলে মধ্যযুগে মুসলমানরা তৎকালীন যুগের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সফল হয়েছিলেন। কর্মকৌশল ও পরিকল্পনার মাধ্যমে ইলেকট্র্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াকে তাদের নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে এবং তৈরি করতে হবে একদল দক্ষ মিডিয়াকর্মী। ইসলামকে বিজয়ী শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলে আলেম সাংবাদিক তৈরি করা ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই। বাংলাদেশের আলেম সমাজকে আগামী দিনের সঙ্ঘাতময় পরিস্থিতির মোকাবেলায় এখনই প্রস্তুতি নিতে হবে। বিপদ ও সঙ্ঘাত মানুষের মনে নবচেতনার সঞ্চার করে, বেঁচে থাকার প্রেরণা জোগায়। মুসলিম জাগরণের কবি আল্লামা ইকবাল যথার্থ বলেছেন-
‘খোদা তুজে কিসি তুফান ছে আশানা করদে
কে তেরে বাহার কি মৌজোঁ মে ইযতিরাব নেহি।’

অর্থাৎ আল্লাহ তোমাকে কোনো ঘূর্ণিঝড়ের সাথে পরিচয় করে দিন; কারণ তোমার সাগরের যে ঢেউ তাতে তরঙ্গ বিক্ষুব্ধতা নেই।

লেখক : অধ্যাপক ও গবেষক
drkhalid09@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement