বিশ্বকাপ যাত্রায় অশনি সঙ্কেত
রানখরায় শান্ত-লিটন- জসিম উদ্দিন রানা
- ০৮ মে ২০২৪, ০০:০৫
প্রথম দুই ম্যাচে পরে ব্যাট করেছিল বাংলাদেশ। গতকাল চ্যালেঞ্জটা ভিন্ন। টস জিতে আগে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছে জিম্বাবুয়ে। সে চ্যালেঞ্জে কতটা সফল হতে পারবে নাজমুল হোসেন শান্তর দল, সেটা ছিল আলোচনায়। শেষ পর্যন্ত অঘটন না ঘটলেও জয়ের জন্য পুরোপুরি চিন্তমুক্ত ছিল না বাংলাদেশ। প্রথম ৬ ওভারে কিন্তু বাংলাদেশ নিজেদের সেভাবে মেলে ধরতে পারেনি। লিটন দাস ও নাজমুল হোসেন শান্তর উইকেট দু’টি হারিয়ে ৪২ রান তুলেছে স্বাগতিকরা।
দু’জনই রয়েছেন দারুণ অফ ফর্মে। লিটন দাস ও অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। বিশ্বকাপের আগে এই দুই টপ অর্ডার ব্যাটারের অফ ফর্ম খুব দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্টসহ ক্রিকেটপ্রেমী সবাইকে। তবে ফর্মহীনতা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে রয়েছেন লিটন দাস। সাথে যোগ হয়েছে অধিনায়ক হিসেবে শান্তর নাম। আসন্ন টি-২০ বিশ্বকাপে লিটনকে আদৌ দলে রাখা হবে কিনা তা নিয়ে যখন জোর আলোচনা চলছে, তখন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তৃতীয় টি-২০তে হাস্যকরভাবে নিজের উইকেট ছুঁড়ে দিয়েছেন লিটন। মুজারাবানিকে টানা দুইবার স্কুপ করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে তৃতীয়বারও একই কাজ করার চেষ্টা করে বোল্ড হয়েছেন। ফেরার আগে ১৫ বলে করেছেন ১২ রান।
অধিনায়ক শান্তও ক্রিজে থিতু হতে পারেননি। সিকান্দার রাজার বল খেলতে গিয়ে লাইন মিস করে বোল্ড হয়েছেন। শুধু গতকালের ম্যাচেই নয় টি-২০ তে কেমন যেন এলোমেলো হয়ে গেছেন শান্ত। তার স্ট্রাইকরেটও নিয়ে আলোচনা হচ্ছে বিস্তর। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচে করলেন যথাক্রমে ২১, ১৬ ও ৬ রান। অধিনায়ক হিসেবে যেখানে ভালো স্কোর করে দলকে নেতৃত্ব দিবেন সেখানে তার নি¤œমুখী ইনিংসগুলো মিডল অর্ডার ও লোয়ার অর্ডারে চাপ সৃষ্টি করছে। থিতু হতে পারছেন না কিংবা থিুত হয়েও আউট হয়ে যাচ্ছেন। অথচ ওয়ানডেতে তার ব্যাটিং আচরণ ঊর্ধ্বমুখী। লিস্টে তে অর্থাৎ ডিপিএলে আবাহনীর হয়ে গাজী গ্রুপ ও প্রাইম ব্যাংকের বিপক্ষে করেছেন সেঞ্চুরি। অথচ বিদেশী দলের বিপক্ষে ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই টেস্টে তার রান যথাক্রমে ১ ও ২০ এবং ৫ ও ৬। টি-২০ যেন শান্তর রানখরা।
টি-২০ ক্রিকেট মানেই চার-ছক্কার রোমাঞ্চ। এখানে দুই শ’ রানও নিরাপদ নয়। যেমনটা দেখা যাচ্ছে আইপিএলে। চলতি বছর টুর্নামেন্টটিতে ২৫০ রানও নিরাপদ মনে হচ্ছে না! এই অবস্থায় এই ফরম্যাটে সেভাবে খাপ খাওয়াতে পারছে না বাংলাদেশের ব্যাটাররা। জিম্বাবুয়ের মতো দলের বিপক্ষে ব্যাটারদের সংগ্রাম করে ম্যাচ জিততে হচ্ছে। শান্তদের কাছে ১২০-১৩০ রানও যেন মনে হচ্ছে পাহাড়সম লক্ষ্য।
২০২৪ টি-২০ বিশ্বকাপের ২০ দলের সম্ভাব্য অধিনায়কদের মধ্যেও সবচেয়ে কম স্ট্রাইকরেট নিয়ে তালিকায় ১৯ নম্বরে আছেন শান্ত। তার পরে আছেন শুধু উগান্ডার অধিনায়ক ব্রায়ান মাসাবা। শান্ত অবশ্য এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। সহকারী কোচ নিক পোথাস বলেছেন, ‘হ্যাঁ, আমি মনে করি শান্তর ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তবে তার স্ট্রাইকরেট নিয়ে আলাপটা অপ্রাসঙ্গিক। কারণ সে যদি বড় ইনিংস খেলতে পারে, তাহলে স্ট্রাইকরেটও বেড়ে যায়।’
শুধু শান্তকেই কেন দোষ দেয়া। টপ অর্ডার ব্যাটারদের মধ্যে কারো অবস্থা স্বস্তিকর নয়। তানজিদ হাসান তামিম বেশ কয়েকবার জীবন পেয়ে রান করেছেন। লিটন দাস দুই ম্যাচেই ব্যর্থ হয়েছেন। সবমিলিয়ে এই তিন ব্যাটারের নেতিবাচক ব্যাটিংয়ে শুরুতেই অস্বস্তিতে পড়ে যাচ্ছে বাংলদেশ দল। স্বয়ং বোর্ড সভাপতি এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী পাপনও ব্যাটিং নিয়ে দুশ্চিন্তার কথা জানিয়েছেন। পাপন বাংলাদেশের ব্যাটিং দেখে বলেছেন, ‘জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আমরা দুটো ম্যাচ সহজেই জিতেছি। তবে এটা সত্যি যে ব্যাটিংটা ভালো লাগেনি। ব্যাটিং দেখে খুবই ভয় লাগছে।’
বাংলাদেশ একের পর এক বিশ্বকাপের স্বপ্ন দেখিয়েই পার পেয়ে যান। এবারো এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশের পারফরম্যান্সের যা অবস্থা তাতে করে আরো একটি ভরাডুবির শঙ্কা করাই যায়। হয়তো জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের স্তুতি নিয়ে অধিনায়ক-কোচদের মুখে অনেক কথাই শোনা যাবে। দুই বছর আগে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডকে সিরিজে হারিয়ে বিশ্বকাপে যাওয়া বাংলাদেশের ভরাডুবি হয়েছিল। এবারো কি তেমন কিছু হবে? নিজেদের আত্মবিশ্বাসে ভর করা টাইগার শিবির কি পারবে ভক্তদের আশা পূরণ করতে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা