১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

১৬ বছরে বদলে যাওয়া আফগান ক্রিকেট

বাংলাদেশকে হারিয়ে প্রথমবার বিশ্বকাপের সেমিতে যাওয়ার পর আফগানিস্তানের খোস্ত শহরে দেশবাসীদের উল্লাস : ক্রিকইনফো -

ষোলো বছর আগেও ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট লিগে পঞ্চম বিভাগে খেলত আফগানিস্তান। তখন জাপান, সিঙ্গাপুরের মতো দলের বিপক্ষে খেলতে হতো যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির। এ দলটিই ২০১৮ ও ২০২২ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে খেলেছিল সেমিফাইনাল। গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে একটা পর্যায়ে সম্ভাবনা জাগিয়েছিল শেষ চারের। সেই চমকপ্রদ পথচলায় এখন টি-২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে আফগানরা।
যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানদের ক্রিকেটের শুরুটা পাকিস্তানের মাটিতে। যুদ্ধের কারণে পাকিস্তানের স্মরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেয়া আফগান তরুণরাই তাদের ক্রিকেটের গোড়াপত্তনকারী। এরপর দেশে ফিরে গিয়ে তারাই এখন আফগান ক্রিকেটের মূল কারিগর। যুদ্ধের প্রভাব এখনো রয়েছে তাদের ক্রিকেটে। ঘরের মাঠে কোনো ম্যাচ খেলতে পারছে না নিরাপত্তার হুমকিতে। অথচ এই দলই এখন টি-২০ ক্রিকেটে সেরা চারের একটি।
চলমান টি-২০ বিশ্বকাপে ‘সি’ গ্রুপে উগান্ডাকে ১২৫ রানে হারিয়ে পথচলা শুরু আফগানিস্তানের। পরের ম্যাচে শক্তিশালী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৮৪ রানের জয়। পাপুয়া নিউগিনিকে ৭ উইকেট হারিয়ে সুপার এইটে জায়গা করে নেয় যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি। গ্রুপের শেষ ম্যাচে অবশ্য বিশ্বকাপের সহ-আয়োজক ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ১০৪ রানের পরাজয়।
সুপার এইটের গ্রুপ-১-এর শেষ ম্যাচে সেন্ট ভিনসেন্টে গতকাল ডিএল মেথডে বাংলাদেশকে ৮ রানে হারিয়ে শেষ চারে পৌঁছে আফগানিস্তান। অথচ শেষ চারে ওঠার হাতছানি ছিল বাংলাদেশেরও। সুযোগও তৈরি হয়েছিল। কিন্তু কৌশল, ব্যাটিং অর্ডার ও ব্যাটারদের ব্যর্থতায় সেই সুযোগ হারিয়েছে টাইগাররা। এরপর লড়াইটা চলে যায় মূলত আফগানিস্তান আর অস্ট্রেলিয়ার। বাংলাদেশ জিতলে সেমিতে উঠবে অস্ট্রেলিয়া। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার আশা গুঁড়িয়ে স্বপ্নের সেমিফাইনালে আফগানরা।
আগের ম্যাচে একই ভেনুতে ১৪৮ রানের পুঁজি নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে ১২৭ রানের বেশি করতে দেয়নি রশিদের দল। সামগ্রিকভাবে এখন পর্যন্ত ৭ ম্যাচে ৫ জয় পেয়েছে আফগানিস্তান। ২০১০ সাল থেকে বিশ্বকাপে অংশ নেয়া দলটির এটিই এক আসরে সবচেয়ে বেশি জয়। ২০১৬ সালে ৭ ম্যাচে ৪টি জিতেছিল তারা। তবে সেবার সুপার টেন থেকে পরের ধাপে যেতে পারেনি। গ্রুপের পাঁচ দলের মধ্যে সবার নিচে থেকে বিশ্বকাপ শেষ করে তারা। প্রায় আট বছর পর নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার মতো দলগুলোকে বিদায় করে সেমিফাইনালে ওঠার পর সংবাদ সম্মেলনে রশিদ বললেন, উপযুক্ত দল হিসেবেই শেষ চারের মঞ্চে তারা জায়গা করে নিয়েছেন।
‘আমি আসলে জানি না, কিভাবে অনুভূতি প্রকাশ করব। সেমিফাইনালে ওঠা আমাদের জন্য অনেক বড় অর্জন। এখন পর্যন্ত যেভাবে পুরো টুর্নামেন্টে আমরা খেলেছি, আমার মতে, সেমিফাইনালে খেলাটা আমাদের প্রাপ্যই। সেমিফাইনালে খেলাটা দেশের তরুণদের জন্য অনেক বড় অনুপ্রেরণার উৎস হবে। যেভাবে সবাই দায়িত্ব নিয়েছে ও দলের জন্য সেরাটা দিয়ে পারফর্ম করেছে। জাতি হিসেবে আমাদের জন্য বিশাল অর্জন। এখন সেমির দিকে তাকিয়ে আছি আমরা।’


আরো সংবাদ



premium cement