সেই এমিলিয়ানোর নৈপুণ্যে সেমিতে আর্জেন্টিনা

কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনালে ইকুয়েডরের বিপক্ষে ম্যাচে প্রথমার্ধে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে নেন সেন্টার-ব্যাক লিসান্দ্রো মার্টিনেজ। মেসির কর্নার থেকে হেড করে বলটি বাঁ প্রান্তের পোস্টে পাঠান ম্যাক অ্যালিস্টার। সেখানে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকায় হেডে গোলটি করেন মার্তিনেজ। নির্ধারিত সময় শেষে যোগ করা সময়ে সমতায় ফেরে ইকুয়েডর। জন ইয়েবোয়ার নেয়া ফ্রি-কিকে বক্সের ভেতর থাকা ফরোয়ার্ড কেভিন রদ্রিগেজের হেড দূরের পোস্ট দিয়ে জড়ায় জালে। ১-১ গোলের সমতায় শেষ হয় নির্ধারিত সময়।

ল্যাটিন আমেরিকার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে নকআউট পর্বের কোনো ম্যাচেই অতিরিক্ত সময় নেই। নির্ধারিত সময়ে ১-১ গোলে শেষ হওয়ায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। আর্জেন্টিনার হয়ে টাইব্রেকারে প্রথম শটই মিস করেন মেসি। এরপর ইকুয়েডরের অ্যাঞ্জেল মেনার নেয়া প্রথম শটটি ঠেকিয়ে দেন আর্জেন্টিনার গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। অ্যালান মিন্দার নেয়া দ্বিতীয় শটটিও ঠেকিয়ে টাইব্রেকারে আবারো ‘অতিমানব’ হয়ে ওঠেন বাজপাখি খ্যাত এই গোলরক্ষক। আর মেসির পর আর কোনো আর্জেন্টাইন মিস করেননি টাইব্রেকার। একে একে গোল করেছেন হুলিয়ান আলভারেজ, ম্যাক অ্যালিস্টার, গঞ্জালো মন্তিয়েল ও নিকোলাস ওতামেন্দি। শেষ পর্যন্ত ৪-২ গোলের জয়ে সেমিফাইনালে উঠে যায় আর্জেন্টিনা।

হিউস্টনের এনআরজি স্টেডিয়ামে ম্যাচের ৩৫ মিনিটে করা গোলে এগিয়ে ছিল বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটেই গোল শোধ করে ইকুয়েডর। তবে যোগ করা সময়ের আগেই ম্যাচে সমতায় ফেরার সুযোগ পেয়েছিল তারা। ৬১ মিনিটে বক্সে আর্জেন্টিনার মিডফিল্ডার রদ্রিগো দি পলের হাতে বল লাগলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। স্পট কিক থেকে ইকুয়েডর অধিনায়ক এনার ভ্যালেন্সিয়া বল মারেন পোস্টে। ফিরতি বলে লেফট ব্যাক পিয়েরো হিনকাপির নেয়া শট লাগে সাইড নেটে। সমতায় ফেরার সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া হয় ইকুয়েডরের। যোগ করা সময়ে সমতায় ফেরার পর জেতার সুযোগও পেয়েছিল তারা। সেটি যোগ করা সময়ের শেষ মিনিট অর্থাৎ সপ্তম মিনিটে মিন্দার ক্রস থেকে আর্জেন্টিনার বক্সে ফ্রি হেডের সুযোগ পেয়েছিলেন জর্দি কাইসেদো। এ সুযোগটা তিনি কাজে লাগাতে পারেননি। একদম অরক্ষিত অবস্থায় থেকেও হেডে বল পোস্টের বাইরে মারেন এই স্ট্রাইকার।
ইকুয়েডরের বিপক্ষে ম্যাচে অবশ্য চোটের কারণে খেলা নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিলেন লিওনেল মেসি। অবশেষে ম্যাচের শুরু থেকেই খেলেছেন বিশ্বকাপজয়ী এই তারকা। তবে গোটা ম্যাচে সেভাবে আলো ছড়াতে পারেননি ইন্টার মিয়ামির এই তারকা। টাইব্রেকারেও তার নেয়া পানেনকা শটটি বেশি ওপরে মেরেছেন। তবে মেসির মিসের পর আর্জেন্টিনার হয়ে লক্ষ্যভেদ করতে ভুল করেননি বাকিরা।

টাইব্রেকারে ম্যাচ জিতে সেমিফাইনালে জায়গা করে নিলেও প্রথমার্ধের ৩০ মিনিট তেমন ভালো খেলতে পারেনি আর্জেন্টিনা। ম্যাচের ২৭ মিনিটে গোলের ভালো সুযোগ তৈরি করেছিল ইকুয়েডর। কিন্তু জোরালো শট নিতে গিয়ে বল পোস্টের বাইরে মারেন কেন্দ্রি পায়েজ। এরপর গোল পাওয়ার পর দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় আর্জেন্টিনা। সে ধারাবাহিকতায় ৪১ মিনিটে আবার আসে গোলের দারুণ সুযোগ। কিন্তু দি পলের পাস থেকে বল পেয়ে পোস্টের বাইরে মারেন মিডফিল্ডার এনজো ফার্নান্দেজ। ম্যাচে দ্বিতীয়ার্ধে গোলের তেমন সুযোগ তৈরি করতে পারেনি আর্জেন্টিনা।
কোয়ার্টার ফাইনালের অন্য ম্যাচে আজ ভেনেজুয়েলা ও কানাডার মধ্যে জয়ী দলের বিপক্ষে আগামী ১০ জুলাই সকাল ৬টায় ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে মাঠে নামবে লিওনেল স্কালোনির দল।