উইন্ডিজকে দর্শক বানিয়ে সেমিতে প্রোটিয়ারা

স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ঘরের মাঠে দর্শক বানিয়ে সুপার এইটে গ্রুপ-২ থেকে শেষ দল হিসেবে সেমিফাইনালে উঠেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। গতকাল সকালে প্রোটিয়ারা বৃষ্টি আইনে তিন উইকেটে হারিয়েছে উইন্ডিজকে। এই জয়ে এই গ্রুপে তিন ম্যাচে তিন জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে সেমিতে উঠে প্রোটিয়ারা। তিন ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় দল হিসেবে আগেই সেমিফাইনালে উঠেছে ইংল্যান্ড। তিন ম্যাচে ২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয় স্থানে থাকায় বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে হলো ক্যারিবীয়দের। ২০১৬ সালের পর কোনো আসরেই সেমিফাইনালে খেলতে পারেনি দলটি। চলতি বিশ^কাপে ৬২টি ছক্কা মেরেছে ক্যারিবীয়রা। বিশ্বকাপের এক আসরে কোন দলের সবচেয়ে বেশি ছক্কা মারার রেকর্ড এটি। হলে কি হবে ছক্কার রেকর্ড তো আর সেমিতে নিতে পারেনি তাদের। আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে শিরোপা জেতানো আন্দ্রে রাসেল পারলেন না নিজেদের মাঠে দলকে সেরা চারে উঠাতে।
অ্যান্টিগায় টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে নেমে ৫ রানে দুই উইকেট হারিয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শাই হোপ শূন্য ও নিকোলাস পুরান ১ রানে আউট হন। তৃতীয় উইকেটে ৬৫ বলে ৮১ রানের জুটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে লড়াইয়ে ফেরান এবারের আসরে প্রথম খেলতে নামা কাইল মায়ার্স ও রোস্টন চেজ। এই জুটি গড়ার পথে তিনটি ক্যাচ ফেলেন দক্ষিণ আফ্রিকান ফিল্ডাররা। ১২তম ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার স্পিনার তাবরাইজ শামসির বলে আউট হন তিনটি চার ও দু’টি ছক্কায় ৩৫ রান করা মায়ার্স। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারালে বড় সংগ্রহ পায়নি ক্যারিবীয়রা। ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৩৫ রানের মামুলি সংগ্রহ পায় স্বাগতিকরা। ৪২ বলে তিনটি চার ও দু’টি ছক্কায় দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫২ রান করেন চেজ। শেষদিকে আন্দ্রে রাসেল দুই ছক্কায় ৯ বলে ১৫ ও আলজারি জোসেফ সাত বলে একটি ছক্কায় অপরাজিত ১১ রান করেন। তাবরাইজ শামসি ২৭ রানে তিন উইকেট নেন।
১৩৬ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে দ্বিতীয় ওভারে জোড়া উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। রেজা হেনড্রিক্সকে শূন্য ও কুইন্টন ডি কককে ১২ রানে শিকার করেন পেসার আন্দ্রে রাসেল। দুই ওভারে দুই উইকেটে ১৫ রান পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপর বৃষ্টিতে প্রায় সোয়া এক ঘণ্টা বন্ধ হয় খেলা। এতে ১৭ ওভারে ১২৩ রানের নতুন টার্গেট পায় প্রোটিয়ারা। খেলা শুরুর পর ষষ্ঠ ও অষ্টম ওভারে দুই উইকেট (এইডেন মার্করাম ১৮ ও হেনরিচ ক্লাসেন ২২) শিকার করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে চাপে ফেলে দেন আলজারি জোসেফ। ৭৭ রানে চার উইকেট পতনের পর ক্রিজে টিকে থাকতে সাবধানী থাকেন ডেভিড মিলার। ১৪ বলে মাত্র চার রান করে চেজের বলে বোল্ড হন মিলার।
এরপর পাঁচ উইকেট হাতে নিয়ে ৩২ বলে ৩০ রান প্রয়োজন পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকার। ট্রিস্টান স্টাবস ২৭ বলে ২৯ রান করে চেজের দ্বিতীয় শিকার হলে সাময়িক ম্যাচে ফিরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ দুই ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার ১৩ রানের প্রয়োজনে, ১৬তম ওভারের দ্বিতীয় বলে কেশব মহারাজকে শিকার করেন চেজ। ওই অবস্থায় ম্যাচে ছিল টান-টান উত্তেজনা। ১৬তম ওভার থেকে ৮ রান এলে, শেষ ওভারে ৫ রান দরকার পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকার। কিন্তু পেসার ওবেড ম্যাককয়ের করা ১৭তম ওভারের প্রথম বলে ছক্কা মেরে ২০১৪ সালের পর দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রথমবার সেমিফাইনালে তুলেন মার্কো জানসেন। সাত উইকেটে ১২৪ রান করে প্রোটিয়ারা। একটি করে চার-ছক্কায় ১৪ বলে ২১* রান করেন জানসেন। চেজ তিনটি, রাসেল-জোসেফ দু’টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হন শামসি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ওয়েস্ট ইন্ডিজ : ১৩৫/৮ (চেজ ৫২, মায়ার্স ৩৫, শামসি ৩/২৭)।
দক্ষিণ আফ্রিকা (বৃষ্টি আইনে টার্গেট-১২৩) : ১৬.১ ওভারে ১২৪/৭ (স্টাবস ২৯, ক্লাসেন ২২, চেজ ৩/১২)।
ফল : দক্ষিণ আফ্রিকা বৃষ্টি আইনে তিন উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : তাবরাইজ শামসি (দক্ষিণ আফ্রিকা)।